Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভারতে করোনায় ধুঁকছে অর্থব্যবস্থা

প্রণোদনা ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০২০, ৬:৩৮ পিএম

ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির ধকল কাটাতে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপির ত্রাণ ঘোষণা করেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারামন। দেশের দরিদ্র শ্রেণির জন্যে এ সময় মোদি সরকার নগদ ও খাদ্যে ভর্তুকি দেবে বলে জানালেন তিনি। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগেই বেশ কিছুটা শ্লথ ছিল ভারতীয় অর্থনীতি। তারই মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা এই করোনাভাইরাস। ফলে এই মারণ ভাইরাস ঘা দিয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির মেরুদ-ে, তাই গোটা পৃথিবীর মতো ধুঁকছে ভারতের অর্থব্যবস্থাও।
এর আগেও ভারতীয় বাজারে রুপির জোগান অক্ষুন্ন রাখতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় এবং আরবিআই। সেই মতোই এবারও এগিয়ে এলেন মোদি সরকারের অর্থমন্ত্রী। গতকাল অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমাতেই লকডাউন করা হয়েছে, আর এর জেরে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের স্বার্থ রক্ষায় পাশে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্রীয় সরকার।
টানা ৩ সপ্তাহের এই লকডাউন দেশের অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেবে, বলছিলেন অনেকেই। অনেক অর্থনীতিবিদই করোনার জেরে হওয়া তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কট সম্পর্কে সতর্ক করেছেন দেশের সরকারকে। মনে করা হচ্ছে, এর বড়সড় প্রভাব পড়তে চলেছে বার্ষিক জিডিপি ক্ষেত্রেও।
দিল্লির করোনা পজিটিভ চিকিৎসকের সংস্পর্শে আসা ৯০০ জন কোয়ারান্টাইনড, বাড়ছে আতঙ্ক! ১০০ জন কর্মচারী নিয়ে গঠিত কোনও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পরবর্তী তিন মাসের জন্য ইপিএফের রুপি (নিয়োগকর্তা ও কর্মচারীদের ১২ শতাংশ) ভর্তুকি দেবে সরকারই, তবে এই সুবিধা পাবেন তারাই যাদের আয় মাসিক ১৫ হাজার রুপির কম। এর ফলে উপকৃত হবেন ৮০ লাখ শ্রমিক ও ৪ লাখ সংগঠন।
ভারতের অর্থমন্ত্রী আরও যেসব প্রণোদনা ঘোষণা করেন সেগুলো হচ্ছে-
দেশের সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ৫০ লাখ রুপির স্বাস্থ্যবিমা। ১০০ দিনের কাজের আওতায় শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে ২০২ রুপি করা হবে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি যোজনার আওতায় বছরে ৬ হাজার রুপি করে পেতেন কৃষকরা। বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই তা থেকে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ২ হাজার রুপি করে জমা পড়বে। প্রতি পরিবারকে বিনামূল্যে ১ কেজি করে ডালও দেয়া হবে। দেশের ৮০ কোটি দরিদ্র মানুষ এতে উপকৃত হবেন।
প্রধানমন্ত্রী অন্ন যোজনার আওতায় আগামী তিন মাসের জন্য বিনামূল্যে মাথাপিছু অতিরিক্ত ৫ কেজি চাল অথবা গম দেয়া হবে। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষের জন্য আগামী তিন মাস মাথাপিছু ৫০ লাখ রুপির বিমা। দরিদ্র মানুষের জন্য ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপির বিশেষ প্যাকেজ। প্রবীণ নাগরিক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধীদের প্রতি মাসে অতিরিক্ত ১০০০ রুপি দেয়া হবে। দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ৮ কোটি ৩০ লাখ পরিবারকে বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার দেয়া হবে।
যেসব সংস্থার কর্মীর সংখ্যা ১০০-র কম এবং ৯০ শতাংশ কর্মীর মাসিক আয় ১৫ হাজার রুপি, আগামী তিন মাস তাদের ইপিএফও-র ২৪ শতাংশ দেবে কেন্দ্র সরকার। করোনা পরিস্থিতিতে সংশোধিত ইপিএফ আইন মাফিক কোনও কর্মী চাইলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ৭৫ শতাংশ অথবা তিন মাসের বেতন (যে অঙ্ক কম হবে) তা আগাম তুলতে পারবেন। জন ধন অ্যাকাউন্ট রয়েছে দেশের এমন ২০ কোটি মহিলার অ্যাকাউন্টে আগামী তিন মাস ৫০০ রুপি করে দেবে কেন্দ্র সরকার।
দিন দুয়েক আগেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে আয়কর জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হল ৩ মাস। ৩১ মার্চ থেকে বাড়িয়ে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার দিন করা হয়েছে ৩০ জুন। দেরিতে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার ১২ শতাংশের পরিবর্তে ৯ শতাংশ হারে সুদ নেয়া হবে।
অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স না রাখলে এত দিন চার্জ নেয়া হত, আপাতত সেই ধরনের কোনও চার্জ নেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে, আগামী তিন মাস ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে যে কোনও ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে রুপি তুলতে পারবেন সাধারণ মানুষ। সে ক্ষেত্রে কোনও চার্জ নেয়া হবে না। সূত্র : এনডিটিভি ও ইন্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ