Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাঙ্গুনিয়া ইপিজেড প্রকল্প উদ্বোধনের ১৭ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি

প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল আবছার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) ঃ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেড) প্রকল্পটি গত ১৭ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে ফাইলবন্দী হয়ে আছে প্রকল্পটি। হাজার কোটি টাকার তথ্য-প্রযুক্তি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। বেসরকারি উদ্যোগে আইটি পার্ক এবং অ্যাগ্রোবেইজড ইপিজেড গড়ার লক্ষ্যে জমির রেজিস্ট্রেশনসহ প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। ১৯৯৯ সালে ১০ অক্টোবর এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় ৭৫৯ একর জমি সার্ভে করে ৫৫০ একর জমি ইপিজেড নির্মাণের জন্য নির্ধারণ করা হয়। ২০০০ সালের মধ্যে ১৩ জন দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীকে কিছু কিছু জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়েছিল। ২০০০ সালে ৩ ডিসেম্বর এই বেসরকারি কোম্পানীগুলো তাদের প্রকল্প শুরু করার লাইসেন্স পেয়ে যায়।
বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীরা জানান, চিটাগাং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের উদ্যোগে রাঙ্গুনিয়া ইপিজেড নির্মিত হলে আমেরিকাসহ বিভিন্ন উন্নত দেশের বহু বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান শত মিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করত, যা থেকে রাঙ্গুনিয়া চট্টগ্রাম ছাড়াও বাংলাদেশের লক্ষাধিক বেকারের কর্মসংস্থান হতো। ২০০০ সালের সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমের শীর্ষস্থানীয় ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ব্যাকটেলের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করা হয়েছিল। ব্যাকটেল এ পার্কে প্রাথমিক পর্যায়ে ৭০০ কোটি টাকা এবং পরে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা ছিল। সংস্থাটি জানায়, রাঙ্গুনিয়া ইপিজেড চালু হলে ৫০ হাজার দক্ষ যুবকের পাশাপাশি আড়াই লাখ অদক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো।
আইটি সেক্টরে এক্সপার্ট একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এই ইপিজেড প্রকল্পে দেশ-বিদেশের সঙ্গে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য রাখা হয়েছে ইনফরমেশন ট্যাকনোলজি ভ্যালি (আইটি ভ্যালি) এবং অ্যাগ্রিকালচার ভ্যালি (অ্যাগ্রো ভ্যালি) সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে একদিকে যেমন তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন উন্নত দেশের সাথে তথ্য-প্রযুক্তির আদান-প্রদানসহ ইনফরমেশন টেকনোলজি বেইজড ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে তোলা সম্ভব। বর্তমানে চট্টগ্রামে প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়া বিশ্বের যেসব দেশের চাহিদা আছে এমন কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত ও রপ্তানি করা সম্ভব। চিটাগাং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তাদের উৎপাদিত পণ্য পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য (সেভেন সিস্টার বলে পরিচিত) এবং নেপাল, ভুটান, চীনসহ বিভিন্ন দেশে পাঠাতে পারত। এছাড়াও রাঙ্গুনিয়ায় ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স, দাতা সেন্টার, ই-কমার্স ফিল্ম ও মাল্টিমিডিয়া ডাটা এন্ট্রি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যেত বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। ১৯৯৭ সালের পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক রাঙ্গুনিয়া ইপিজেডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের চত্বরটি এখন গোচারণ ভূমি এবং বনজঙ্গলে ছেয়ে আছে। বর্তমান সরকার খুব দ্রুত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে রাঙ্গুনিয়া তথা চট্টগ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে সচেষ্ট হবেন। এ আশা সকলের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাঙ্গুনিয়া ইপিজেড প্রকল্প উদ্বোধনের ১৭ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ