Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সুনামগঞ্জের হাওর পর্যবেক্ষণে বিভাগীয় কমিশনার

কৃষকের পাশে কাঁচি হাতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩২ পিএম

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যেও ধুম পড়েছে ধানকাটার। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দুই সপ্তাহে সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাতসহ আগাম বন্যার আশংকা থাকায় কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার আহবান জানিয়েছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। সেই নির্দেশনায় নড়েচড়ে উঠেছে কৃষকরা। কিন্তু নানাবিধ সীমাব্ধতায় থমকে যাচ্ছে ধান তোলার কার্যক্রম। বিশেষ করে করোনা আতংকে শ্রমিক সংকটে অসহায় তারা। কিন্তুধান কাটতেই হবে তারপরও, সীমাব্ধতা মাড়িয়ে কৃষকদের ধান কাটা নিশ্চিতে মাঠে নেমে সাহস ও সহযোগিতায় পুরোদমে সক্রিয় স্থানীয় প্রশাসনের প্রশাসের শীর্ষ কর্তকর্তারা। মঙ্গলবার হাওরাঞ্চলের ধান কাটার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মশিউর রহমান, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক আবদুল আহাদ, ইউএনও সফি উল্লাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগন বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করেছেন। এসময় হাওরে ধানকাটায় সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের আহবান জানান তারা। তাদের এ আহবানে সাড়া দিয়ে কৃষকদের পাশে এসেছে দাড়িয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এছাড়া বিভিন্ন পেশায় যুক্ত কর্মহীন মানুষগুলোও ধান কাটতে বাড়িয়ে দিয়েছেন সহযোগিতার হাত। নেমে পড়েছেন কাঁচি হাতে কৃষকের পাশে ধানের মাঠে। মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) হাওরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, হাওরে হাওরে ধানকাটার ধুম পড়েছে। দিরাই উপজেলার ভরাম হাওরে জমির পাকা ধান নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় ছিলেন দরিদ্র বর্গাচাষী সাবজাল মিয়া ও মহেশ রায়। এমনি সময়ে তাদের পাশে দাঁড়াল ভাটিবাংলা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেডের সমবায়ীবৃন্দ। সাবজাল মিয়ার আড়াই কেয়ার ও মহেশ রায়ের আধা কেয়ার জমির ধান স্বেচ্ছাশ্রমে কেটে দিলেন সমিতির ২৫ জন সদস্য। এ সময় ধান কাটায় অংশ নেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রাজমনি সিংহ, দিরাই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান লিটন, ভাটিবাংলা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সভাপতি প্রশান্ত সাগর দাস, ব্যবসায়ীদের মধ্যে সুর্যকান্ত রায়, অপু মোদক, শিক্ষার্থী রঞ্জু সুত্রধরসহ সমবায়ীবৃন্দ। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নয়টি বৃহৎ হাওরে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি বেরো ধান চাষ করা হয়েছে। ইতি মধ্যে ৭০ ভাগ ধান পেকে গেছে, কাটা হয়েছে ১৫ ভাগ ধান।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রাজমনি সিংহ বলেন, শ্রমিক সংকটের দুর্যোগে ভাটিবাংলা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সদস্যবৃন্দের এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানাতে তাদেও সাথে ধান কাটতে এসেছি, সমিতির সমবায়ীরা বিগত ৫ দিন যাবত স্বেচ্ছাশ্রমে নিরুপায় কৃষকদের ধান কেটে দিচ্ছেন। কৃষক সাবজাল মিযা ও মহেশ রায় জানান, করোনা মহামারী ও জমির পাকা ধান নিয়ে শ্রমিক সংকটে বড় দুশ্চিন্তায় ছিলাম, সমিতির ভাইয়েরা আমাদের জমির ধান কেটে দেয়ায় চিন্তামুক্ত হলাম, এভাবে সবাই এগিয়ে আসলে কৃষকদের কোন সংকট থাকবেনা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, প্রতিকুল আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ধান কাটা শেষ করার আহবান রয়েছে, আমরা আশাবাদী বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সকল শ্রেণী পেশার লোকজন ধান কাটায় এগিয়ে আসলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ফসল গড়ে তোলা সম্ভব শতভাগ ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ