Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তুরস্কে ঢেলে সাজানো হচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী

প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এটি এখনই করা না হলে ভবিষ্যতে তা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে : এরদোগান
ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, সর্বোচ্চ সামরিক কাউন্সিলের যে মিটিং আগস্টের ১ তারিখ হওয়ার কথা ছিল তা সামরিক বাহিনী পুনর্গঠনের জন্য চলতি সপ্তাহে এগিয়ে আনা হতে পারে। আর এটি এখনই করা না হলে তা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এই কাউন্সিলের সভাপতি, তার সাথে আছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও চিফ অব স্টাফ। এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে তারা একসাথে কাজ করছেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নতুন একটি কাঠামো তৈরি হবে। এই নতুন কাঠামোর মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী নতুন করে উদ্দীপ্ত হবে। এরদোগান বলেন, এসব কিছু অনুমোদিত হলে বাহিনীর জন্য তা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা কখনো থামবে না। পরিকল্পনা অনুযায়ী এই সংস্কার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবো। গত বুধবার দেশটিতে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এরদোগান।
রাজধানী আঙ্কারায় এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দেশের জনগণ ও বহির্বিশ্বকে নিশ্চিত করে বলতে চাই, তুরস্ক সরকার গণতন্ত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে না এবং অতীত শাসকদের মতো কঠোর দমন নীতিও গ্রহণ করছে না। সরকারের সুপ্রিম মিলিটারি কাউন্সিল সশস্ত্র বাহিনী নতুন করে ঢেলে সাজাবে এবং বাহিনীতে নতুন লোক নিয়োগ করবে বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমের নেতৃত্বে গড়া সুপ্রিম মিলিটারি কাউন্সিলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং সেনা প্রধানও রয়েছেন। এরদোগান বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সবাই একসঙ্গে কাজ করছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন চেহারার সেনাবাহিনীর আত্মপ্রকাশ ঘটবে। পুনর্বিন্যাসের সঙ্গে সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীতে নতুন সদস্যদের আগমন ঘটবে বলেও আমার বিশ্বাস। নিজেদের গোয়েন্দা বাহিনীর দুর্বলতার কথা স্বীকার করে এরদোগান আরও বলেন, এটি পরিষ্কার যে, আমাদের গোয়েন্দা তথ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ফাঁক এবং ঘাটতি রয়েছে। এটি লুকানোর চেষ্টা করা বা অস্বীকার করার কোনও কারণ নেই। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী তুরস্কের ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেন তাকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছেন বলেও অভিযোগ করেন এরদোগান। ১৫ জুলাই রাতে তুরস্কের সেনাবাহিনীর একটি অংশের এরদোগানকে উৎখাতের প্রচেষ্টা পরদিন ভোরেই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তারপর ৬০ হাজারের বেশি সেনা, পুলিশ, বিচারক, সরকারি কর্মী ও শিক্ষককে বরখাস্ত করে এরদোয়ান সরকার। দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও মানবাধিকার নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলেও প্রয়োজনে সময় বাড়াতে কোনও অসুবিধা নেই বলে জানান এরদোগান। যদিও এরই মধ্যে এরদোগান সরকারের ধরপাকড় নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। জরুরি অবস্থার মধ্যে সরকার চাইলে অভ্যুত্থান সমর্থকদের বিরুদ্ধে দ্রুত যে কোনও ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়া, এ সময় প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভা চাইলে সংসদকে অগ্রাহ্য করে নতুন আইন প্রবর্তন করতে এবং যে কোনও প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির অধিকার ও স্বাধীনতা সীমিত বা হরণ করতে পারবে। অভ্যুত্থান এবং পরবর্তী প্রতিরোধ ব্যবস্থায় এরইমধ্যে প্রায় আড়াইশ’ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, আহত হয়েছে দুই হাজারের বেশি। জার্মান সরকার তুরস্ককে দ্রুত জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তুরস্কের ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনীতিক এরদোগান। এখন পর্যন্ত ১০টিরও বেশি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন তিনি। তৃণমূল থেকে রাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। কিন্তু সাম্প্রতিক এ অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্র তার সংবিধান পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না- এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি এই নেতা। কিছু দিন ধরেই দেশটিতে সংবিধান পরিবর্তন করে পুরোপুরি প্রেসিডেন্সিয়াল সরকারব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে এরদোগান বলেন, সীমিত আকারে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে বিরোধী দলগুলোর সাথে ঐকমত্য হওয়ার সুযোগ রয়েছে। রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্কে ঢেলে সাজানো হচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ