Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তৃতীয় ধাপে ২৩২৯ বন্দি মুক্তি পাচ্ছেন

করোনা রোধে সব কারাগারে ভাইরাস জিরো

সাখাওয়াত হোসেন | প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশের কারাগারগুলোতে ভিড় কমাতে তৃতীয় ধাপে ২ হাজার ৩২৯ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে। তিন মাস সাজা খাটা এসব কারাবন্দিদের মুক্তি দেয়ার নির্দেশনা এরইমধ্যে দেশের সকল কারাগারগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার ও গতকাল শনিবার (দুই দিনের) মধ্যে তাদেরকে কারাগার থেকে ছেড়ে দিতে কারা অধিদফতর থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রামণ রোধ ও বন্দিদের সুরক্ষায় দেশের সবকটি কারাগারে ‘ভাইরাস জিরো’ স্প্রে করা হবে। কোরিয়া থেকে আনা ভাইরাস নিরোধক ওষুধ গত বৃহস্পতিবারই দেশের কারাগারগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এই ওষুধ সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য কারা অধিদফতরের সব ডিআইজি ও কারাকর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

কারা কর্মকর্তারা জানান, দেশে ৬৮টি কারাগারে ৯০ হাজারের মতো বন্দি রয়েছে, যা কারাগারগুলোর ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি। কারাগারগুলো করোনা ঝুঁকি মোকাবেলার অংশ হিসেবে এসব বন্দি মুক্তি দেয়া হচ্ছে।
কারা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেন বলেন, তৃতীয় ও শেষ ধাপে ২ হাজার ৩২৯ জন কারাবন্দিদের মুক্তি দেয়া শুরু হয়েছে। শুক্রবার তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। শুক্রবার রাতে অনেকে ছাড়া পেয়েছেন। শনিবারও অনেকেই ছাড়া পেয়েছেন। তালিকা পরবর্তীতে জানানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কর্নেল আবরার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনার চাইতেও আমরা আরও কিছু বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছি। কারাগার ও বন্দিদের সুরক্ষায় নতুন করে আমরা ‘ভাইরাস জিরো’ নামে একটা ওষুধ এনেছি। সেটা দেশের সব কারাগারে আইসিআরসির গাড়িতে করে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই পাঠানো হয়েছে। এটা একটা নতুন ওষুধ। এটা পানির সঙ্গে মিশিয়ে স্প্রে করলে এর ধারে কাছেও কোন ভাইরাস থাকতে পারে না। থাকলেও সেটা সঙ্গে সঙ্গে মারা যাবে। এই ওষুধ দুই-একটা প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কেউ এখনো আনেনি। তবে আমরা কারাগারে এই ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা করেছি। এগুলো খুব দামি ওষুধ। তারপরও আমরা কারাবন্দিদর সুরক্ষার বিষয় চিন্তা করে এগুলো কোরিয়া থেকে কিনে এসেছি।

তিনি আরো বলেন, ‘ভাইরাস জিরো’ পৃথিবীর তিনটা দেশ তৈরি করে। জাপান, আমেরিকা ও কোরিয়া। কিন্তু আমেরিকা এবং জাপানের মেডিসিনের ব্যবহারের সময় কম। উৎপাদনের ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ব্যবহার করে ফেলতে হয়। কিন্তু কোরিয়ারটার অনেক লম্বা সময়। তিন মাস পর্যন্ত এর কার্যকারিতা থাকে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে নতুন বন্দি যারা আসছে তাদেরকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রেখে সুস্থতা নিশ্চিত করে তারপর অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাখা হচ্ছে। আর করোনার কোনও আলামত বা উপসর্গ দেখা গেলে, সঙ্গে সঙ্গে তার জন্য এবং তার আশপাশে যারা আছে সবাইকে আলাদা করে দেয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেসব কারারক্ষী দায়িত্ব পালন করেন তাদের ২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে যারা ছিল তাদেরকেও টেস্ট করে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে তিন মাস সাজা খাটা কারাগারগুলোতে ২ হাজার ৩২৯ জনের বন্দী মুক্তি দেয়া হচ্ছে। এসব বন্দিদের মুক্তি দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট কারাগারগুলো। কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক মনজুর হোসেন বলেন, কারাগারগুলোতে ২ হাজার ৩২৯ জনের তালিকা পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব আসামিরা ছয় মাস থেকে এক বছর সাজা ভোগকারী, তিন মাস থেকে ছয় মাস সাজা ভোগকারী এবং তিন মাস পর্যন্ত সাজা ভোগকারী বন্দিরা মহামারীর কারণে এই মুক্তির সুযোগ পাচ্ছেন। কারা সূত্রে জানা গেছে, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ২হাজার ৮৮৪ জন বন্দির অবশিষ্ট কারাদন্ড মওকুফ করা হয়েছে। ছয় মাস থেকে এক বছর সাজা ভোগকারী, তিন মাস থেকে ছয় মাস সাজা ভোগকারী এবং তিন মাস পর্যন্ত সাজা ভোগকারী বন্দিরা মহামারীর কারণে এই মুক্তির সুযোগ পাচ্ছেন। উল্লেখ্য, দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে মুক্তির তালিকায় থাকা ২ হাজার ৮৮৪ জন কারাবন্দির মধ্যে গত ২ মে প্রথম ১৭০ জন ও ৩ মে দ্বিতীয় ধাপে ৩৮৫ জন কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ