Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঢামেকের বেডে প্রস্রাব করা, পরিষ্কার চাদরও ছিল না

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০২০, ১:৩৯ পিএম

গত কিছুদিন থেকে কোভিড-১৯ উপসর্গ থাকায় নমুনা টেস্ট করেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চলে যাই। সেখানে ভর্তির পরে আমাকে ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। গিয়ে দেখি কোনো বেড ফাঁকা নেই। নার্সকে বিষয়টি জানানো পরে তিনি বললেন কিছুক্ষণ পর বেড ফাঁকা হবে। একটু পরে দেখি বেড ফাঁকা হয়। দুই বেডের রোগী মারা গেলে সেখানে আমাকে থাকতে বলা হয়। সেখানে গিয়ে দেখি আমাকে যে বেডে থাকতে বলা হয় সেখানে প্রস্রাব করা। দুইজন বয়ষ্ক মানুষ সেই বেডে ছিলেন। নার্স জানালেন আজকের মধ্যে কোনো চাদর দেওয়া হবে না।
কথাগুলো দৈনিক পত্রিকার একজন সাংবাদিকের। নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের আশঙ্কায় উপসর্গ দেখে তিনি নমুনা পরীক্ষা করাতে দেন। এর আগে এই পত্রিকার আরও একাধিক সাংবাদিকের কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের আশঙ্কায় নমুনা পরীক্ষার পরে বাসায় না থেকে উপসর্গ থাকায় ও অসুস্থ হওয়ার এই সাংবাদিক সকালেই চলে যান সরাসরি ঢামেকে। সেখানে ভর্তির কাজ শেষ হতে হতে প্রায় বিকেল সাড়ে তিনটা বাজে। ভর্তি শেষে তাকে চিকিৎসকের কাছে যেতে বলা হয়। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ওয়ার্ডে যেতে বলা হয়।
তিনি বলেন, আমি ওয়ার্ডে এসে দেখি সব সিটেই রোগী আছে। তাই নার্সকে জিজ্ঞেস করি কোথায় থাকব। তখন তিনি আমাকে একটি ওয়ার্ড দেখিয়ে দেন। আমি সেখানে দেখি কোনো বেড ফাঁকা নেই। নার্সকে জিজ্ঞেস করার পরেই তিনি বলেন, একটু অপেক্ষা করেন, বেড ফাঁকা হবে। আমি তাই অপেক্ষা করতে থাকি। এর একটু পরেই দুইজন রোগী মারা গেলে সেখানে বেড ফাঁকা হয়। নার্স তখন আমাকে বললেন সেই বেডে গিয়ে ওঠার জন্য। সেখানে গিয়ে দেখি আমাকে যে বেডে থাকতে বলা হয় সেখানে প্র¯্রাব করা। দুইজন বয়ষ্ক মানুষ সেই বেডে ছিলেন। অন্য বেডের অবস্থাও প্রায় একইরকম।

তিনি বলেন, আমি চাদর পাল্টানোর কথা বললে নার্সরা আমাকে জানান আজকে আর কিছু করার নেই। চাদর না আসা পর্যন্ত আর দেওয়া যাবে না। এভাবেই আজকে থাকতে হবে। লাশগুলো নিয়ে যাওয়ার পরে কোনো জীবাণূনাশক ছিটাতেও দেখিনি আমি। আর সেখানেই থাকতে বলা হচ্ছিল আমাকে। তাই আমি সেখান থেকে চলে আসি।
তিনি আরও বলেন, আমি এখন বাসায় আছি। হাসপাতালে যে অবস্থা দেখেছি তাতে অবশ্য সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেশি মনে হচ্ছিল। আপাতত তাই বাসাতেই নিজেকে আইসোলেশনে রাখছি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আমার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু যেহেতু হাসপাতালে গিয়েছিলাম তাই এখন আরও ১৪ দিন কোয়ারেনটাইনে থাকতে হবে।
গণমাধ্যম কর্মীর এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম কে এম নাছির উদ্দীন বলেন, এ বিষয়টি আমি জেনেছি। এ ব্যাপারে আমরা তদন্ত করছি। এরপরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে উনি বাসায় চলে যাওয়ার কোনো কারণ দেখি না। ওনার যদি কোনো সমস্যা থাকে তবে সেটা তো সমাধান করা যেত। চাদর না পেলে সেখানে লোক আছে তাদের সঙ্গে কথা বলেও অ্যারেঞ্জ করা যেত।
উল্লেখ্য, এর আগে ৭ মে জ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ করোনাভাইরাস উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয় দৈনিক ভোরের কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার আসলাম রহমানের। সেদিন মৃত্যুর পরেও তার লাশ হাসপাতালে অবহেলায় ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢামেক

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১১ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ