Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লিবিয়াতে সংঘাত এড়াতে রাশিয়া-তুরস্ক সমঝোতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০২০, ৩:৪৪ পিএম

রাশিয়া এবং তুরস্ক সরাসরি সংঘাত এড়াতে এবং তার পরিবর্তে লিবিয়াতে যার যার ‘প্রভাবের ক্ষেত্র’ রক্ষা করতে সম্মত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। লিবিয়ার দীর্ঘকাল ধরে চলমান সংঘাতে জাতিসংঘ সমর্থিত ত্রিপোলির জোট সরকারকে সমর্থন ও সহায়তা দিচ্ছে তুরস্ক। অন্যদিকে, বিদ্রোহী খলিফা হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া।

বেশ কয়েকটি পশ্চিমা শক্তির সমর্থনে ২০১১ সালের অভ্যুত্থানে দীর্ঘকালীন স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফী নিহত হওয়ার পর থেকে তেল সমৃদ্ধ উত্তর আফ্রিকান এই দেশটি গত প্রায় এক দশক ধরে সহিংসতার শিকার হয়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে, পূর্ব লিবিয়া ভিত্তিক শক্তিশালী খলিফা হাফতার জাতিসংঘ-অনুমোদিত স্বীকৃত জাতীয় সরকার (জিএনএ) এর কাছ থেকে রাজধানী ত্রিপোলির দখল নিতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্যান্য কিছু দেশের সমর্থন থাকায় তিনি রাজধানীর প্রান্তে চলে এসেছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে জিএনএ সরকারের সেনাবাহিনী তুরস্কের ড্রোন এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্য পাওয়ায় যুদ্ধক্ষেত্রে হাফতারের জন্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এপ্রিল মাসে তারা হাফতারের কাছ থেকে পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো ও ত্রিপোলির দক্ষিণ-পশ্চিমে কৌশলগত আল-ওয়াটিয়া বিমানবন্দর উদ্ধার করে।

সাম্প্রতিক দিনগুলিতে, ছায়া আধাসামরিক সংস্থা ওয়াগনার গ্রুপের কয়েকশো রাশিয়ান ভাড়াটে সৈন্যকে রাজধানীর দক্ষিণের যুদ্ধ অঞ্চল থেকে সরে যেতে দেখা যায়। সংগঠনটি রাশিযার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ হিসাবে মনে করা হয়।

মঙ্গলবার মার্কিন আফ্রিকা কমান্ড রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে যে, তারা ‘লিবিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করার চেষ্টা করছে’ এবং ভাড়াটেদের সহায়তার জন্য যুদ্ধবিমান প্রেরণ করছে। বুধবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যান-ইয়ভেস লে ড্রিয়ান ‘লিবিয়ার সিরিয়ানাইজেশন’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সোমবার জিএনএ বাহিনী বিমান হামলা স্থগিত করেছে এবং তাদের প্রতিপক্ষকে ত্রিপোলি অঞ্চল থেকে সরে আসতে ৭২ ঘন্টা সময় দিয়েছে। রাজধানীর দক্ষিণ-পূর্ব বনি ওয়ালিদে কয়েকশ’ ওয়াগনার যোদ্ধাকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এরপরে রাশিয়ার সামরিক বিমান তাদেরকে ত্রিপোলি থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণে কেন্দ্রীয় আল-জুফরা বিমান ঘাঁটিতে নিয়ে যায়।

জার্মান ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সুরক্ষা বিষয়ক ইনস্টিটিউটের সিনিয়র সহযোগী ওল্ফ্রাম লাচার বলেন, ‘রুশ ভাড়াটেদের প্রত্যাহারের সময় তুর্কি ড্রোন হামলা স্থগিত করা হয়। এতে রাশিয়ান-তুর্কি সমঝোতার বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জুফরায় মোতায়েন করা রাশিয়ান জঙ্গি বিমানগুলি এখন জিএনএ বাহিনী যাতে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ত্রিপোলিটানা অঞ্চল ছাড়িয়ে এগিয়ে আসতে না পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিতে কাজ করছে।’ তিনি জানান, ‘এর ফলে প্রতিয়মান হয় যে, তুরস্ক এবং রাশিয়া লিবিয়ায় প্রভাবের ক্ষেত্রগুলো ভাগ করে নেয়ার চেষ্টা করছে।’

লিবিয়ায় রাশিয়ার উপস্থিতির বিষয়ে মস্কো অস্বীকৃতি জানালেও ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডের গবেষক সামুয়েল রামানি বলেন, রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদে এমন অবস্থানের ফলে সম্পর্কে কি দাঁড়াবে তা পরিষ্কার নয়। সম্প্রতি লিবিয়া থেকে ওয়াগনার গ্রুপকে সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া। এর পরিবর্তে সেখানে মোতায়েন করেছে যুদ্ধবিমান। তুরস্কের অগ্রাভিযানের চেয়ে এটা বড় কিছু হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে মস্কো কিন্তু কূটনৈতিক সমাধানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও লিবিয়ার হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের প্রধান আগুইলা সালেহ’র মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সূত্র: এএফপি।



 

Show all comments
  • Swarnendu Mondal ৩০ মে, ২০২০, ১১:১৩ এএম says : 1
    Thanks to Russia & thanks to turkey/turask
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লিবিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ