Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

বনগাঁর পার্কিং সিন্ডিকেটের দাপটে বেনাপোলে আমদানি-রফতানি কার্যত বন্ধ, রেল কার্গোর জন্য জরুরি চিঠি

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২০, ৭:১৫ পিএম

ভারতের বনগাঁয় পার্কিং সিন্ডিকেটের দাপটে টানা দুইমাস যাবত দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি-রফতানি কার্যত বন্ধ রয়েছে। যদিও বেনাপোল কাস্টমস হাউস ও বন্দর সার্বক্ষণিক চালু রয়েছে। ওপারের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মূলত বনগাঁর নেতাদের চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব এই অচলাবস্থার কারণ।

বেনাপোল কাষ্টমস কমিশনার বেলাল চৌধুরী এই তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ক্ষতি পোষাতে আমরা অবাধে সাইডডোর ও এফসিএলসহ সব ধরণের রেলকার্গো বেনাপোল দিয়ে আমদানি ও খালাসের অনুমতি চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে জরুরি চিঠি দিয়েছি। এর আগে কাস্টমস, স্থলবন্দর ও ব্যবসাবান্ধব রেলকার্গো চালুর জন্যে ত্রিপক্ষীয় সুপারিশও পেশ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ভারতীয় পণ্য, কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতি চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। আমদানিকারকরা চীন ও ইউরোপের পরিবর্তে ভারত থেকে পণ্য ও কাঁচামাল আনতেই বেশি আগ্রহী ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন। কিন্তু ওপারের সিন্ডিকেটের দাপট, হয়রানি ও বিলম্বের কারণে তারা বেনাপোল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সে কারণে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রকৃতি ভারতীয় পণ্যের চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে বেনাপোলে রেলকার্গো চালু অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

সূত্র জানায়, ট্রাকে পণ্য বেনাপোল আনতে যেখানে ৫থেকে ৭দিন লাগে সেখানে রেল কার্গো পৌঁছাতে লাগবে মাত্র ৩ঘন্টা। বাকী কয়েক ঘন্টায় শুল্কায়ন ও খালাস কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। বুধবার চালবীজের ৭৭৫মে.টনের চালান ২ঘন্টায় শুল্কায়ন করা হয়।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, সরকারিভাবে বা কাস্টমসের পক্ষ থেকে আমদানি রপ্তানি বন্ধ করা হয়নি। ট্রাক ড্রাইভারদের মাধ্যমে করোনা ছড়াতে পারে, এমন অজুহাতে তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ উত্তরের সাবেক এমএলএ গোপাল শেঠ ও পৌর মেয়র শংকর আঢ্য ডাকু গুজব ছড়িয়ে জনগণকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে আন্দোলন করে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। অবশ্য বনগাঁ পার্কিং সিন্ডিকেটের দাপটও রয়েছে।

কাস্টম, বন্দর ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত দু’মাস বেনাপোলে ভারত থেকে ট্রাক ঢুকছে না। গত ৩০ এপ্রিল দিল্লির নির্দেশে বাণিজ্য চালু হয়েও আবার বন্ধ হয়ে গেছে। বনগাঁর নেতাদের চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব অচলাবস্থার মূল কারণ বলে জানা গেছে।

পার্কিং সিন্ডিকেটের তৈরি অচলাবস্থায় সীমান্তে আটকা পড়েছে হাজার হাজার ট্রাক। ওপারের কালীতলাসহ সকল পার্কিংয়ে অপেক্ষমান পণ্যের মধ্যে আরো রয়েছে অক্সিজেন, ওষুধের কাঁচামাল, পাট, ধান, ভুট্টাবীজ, শিশুখাদ্য, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মসলা, ফলমুল, শিল্পের কাঁচামাল। ভারত বাংলাদেশের প্রধান স্থলবাণিজ্য বন্দর বনগাঁর নেতাদের ইচ্ছা অনিচ্ছার হাতিয়ার হয়ে পড়েছে ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ