Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভারতে লকডাউন প্রত্যাহারে বাধা হবে বাড়তি সংক্রমণ-মৃত্যু

পাকিস্তানে শঙ্কা বাড়াচ্ছে মসজিদ শনাক্ত : ৩১,৭০,২৪৮ মৃত : ২,২০,৩০৩ সুস্থ : ৯,৭৯,১৮১

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২০, ১২:০৯ এএম

ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং এশিয়ায় চীনের পরে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে দেশটি। হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। এহেন পরিস্থিতিতে দেশটি থেকে প্রায় ছয় সপ্তাহের লকডাউন এ সপ্তাহের শেষ দিকে প্রত্যাহার করতে অসুবিধা হবে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সরকারি নেতারা। এদিকে গতকাল কেন্দ্র সরকার নির্দেশনা জারি করে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া ভিনরাজ্যের শ্রমিকদের বাড়ি যেতে দিতে রাজি হয়েছে। রাজ্য সরকারের ব্যবস্থাপনায় আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া এসব শ্রমিককে ফেরত পাঠানো হবে। ওদিকে পার্শ্ববর্তী পাকিস্তানও কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় উত্থান ঘটেছে এবং দূরত্বের কঠোর নিয়ম থাকা সত্তে¡ও অনেক লোক মসজিদে জড়ো হচ্ছেন বলে উদ্বেগ রয়েছে।
গতকাল রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে ৩১ লাখ ৭০ হাজার ২৪৮ জন এবং এদের মধ্যে মারা গেছে ২ লাখ ২০ হাজার ৩০৩ এবং সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন ৯ লাখ ৭৯ হাজার ১৮১ জন। গতকাল আরো মারা গেছেন- যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫৩, স্পেনে ৪৫৩, ইতালিতে ৩২৩, বেলজিয়ামে ১৭০, হল্যান্ডে ১৪৫, মেক্সিকোয় ১৩৫, সুইডেনে ১০৭, রাশিয়ায় ১০৫, ইরানে ৮০, জার্মানিতে ৬০, কানাডায় ৪৫, ফিলিপাইনে ২৮, পর্তুগালে ২৫, পাকিস্তানে ২৩, ব্রাজিলে ২০ এবং রোমানিয়ায় ১৮ জন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার অর্থনীতি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে কম ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামীণ অঞ্চলে কিছু খামার ও শিল্প কার্যক্রম আবার চালু করার অনুমতি দিয়েছে। লকডাউনের ফলে দেশটির লাখ লাখ লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছে, অনেকেরই নেই খাদ্য, নেই আশ্রয়। তবে গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১,৫০০ জন আক্রান্ত নিয়ে সরকারের অর্থনৈতিক দুর্দশা আরও বাড়ছে। তবু আরও সহজ করতে না পারার পরিবর্তে বিশ্বের বৃহত্তম শাটডাউন ৩ মে থেকে আরো বর্ধিত করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
রাজধানী নয়াদিল্লিতে হটস্পটগুলোর মধ্যে একটিতে এই মহামারী মোকাবেলায় সরকারি দলের নেতৃত্বদানকারী ডাঃ এসকে সরিন বলছিলেন, ‘ভারত এখনও মহামারীর চরম মুহূর্তে রয়েছে এবং তাই বিধিনিষেধ শিথিল করার ফলে আক্রান্ত অনিয়ন্ত্রিতভাবে বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে’। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৩১ হাজার ৭৮৭ জনে দাঁড়িয়েছে। মারা গেছে ১ হাজার ৮ জন যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপের কিছু অংশের তুলনায় অনেক কম, যেখানে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে।
তবে উন্নত দেশগুলির তুলনায় ভারতের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা অনেক বেশি সীমাবদ্ধ এবং আশঙ্কা হ’ল যুক্তরাষ্ট্র এবং ইতালিতে দেখা যায় এমন ধরনের সংক্রমণ সরকারি হাসপাতালগুলোকে সহজেই গ্রাস করতে পারে। ‘আমরা সুপারিশ করছি যে, লকডাউনটি ৩ মে’র পরেও বাড়ানো হোক, রাজ্যগুলোর মধ্যে কোনও ধরনের গণপরিবহন চালুর অনুমতি যেন না দেয়া হয়’, বলছিলেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত। এই গোয়ার সমুদ্র সৈকতেই ভারতের অভ্যন্তরভাগ ও বিদেশ থেকে কয়েক হাজার পর্যটক আসে।
পাকিস্তানে করোনাভাইরাসে শনাক্ত ১৪ হাজার ৮৮৫ জন এবং এদের মধ্যে ৩২৭ জন মারা গেছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, পাকিস্তান চলতি অর্থবছরে মন্দায় পড়তে পারে। তারা ব্যবসা এবং শ্রমিকদের ব্যথা কমাতে মূলত পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশে ৬ হাজার রফতানি শিল্প চালু করেছে। একটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি সংস্থা বলছে, একটি বড় সমস্যা মসজিদগুলিতে জমায়েত, কারণ এ জাতীয় সমাবেশ দূরত্ব নীতি মানছে না।
পাকিস্তান একশ্রেণির আলেমদের চাপে পবিত্র রমজান মাসে মসজিদে নামাজ পড়ার দিয়েছে। তবে শর্ত ছিল, তারা ছয় ফুট দূরে দাঁড়াবে, মুখোশ পরবে এবং রাস্তায় নামাজ পড়বে না। তবে পাট্টান উন্নয়ন সংস্থা বলেছে যে, ১৫টি শহরে জরিপ করা ১৯৪টি মসজিদে নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘পাঞ্জাব ও ইসলামাবাদে ৮০ শতাংশেরও বেশি মসজিদে ইমামগণ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম তারাবিহ জামাতের সময় সরকার-আলেমদের চুক্তি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন’। বেশিরভাগ মুসল্লি রাস্তায় নামাজ পড়ার সময় মুখোশ পরেননি এবং কয়েকজন মাত্র একে অপরের থেকে দূরে থেকেছেন। এতে বলা হয়, অনেকে ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারে এবং এটি তাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল। পর্যবেক্ষণ করা মসজিদগুলোর দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশিতে শিশুদের তাদের অভিভাবকদের পাশাপাশি দেখা গেছে।
পাট্টান বলছিলেন, ‘এটি সত্যই একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি। কর্তৃপক্ষ এবং আলেমদের জানা উচিত যে, একজন আক্রান্ত ব্যক্তি ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে’। সূত্র : রয়টার্স, ওয়ার্ল্ডমিটার্স।



 

Show all comments
  • বিবেক ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১:০০ এএম says : 0
    তার মানে হচ্ছে আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকায় সমগ্র ভারতে ৩ তারিখের পর আর লোকডাউন চলছে না
    Total Reply(0) Reply
  • Rajib Ahmed ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৭ এএম says : 0
    ভারত নামটা শুনালে বা দেখলেই চরম রাগ উঠে।
    Total Reply(1) Reply
    • aakash ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১০:২১ এএম says : 0
      keno bhai??
  • A.R. Prottoy ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৭ এএম says : 0
    সব দেশ মূর্খ, শুধু বাংলাদেশ বিচক্ষণ, এদেশে লকডাউন আরও ৬ মাস দেয়া হউক,নিম্ন আয়ের মানুষের মৃত্যু হউক...
    Total Reply(0) Reply
  • মশিউর ইসলাম ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৮ এএম says : 0
    Shohel Rana ভারতের মতো দেশে যখন সাধারণ লোকদের জন্য সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে,ঠিক সেই সময়েই বাংলার কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে বিক্রি করতে পারছে না,ক্রয় করতে পারছে না তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য।গরীবের চাল চেয়ারম্যান,মেম্বর,কমিশনার,বড় বড় নেতারা হজম করছে।চিকিৎসার জন্য ডাক্তারদের কাছে গেলেও কুকুরের মতো অবহেলা করছে,ক্ষূধার তারণায় ছোট্র শিশু কাঁদছে।মায়ের চোখের জলে এই সমস্যা আরো জটিলতর হচ্ছে।কে নেবে এই অসহায় কৃষক,অভাবী লোক,ক্ষুধার্থ মা বোন,রোগীদের দায়িত্ব??অর্থলোভী মজুদদার সাধারণ মানুষদের চুষে নিচ্ছে।এক দিকে ভাতের চাল নাই,অপর দিকে কাজ নাই।যদি চাল পায়,তবে নুন,তেল,তরকারী,হলুদ মরিচ থাকে না।আমি মনে করি,এই সমস্যার সমাধানে শেখ হাসিনার পরে যদি কেউ ভূমিকা রাখতে পারে,তারা হলো সেনা বাহিনী।পুলিশদিয়ে এই সমস্যা সমাধান অসম্ভভব।পুলিশ কেবল ঘুষ খেতে পারে,মানুষ তারাতে পারে,গরীবের কষ্ট বূঝতে পারে না।তাই,আসুন আমরা শেখ হাসিনার হাত ধরে,সেনাবাহিনীকে সাথে নিয়ে,সবাই সচেতন হয়ে করোনা ভাইরাস,তথা এই মহামারী প্রতিরোধ করি,শেখ মুজিবের সুস্থ্য বাংলাদেশ গড়ি
    Total Reply(0) Reply
  • Jibon Sathi ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৮ এএম says : 0
    আমাদের দেশেও লকডাউন একটু শিথিল করা হোক কারণ অনেক মানুষ আছে যারা বিপদে কোথাও গিয়ে আটকা পড়েছে.... এখন তারা না পারছে ফিরতে, না পারছে খেতে.. তাদের এখন মরা ছাড়া উপায় নাই
    Total Reply(0) Reply
  • Mainul Quadery Sagar ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৯ এএম says : 0
    বাংলাদেশ হয়তো বেশিদিন কারখানা বা অফিস বন্ধ রাখতে পারবেনা | এজন্য জীবনধারা পরিবর্তন করতে হবে অন্তত যতদিন ভ্যাকসিন আবিষ্কার এ হয় | সোসাল ডিস্টেনসিঙ রেখে কাজ করা, সব জায়গায় হাত ধোবার ব্যবস্থা রাখা , মাস্ক পড়া এসব জীবন যাত্রার অংশ করে ফেলতে হবে |. সরকারের উচিত রাস্তাটি মোড়ে মোড়ে হাত ধোবার ব্যবস্থা করা পাশাপাশি ম্যাসিভ টেস্টিং করতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Salim Reza ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৯ এএম says : 0
    Bangladesh may follow what her surrounding countries are doing.
    Total Reply(0) Reply
  • nurullah ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৪৫ এএম says : 0
    বিষয়টা আসলে কী? আমরা অন্যদের দেখাদেখি চলছি না? ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক দুর্বলতার পরো এশিয়ার দেশগুলো বিশেষত বাংলাদেশে বিপদটা বড় মনে হচ্ছে না, এর মানে কি? আল্লাহপাকের হেফাজত এখানে খুব কার্যকর নয়? পাকিস্তান নিয়ে এত চিন্তা কিন্তু সেখানে মরলো কয়জন? বাংলাদেশে সর্বমোট কয়জন মরলো? আর আমেরিকায় এতো ব্যবস্থাপনা কিন্তু সেখানে দিনে মরছে কয়জন? তাহলে কি বুঝলেন? আমরা আল্লাহপাকের রহমত ও ক্ষমাকে এড়িয়ে থাকতে পারবো? সতর্কতার সঙ্গে আমাদের ঈমান আমল তাওয়াককুল রক্ষায় সম্পূর্ণ মনোযোগী হতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ