Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রস্তুত ১২ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঘূর্ণিঝড় আমফান উপক‚লের দিকে ধেয়ে আসার কারণে ৫১ লাখ ৯০ হাজার মানুষের জন্য ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। গতকাল সোমবার ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি বিষয়ে অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে প্রায় ৫১ লাখ ৯০ হাজার ১৪৪ জনকে আশ্রয় দেয়ার মতো আমাদের সক্ষমতা রয়েছে। এখন করোনা সংক্রমণের সময়, তাই প্রত্যেকটি আশ্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বলা হয়েছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্র্রে আসবেন তাদের মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সিপিপি (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) ভলান্টিয়ারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তারা যেন আজ সকাল থেকে সকলকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে। এ কাজকে ত্বরান্বিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কাজ করবে। ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত দুই হাজার ৫৬০ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন। প্রাণহানি যাতে না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ঝুঁঁকিতে আছেন মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগেই তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হবে। অন্য যে কোনো দুর্যোগের থেকে এবার সব থেকে বেশি সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কেন্দ্রে যারা আশ্রয় নেবেন তাদের জন্য তিন হাজার ১০০ টন চাল, ৫০ লাখ নগদ টাকা, শিশু খাদ্য কিনতে ৩১ লাখ টাকা, গোখাদ্য কিনতে ২৮ লাখ টাকা এবং চার হাজার ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, সিভিল সার্জনদের নেতেৃত্বে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধসহ ওইসব টিম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ গেলে বিকল্প ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বরিশাল ব্যুরো জানায়, ঘুর্ণিঝড় আমফানের হাত থেকে উপকূলের জানমাল রক্ষায় ইতোমধ্যে সরকারিভাবে প্রাক-প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী (সিপিপি)’র ৭টি আঞ্চলিক কেন্দ্রের আওতায় টেকনাফ থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন দুবলারচর পর্যন্ত উপক‚লীয় এলাকায় প্রায় ৫৬ হাজার সেচ্ছাসেবক আমফানের উদ্ধার তৎপরতা ও দুর্যোগ পরবর্তী যেকোন পরিস্থিতির জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। সিপিপি’র সদর দফতর থেকে বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জোনাল হেডকোয়াটার-এর মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিটের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। যেকোন পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অন্তত ১৫ লাখ নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ অপেক্ষাকৃত দূর্বল শ্রেণীর মানুষকে সাড়ে ৪ হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সিপিপি’র সেচ্ছাসেবকদের।

খুলনা থেকে আবু হেনা মুক্তি জানান, ঘুর্ণিঝড় আমফান মোকাবেলায় গোটা খুলনায় ৩৪৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খুলে দেয়া হয়েছে এ অঞ্চলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রায় আড়াই লাখ উপক‚লবাসীকে আশ্রয় দিতে এ ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

অপরদিকে, খুলনাঞ্চলের উপক‚লীয় এলাকার ভেড়ি বাঁধগুলো এখন চরম নাজুক অবস্থায়। ঘুর্ণিঝড় ‘আমফান’ এর প্রভাবে বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে ভীত ৫ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠি। আর সেই সাথে জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে দুর্বল ভেড়ি বাঁধগুলো বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও ভাঙার অপেক্ষায়।

খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলা উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
ঘুর্ণিঝড় ‘আমফান’ এ আতঙ্কিত উপক‚লবাসী জানান, স্বেচ্ছাশ্রমে ভেড়িবাঁধ মেরামতের পাশাপাশি পাউবো যে কর্মকান্ড চালাচ্ছে তাতে চলতি মৌসুমে কমপক্ষে পৃথক পৃথক প্রায় ৪০-৫০ কি:মি: ভেড়িবাঁধ অরক্ষিত আছে। ফলে করোনার চেয়ে উপক‚লবাসী বেশি আতঙ্কিত ঘুর্ণিঝড় ‘আমফান’ নিয়ে।

অন্যদিকে উপকূলীয় এলাকার কপোতাক্ষ, খেলাপুটিয়া, পশুর, মংলা, শিবসা, ভদ্রাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর জোয়ারের লবণাক্ত পানি উপচে পড়ে শতাধিক পয়েন্ট থেকে বিভিন্ন গ্রামে ঢুকছে। ফলে লবণাক্ততায় ঘর বাড়ি ফসলি জমি ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থাপনা নষ্ট হচ্ছে। ঘুর্ণিঝড় আমফানে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে নদীর তীরবর্তী মানুষগুলোর শঙ্কা কাটছে না।

খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাট এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, বিভিন্ন সময় বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে কোনমতে রক্ষা করে আসছে এই বাঁধগুলি। কিন্তু বর্তমানে এই বাঁধগুলির অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ