Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের ৫ বন্দি পিটুনিতে আহত

প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

যশোর ব্যুরো : যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ৫ কিশোর বন্দি বেধড়ক পিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছে। রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটলেও তিন দিন পর বুধবার দুপুরে তাদেরকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। মারপিটের শিকার এই ৫ কিশোরকে তিন দিন ধরে বিনা চিকিৎসায় কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। পরে অভিভাবকদের দাবির মুখে বুধবার তাদের যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অভিযোগ তাদের পিটিয়েছে ‘সিনিয়র’ বন্দিরা।
মারপিটের ঘটনায় আহত কিশোর বন্দিরা হলোÑযশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া এলাকার বাবলু হোসেনের ছেলে লাবলু (১৬), চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকার জিয়ারুল ইসলামের ছেলে নয়ন (১৫), শহরের রেলগেট এলাকার খোকন গাজীর ছেলে অন্তর (১৫), নুরুল ইসলামের ছেলে হৃদয় (১৬) ও আব্দার ম-লের ছেলে হাবিল (১৫)। তারা হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি। এদের মধ্যে হৃদয় ও হাবিলকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিভাবকরা জানান, রোববার রাতে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের বন্দিদের মধ্যে কয়েকজন বড় ভাইয়ের (সিনিয়র কিশোর বন্দি, যাদের বয়স প্রায় ১৮ বছর) নেতৃত্বে পাঁচজন কিশোর বন্দিকে পিটিয়ে জখম করা হয়।
আহতরা জানায়, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের আহাদ, রাকিব, শাওনসহ কয়েকজন বড়ভাই (সিনিয়র বন্দি) রয়েছে। তারা নানা অজুহাতে নতুন আসা এবং জুনিয়রদের নির্যাতন করে। তাদের সালাম দেওয়া হয়নি, এমন অভিযোগ তুলে ১২/১৩ জন মিলে তাদের পাঁচজনকে ব্যাপক মারপিট করেছে। একই সঙ্গে হুমকি দিয়ে ঘটনা জানালে তাদের ওপর আরও নির্যাতন করা হবে।
এই নির্যাতনের খবর পেয়ে অভিভাবকরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও জানাজানি হওয়ার ভয়ে আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। বুধবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলে আহতদের হাসপাতালে আনা হয়।
আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের সাইকো সোশ্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমান জানান, ১০ জুলাই রাতে বন্দি কিশোরা মারামারি করেছে। এতে পাঁচজন আহত হয়েছে। পুলিশ স্কট না পাওয়ায় হাসপাতালে আনতে দেরি হয়েছে। দুইজনকে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত কিশোর বন্দি হাবিলে মা শিরিনা বেগম অভিযোগ করেন, তার ছেলেসহ পাঁচজনকে বেদম মারপিট করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্ণা দিয়েছেন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য। কিন্তু কেন্দ্রের কর্মকর্তারা গুরুত্ব দেননি। তিনদিন ধরে কেন্দ্রে গিয়ে ফিরে এসেছেন। অবশেষে বুধবার তার এলাকার পৌর কাউন্সিলরের কাছে গিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। তিনি কিশোর সংশোধনী কেন্দ্রের সহকারী পরিচালককে অনুরোধ করেন আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার। তারপর পাঁচজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
আহত কিশোর বন্দি লাবলুর পিতা বাবলু হোসেন বলেন, ছেলেদের খুব মারপিট করেছে। আবার যদি নির্যাতন করে, এই ভয়ে ওরা মুখ খুলছে না। সন্তানেররা কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে নিরাপদ নয়। কর্তৃপক্ষের ইন্ধনে কয়েকজন বন্দি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারা বন্দি হলেও ইচ্ছামত বাইরে আসা-যাওয়া করতে পারে।
তবে অভিভাবকদের অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, বন্দি কিশোররা মারামারি করেছে। এতে পাঁচজন আহত হয়েছে। বিষয়টি মঙ্গলবার দুপুরে জানতে পেরেছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের ৫ বন্দি পিটুনিতে আহত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ