Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৬ মাস যাবৎ বেতন পাচ্ছেন না ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাড়ে ৩ শত কর্মচারী

জাল সনদে চাকরী করছেন বহু অফিসার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২০, ৬:৪১ পিএম

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ক্ষুধার্ত শত শত কর্মচারী দীর্ঘ ৬ মাস যাবত বেতন ভাতা না পেয়ে আহাজারি করে দিন কাটাচ্ছে। অডিট আপত্তির বেড়াজালে পড়ে গত ৬ মাস যাবৎ বেতন পাচ্ছেন না ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাড়ে ৩ শত কর্মচারী। 

এদিকে, একই অডিট আপত্তি থাকলেও ইফার অন্যান্য কর্মকর্তারা বেতন ভাতা ঠিকই পাচ্ছেন। বেতন বন্ধ থাকায় সাড়ে তিনশ’ কর্মচারী ধার দেনা করে অনাহার অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছে। তাদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। প্রতিদিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নেয়া হচ্ছে। অথচ বেতন দেয়া হচ্ছেনা। করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় বেকার হয়ে যাওয়া দুঃস্থদের সরকার প্রণোদনা দিচ্ছেন। আর ইসলামিক ফাউন্ডেশনে কাজ করেও বেতন পাচ্ছেন না এ সব অসহায় গরীব কর্মচারীরা। এসব ক্ষুধার্ত অসহায় কর্মচারীদের দেখার কেউ নেই।

গত বুধবার এসব অসহায় কর্মচারীরা আগারগাঁও প্রধান কার্যালয়ের সামনে বেতন ভাতার দাবিতে দূরত্ব বজায় রেখে মানব বন্ধন করেছে। ইফার কর্মচারী হায়দার আলীর সভাপতিত্বে এতে বেতন চালুর দাবিতে আরো বক্তব্য রাখেন, শফিকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, শাহাবুদ্দিন ও রিংকু। শিগগিরই তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, সিভিল অডিট অধিদপ্তরের এক নিরীক্ষা পরিদর্শন প্রতিবেদনে প্রায় ৩৫৯ জন কর্মচারী নিয়াগে গুরুতর আপত্তি উত্থাপিত হয়। এ আপত্তির প্রেক্ষিতে তাদের বেতনভাতা বন্ধ রাখা হয়।
সূত্র জানায়, একদিনেই ১৩৫ জনের রাজস্বখাতে সরকারি চাকুরীর নিয়োগ পত্র দেয়া হয়েছে। তাদের কোন পরীক্ষা হয়নি এবং নিয়োগের কোন বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। অপর দিকে কোন প্রয়োজন ছাড়াই ২২৪জন কর্মচারী দৈনিক ভিক্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন চাকরী বিধিতে এ ধরনের নিয়োগের কোন বিধান নেই।

কিন্তু নিয়োগে অনিয়ম হয়ে থাকলে তাদের দিয়ে কাজ কেন করানো হচ্ছে ? কাজ করিয়ে বেতন কেন দেয়া হচ্ছেনা ? এর কোন সদুত্তর দিতে পারেনি ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা। তারা বলেন. বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা বোর্ড অব গভর্ণরস। সে বোর্ড মিটিংও ১০মাস যাবত বন্ধ। এ ভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিদ্ধান্তহীনতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় মানবতর জীবন যাপন করছেন ৩৫৯ জন কর্মচারীরা। তারা অভিযোগ করেন. তাদের মত একইভাবে পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ পেয়েছেন অনেক অফিসার। জাল সনদে চাকরী করছেন বহু অফিসার। তাদের বিষয়ে অডিটে স্পষ্ট করে নাম ধাম উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু তাদের বেতন বন্ধ হয়নি। অথচ গরীব কর্মচারীদের বেতন বন্ধ করা হয়েছে। তারা বলেন, নিয়োগ বাতিল করলে কর্মচারীরা বিকল্প কর্মসংস্থান খুঁজে নিতেন। কিন্তু এখন কর্তৃপক্ষ যা করছেন তা হলো তাদের শ্রম নেবেন কিন্তু শ্রমের মূল্য দেবেন না।

ইফার নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, উপপরিচালক পদমর্যাদার মহিলা কো-অর্ডিনিটের,আাইন উপদেষ্টা, সম্পাদক, এবং সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার সহকারী সম্পদকসহ প্রায় ডজন খানেক পদে কোন বিজ্ঞপ্তি এবং পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। তা ছাড়া জাল সনদে চাকরী করছেন সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম আশেকী, যুবায়ের আহমেদসহ অনেকে যা অডিটে লেখা রয়েছে। তাদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়নি। এসব সুবিধাবাদী কর্মকর্তারা উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কক্ষে অহরহ আড্ডা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।



 

Show all comments
  • Romjan molla ১৭ এপ্রিল, ২০২০, ৭:৪৫ পিএম says : 0
    কোরান ছাপানো টাকা দুর্নিতি করছে।সে টাকা দিয়ে আপাদাত চলেন। পরে নিয়েন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলামিক ফাউন্ডেশন

৪ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ