Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভালো নেই বাকেরগঞ্জের মুড়ি কারিগররা

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০২০, ৭:৪১ পিএম

বরিশালের বাকেরগঞ্জের হাতেভাজা মোটা ধানের মুড়ির কদর সারাদেশে থাকলেও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউনের প্রভাবে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় চাহিদা অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে। ফলে বাকেরগঞ্জের মুড়ির কারিগররা ভাল নেই। 

অথচ সারা বছর জুড়ে বাকেরগঞ্জের হাতে ভাজা মোটা ধানের মুড়ি দক্ষিণাঞ্চল ছাড়িয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যেত। বিশেষ করে রমজান শুরুর একমাস আগেই বাকেরগঞ্জের মুড়ির কারিগরদের খাওয়া ঘুম বন্ধ হয়ে যেত। একজন কারিগর প্রতিদিন হাতে ৫০ কেজি থেকে ১শ’ কেজি পর্যন্ত মুড়ি ভাজতেন। এবার সেখানে অনেকটাই নিরবতা।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বাখরকাঠিসহ কয়েকটি গ্রাম জুড়েই যুগের পর যুগ ধরে মুড়ি ভাজার ব্যবসা চলে আসছে। মোটা ধান সংগ্রহ করে বিশেষ ব্যবস্থায় সিদ্ধ-শুকনা আর ছাটাই শেষে উপযোগী করে তোলা থেকে শুরু করে মুড়ি ভাজা পর্যন্ত রয়েছে বিশেষ দক্ষতা। কোন ধরনের ইউরিয়া ও হাইড্রোজসহ রাসয়নিক ছাড়া এখানে মুড়ি ভাজা হয়।
রমজানের চাহিদা মেটাতে নারীদের সাথে পুরুষরাও সমানতালে মুড়ি তৈরির কাজ করতো প্রতি বছর। তবে এবার চালচিত্র কিছুটা ভিন্ন। পরিবহন সঙ্কটে দক্ষিণাঞ্চলের বাইরে মুড়ির পাইকাররা খুব একটা আসছে না। ফলে চাহিদা কম থাকায় কারিগরদের সারা বছরের আশা অনেকটাই নিরাশায় পরিণত হচ্ছে।
অপরদিকে মুড়ি কারিগরদের টিকে থাকতে হচ্ছে মেশিনে ভাজা মুড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে। ইউরিয়া ও হাইড্রোজ মিশিয়ে মেশিনে বড় ও সাদা করে মুড়ি ভাজা হয়। ফলে তার উৎপাদন ব্যয়ও কম। মেশিনের মুড়ির খরচ ও পরিশ্রম উভয়ই কম বিধায় প্রতিযোগিতায় টেকা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় আড়তদার ও মিল মালিক ইউসুফ আলী হাওলাদার জানান, মেশিনে মুড়ি ভাজলে হাইড্রোজ মেশানো হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর। কিন্তু অনেকই কম দামে পেয়ে মেশিনের ভেজাল মুড়ি কিনে খাচ্ছে। তাই মেশিনের মুড়ি তৈরিও অব্যাহত থাকছে। অপরদিকে হাতে ভাজা মুড়ি পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু হলেও চেহারা কিছুটা লালচে। এ মুড়ি তৈরিতে খরচও বেশি। মেশিনের মুড়ি যেখানে পাইকারি ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে হাতে ভাজা মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি।
কিন্তু এবার করোনার বিরূপ প্রভাব পড়ছে বরিশালের মুড়ি পল্লীতেও। পরিবহন সঙ্কটে বাকেরগঞ্জের মুড়ি এবার দক্ষিণাঞ্চলের বাইরে খুব একটা যাচ্ছে না। ফলে মুড়ি পল্লীর অন্তত দশ হাজার কারিগরের কপালে এখন দুঃশ্চিন্তার ভাজ গভীর হচ্ছে ক্রমশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কারিগর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ