Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

করোনায় স্বাভাবিক জীবন স্তব্ধ কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে মূল্যবাজী থেমে নেই সিলেটে

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২০, ৯:১৮ পিএম

লকডাউনেও ঘরে বসে নেই মানুষ। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয়ে রয়েছে মানুষের তোড়জোড়। বিশেষ করে মাহে রমজান উপলক্ষে চিরায়িত ভোজন বিলাসী মানুষ। কিন্তু এবার চিরায়িত জীবনধারায় ছন্দপতন ঘটলেও  রমজানে পন্য সামগ্রির মূল্যবৃদ্ধি অশুভ প্রতিযোগীতা আগের মতোই।
খোলাবাজারে ইফতারী সামগ্রি বিক্রির পথ রুদ্ধ। তবে ইফতার  ঘরে তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ক্রয় করতে যেয়ে মাথায় হাত উঠছে মানুষে। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় সকল সামগ্রির দান উর্ধ্বমুখী। করোনা প্রকোপে লেবু এখন হট কেক। দরও আকাশছোঁয়া। হালি প্রতি সাইজ অনুযায়ী ৪০ থেকে ৮০ টাকা। আদার দাম কোথায় গিয়ে দাড়াঁয় তার ইয়ত্তা নেই। আদা কিনতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে গরিব ও মধ্যবিত্তদের। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে প্রায় দেড় শ’ টাকা। ধুম করে দাম বেড়ে সিলেটে এখন আদা’র কেজি চার শ’ টাকা ছুঁই ছুঁই।
         সিলেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকারভেদে ভারতীয় আদার কেজি ছিলো ১৮০-২০০ টাকা।  আজ তা পাইকারি বাজারেই ৩২০-৩৪০ টাকা। দেশি আদা ছিলো ২৪০ টাকা আজ তা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রায় প্রায় চার শ’ টাকা কেজি দরে। ভারতীয় আদা আমদানি বন্ধ থাকায় বেড়েছে আদার দাম এমনটিই বলে দাবি করছেন সিলেটের আদা পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে সব ধরনের ডালের দাম। ডিম কিছুটা সহনীয় দামে পাওয়া যাচ্ছে।  মুরগির ডিম ২৫ থেকে ৩০ টাকা। তবে গরুর গোস্ত  ৭০০শত থেকে ৮০০শ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে।
বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় দানার মসুরের ডাল গত সপ্তাহের তুলনায় ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার এ ডাল বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৯০-১০০ টাকা। গত সপ্তাহে যা ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। মাঝারি দানার মসুর ডাল আজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়; গত সপ্তাহে যা ছিল ৮০ থেকে ৯৫ টাকা। এছাড়া ছোট দানার মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়; গত সপ্তাহে যা ছিল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। তবে মুগ ডাল আগের দামেই তথা ১৩০ থেকে ১৪৮ টাকায় এবং অ্যাংকর ডাল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চিনির দাম প্রতিকেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। শনিবার   প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়ে ৬০ থেকে ৭৫ টাকা, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫০ থেক ৬০ টাকা। আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। আজ চিনের আদা প্রতিকেজি ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এছাড়া দেশি আদা ২৩০ টাকা থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। এদিকে গত সপ্তাহের আকার ভেদে প্রতি হালি ১৫ থেকে ২৫ টাকার লেবু শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। ২০ টাকা প্রতিকেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫-৪০ টাকা। ২০ থেকে ২৫ টাকা প্রতিকেজি শসার দাম বেড়ে হয়েছে ৩০ থেকে ৪৮ টাকা। ২০-৩০ টাকার বেগুনের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০-৫০ টাকা। গত কয়েক সপ্তাহের মতো এখনো বাজারে সব থেকে দামি সবজি সজনে ডাটা। বাজার ভেদে সজনে ডাটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে কোথাও কোথাও ৬০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছিল। দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটোও। গত সপ্তাহে ১০-১৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো এখন ২৫ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। রোজা উপলক্ষ্যে  সবজির দাম মাত্রা পেলেও  করলা, পেঁপে, বরবটি, ঝিঙা, চিচিংগার দাম আগের মতোই । বাজার ও মান ভেদে করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। এছাড়া পটল ৪০-৫০ টাকা, ঝিঙা ৪০-৫০ টাকা এবং চিচিংগা ৩০-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সবজির পাশাপাশি বেড়েছে ব্রয়লার ও দেশি মুরগির দাম। গত সপ্তাহে ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে ১২০-১৩০ টাকা হয়েছে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৫০-৪০০ টাকা। মুরগির দাম বাড়ার পাশাপাশি ডিম এবং গরু ও খাসির মাংসের দামে তাপ উঠছে ক্রমশ।  ডিমের ডজন আগের মতোই ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতই গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬০০ টাকায়। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা।
সিলেট বিভাগীয় গনদাবী ফোরামের সভাপতি এডভোকেট চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ বলেন, বরাবরের মতো এবারও আমরা জিম্মি অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে। উপলক্ষ্যে কেন্দ্রিক দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধিও এহেন তৎপরতা বন্ধে উন্নত দেশের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা অনুসরন করা জরুরী। তিনি বলেন, উন্নত দুনিয়ায় মেগা সপ দেশের সর্বত্র। মানুষ মেগা সপের মুল্য তালিকা অন্যান্যদের দোকানের  মানদন্ড হিসেবে কাজ করে। সেকারনে ইচ্ছে করলেই কেউ মুল্যবৃদ্ধি করে জিম্মি করতে পারে না। মেগাসপগুলো সরকারের বাজার মনিটরিং এর আওতাভূক্ত। সেকারনে দ্রব্য মুল্যে দাম কোন উপলক্ষ্যে লাগামহীন করার সুযোগ থাকে না। অথচ আমার দেশে চাহিদা বাড়লেই পন্যেও দামে আগুন ধরিয়ে  অসাধু ব্যবসায়ীরা।



 

Show all comments
  • Ainul islam ২৫ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৩৬ পিএম says : 0
    Thik bolsen drobbo mullo eto barse bolar kew nai 55 tk dal 95 theke 105 ada roson saban sevlon kono kichu dam theme nai theme achi shudhu amra sadaron manush, ke oder atkabe kew nai, desh lock down dakat chur shb ghure holeo ki hbe notun dakat dol mathe ponner dam 3gon kore sell ditese, koi jabo baccha ma bap der niye jani na. Manush khub osohai 60%tk ase mani nilam baki 40% duke duke mortese, donnobad drobbo mullo niye topi tular jonno, ay news ta sorkar pojonto powsai den.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
১৮ ডিসেম্বর, ২০২২
১০ ডিসেম্বর, ২০২২
১০ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ