পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দমোদর মোদিকে ‘মোদিজি’ হিসেবে সম্মোধন করলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পিতার মন্ত্রীর হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে খোটা দিলেন। বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের প্রতিবাদ করে জিএম কাদের বলেছেন, মির্জা ফখরুলের স্মরণ থাকা উচিত তার পিতা মরহুম মির্জা রুহুল আমিন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। মির্জা ফখরুল ২৪ মার্চ উপলক্ষে যে বক্তব্য রেখেছেন, আমি ওই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি।
করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই মির্জা ফখরুল ও জিএম কাদেরের মুখোমুখি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কের ঝড় তুলেছে। ২৪ মার্চ উপলক্ষে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। এ দিনে সামরিক ফরমান জারি করে শহীদ জিয়ার পুনরুজ্জীবিত বহুদলীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহে স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারকে জোরালোভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ স্বৈরাচার এরশাদ অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে ইতিহাসের নির্লজ্জ স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে। এরশাদ কেবলমাত্র ক্ষমতা দখল করে ক্ষান্ত থাকেনি, জনগণের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়ে দীর্ঘ ৯ বছর দেশবাসীকে এক চরম বিভিষীকাময় দূর্বিষহ অবস্থার মধ্যে নিক্ষেপ করেছিল। ৯ বছর ছাত্র-গণআন্দোলন নিষ্ঠুরভাবে দমন করতে গিয়ে স্বৈরশাসকের পেটোয়া বাহিনী গুলি চালিয়ে হত্যা করে অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে। ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জাতির জীবনে এক কলঙ্কময় অধ্যায় রচিত হয়েছিল। সেই স্বৈরশাসকের সাথে অভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বর্তমান অগণতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠীর আঁতাত পুনরায় বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের পথচলাকে আটকিয়ে দিয়ে দেশের মানুষকে খাঁচায় বন্দী করে। দেশে এখন মানুষের বাক, ব্যক্তি, মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ সকল নাগরিক স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে অপহৃত করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুলের ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ করে গতকাল বক্তব্য দেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি’র মহাসচিব ২৪ মার্চ উপলক্ষে বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করছি। মির্জা আলমগীরের মনে রাখা উচিত ছিল যে, ওই সময়কার অবস্থা এবং প্রেক্ষাপটের কথা। কোনো দেশে সামরিক আইন প্রত্যাশিত নয়Ñ কিন্তু সামরিক আইন নিয়ে আসতে যারা বাধ্য করে প্রকৃতপক্ষে তারাই অপরাধী। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বিএনপি দলীয় চেয়ারম্যান এবং দেশের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি সাত্তার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নিজের দুর্নীতিবাজ মন্ত্রিসভা বাতিল ঘোষণা করে সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। তখন সেনাপ্রধান হিসেবে এরশাদ দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। ওই সময় যিনিই সেনাপ্রধান থাকতেন তাঁকেই প্রেসিডেন্টের দেয়া দায়িত্বভার গ্রহণ করতে হতো। তার জন্য যদি কারো অপরাধ হয়ে থাকে সেই অপরাধী হবেন বিচারপতি সাত্তার। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চের ওই পরিবর্তনকে দেশের আপামর জনগণ এবং অধিকাংশ রাজনৈতিক দল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্বাগত জানিয়েছিল।
মির্জা ফখরুলকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করে জিএম কাদের আরো বলেন, এরশাদের আমলে নির্যাতন-নিপীড়নের কথা বলতে বিএনপির লজ্জা হওয়া উচিত। দেশের মানুষ এখনো ভুলে যায়নি বিএনপি’র শাসনামলের দুর্নীতি-দুঃশাসন-অরাজকতা-খুন ও হত্যার মহোৎসবের কথা। জনগণ এখনো ভুলে যায়নি- বিএনপি’র শাসনামলে তৎকালীন বিরোধী নেতা শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২২ জন মানুষ হত্যা, পল্টনের জনসভায় বোমা হামলা, যশোরের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা, গাইবান্ধা ও কানসাটের গণহত্যা, রাজনৈতিক নেতা ও ছাত্র হত্যার কথা। বিএনপিকে এখন তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে। দুর্নীতির দায়ে বিএনপির নেত্রীকে এখন সাজা ভোগ করতে হচ্ছে। এখন ২৪ মার্চের কথা বলে নিজেদের পাপ ঢাকার চেষ্টা করে কোনো লাভ হবে না। এদেশের মানুষ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেই যাবে। আর মির্জা ফখরুলের স্মরণ থাকা উচিত যে, তার পিতা মরহুম মির্জা রুহুল আমিন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর মন্ত্রিসভার সদস্য এবং তার দলের এমপি ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বাহাস শুনে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, জিএম কাদের দিল্লিকে খুশি করতে ‘মোদিজি’ বলেন। আর মির্জা ফখরুলের বাবা এরশাদের মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ায় তাকে নিয়ে কটূক্তি করেন। কাদের সাহেব কি আয়নায় নিজের চেহারা দেখেছে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।