Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কলকাতায় শঙ্কা নিয়েই চালু গণপরিবহণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০২০, ৩:০৪ পিএম

রেড জোন হলেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় চলছে সরকারি বাস। সেখানে নিয়ন্ত্রিতভাবে গণপরিবহণ চালুর দাবি মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। এর ফলে করোনা সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ভারত জুড়ে লকডাউনের কারণে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহণ। গোটা দেশকে জুড়ে রাখা রেল পরিষেবা বন্ধ। পশ্চিমবঙ্গেও চলছে না ট্রেন। হাতে গোনা বাস দেখা যাচ্ছে পথে। এই সপ্তাহ থেকে সীমিত সংখ্যায় দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ট্রেন পরিষেবা যেমন শুরু হয়েছে, তেমন কলকাতায় শুরু হয়েছে বাস চলাচল। যদিও পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী রেড জোনের মধ্যে রয়েছে। তবু বেশ কিছুদিন ধরেই দাবি উঠছিল, এবার কম সংখ্যায় হলেও সরকারি পরিবহণ চালু হোক। লকডাউনে অনেকের রুটি-রুজিতে টান পড়েছে। বহু মানুষ প্রয়োজন থাকলেও গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেন না। সেই দাবি মেনে ১৩টি রুটে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে সবটাই সরকারি বাস।

প্রতিটি বাসে ২০ জনের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না বলে স্থির করেছে প্রশাসন। কন্ডাক্টর ও চালক গ্লাভস, মাস্ক পরছেন। তাদের স্যানিটাইজ করা হচ্ছে সফর শুরু হওয়ার আগে। রাস্তায় এখন বেশি মানুষ নেই। যাদের না বেরোলেই নয়, তারাই শুধু বাইরে বেরোচ্ছেন। তাই বাসে বেশি ভিড় হচ্ছে না। যদিও বুধবার কলকাতা শহরে এমন দৃশ্যও দেখা গিয়েছে, একটি বাসে বেশ ভিড়। সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি। বাসের ভিতর পাশাপাশি বসে ও দাঁড়িয়ে আছেন যাত্রীরা। এই ছবি চিন্তায় ফেলেছে প্রশাসনকে। চালক ও কন্ডাক্টরদের বক্তব্য, যাত্রীরা জোর করে উঠে পড়েছেন বাসে। অথচ বাসের গায়েই পোস্টার লাগানো আছে, ২০ জনের বেশি ওঠা যাবে না।

এই ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, চালক-কন্ডাক্টরদের কথা না শুনে ২০ জনের বেশি বেশি কেউ জোর করে বাসে উঠলে কী করা হবে, তা পরিবহণ দপ্তর ঠিক করবে। মানুষের কাছে আবেদন, আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। আগে আমরা করোনা থেকে বাঁচি। জীবনের চেয়ে বড় কিছু নয়।

আগামী সপ্তাহ থেকে বেসরকারি বাস কলকাতার পথে নামবে। সাত হাজার বেসরকারি বাস চলে কলকাতায়। রাজ্যে এই সংখ্যা ৪৫ হাজার। বুধবার পাঁচটি বাস সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সর্বাধিক ২০ জন যাত্রী তোলার নির্দেশ থাকায় চালু ভাড়ায় বাস চালিয়ে আর্থিক ক্ষতি হবে মালিকদের। তাই তাদের উপর ভাড়া নির্ধারণের ভার ছেড়ে দিয়েছেন মন্ত্রী। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট-এর সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, কম যাত্রী নিয়ে বাস চালানো দরকার। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে বাস চালালে আমাদের আর্থিক ক্ষতি হবে। সরকার ভাড়া ঠিক করার দায়িত্ব দিয়েছেন আমাদের উপর। আমরা আলোচনা করে ঠিক করব। খুব বেশি ভাড়া করলেই হবে না। আবার বাস মালিকদের আর্থিক দিকটাও দেখতে হবে। তপন জানান, তারা একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখে আবেদন করেছেন, বাস কেনার ঋণ বাবদ প্রতি মাসে মালিকদের যে টাকা শোধ করতে হয়, তা আগামী ছয় মাসের জন্য মওকুফ করা হোক। সেক্ষেত্রে খুব বেশি ভাড়া না নিয়ে বাস চালানো সম্ভব হবে। বাসের মতোই কলকাতা, হাওড়া, ব্যারাকপুর এলাকায় অ্যাপ ক্যাব চালানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। মূলত চিকিৎসার প্রয়োজনে শর্তসাপেক্ষে ক্যাব নেয়া যাবে।

বাস ও ক্যাব চালু হওয়ায় অনেকে স্বস্তি পেয়েছেন। ডায়ালাইসিস বা কেমোথেরাপির জন্য যাদের নিয়মিত হাসপাতাল যেতে হয়, তাদের পক্ষে এই পরিষেবা বড় আশীর্বাদ। ডায়ালিসিসে থাকা ভবানীপুরের বৃদ্ধা মিনতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অনেক বেশি টাকায় গাড়ি ভাড়া করে হাসপাতালে যেতে হচ্ছিল। বাস ও ক্যাব আরও আগে চালু করা দরকার ছিল। একটি বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী চিরঞ্জীব ঘোষ বলেন, ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করতে হচ্ছে করোনার জন্য। বাড়ি থেকে অনেকটা পথ হেঁটে হাসপাতালের বাস ধরতে হচ্ছে। সরকারি বাস চালু হলে আগের মতো ডিউটি করতে পারব। সূত্র: ডয়চে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ