Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সামরিক শক্তিতে চীন থেকে বহু পিছিয়ে ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২০, ৭:২০ পিএম

সীমান্ত সংঘাত নিয়ে বর্তমানে ভারত ও চীনের সম্পর্ক তলানিতে। লাদাখ সীমান্তে দুই পক্ষই শক্তি বৃদ্ধি করছে। তবে চীনের সামরিক সক্ষমতার ধারে কাছেও নেই ভারত।

ভারতের ৫টি রাজ্য ও চীনের মধ্যে ২,৫২১ মাইল দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যা লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) নামে পরিচিত। সম্প্রতি এই রেখার কাছে ভারত ও চীনের সেনারা ছোটখাট সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পিপলস লিবারেশন আর্মির অবস্থান মজবুত করতে তিব্বত অঞ্চলে বিপুল অবকাঠামো গড়ে তুলছে চীন। বিশেষভাবে পার্বত্য এলাকায় চলাচলের উপযোগী করে ডিজাইন করা টাইপ-১৫ লাইট ট্যাঙ্কও মোতায়েন করা হয়েছে ওই এলাকায়।

১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীনের কাছে ভারত মার খাওয়ার পর আর কখনোই দুই দেশের সম্পর্ক পুরোপুরি আগের আবস্থায় ফিরে যায়নি। সেই যুদ্ধে চীনা সেনারা ভারতের ভূখণ্ডও দখল করে নেয়। একবিংশ শতকে ভারতের চেয়ে চীনের সামরিক শক্তি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ভারতের যেখানে ৬০০ জঙ্গিবিমান, সেখানে চীনের আছে ১ হাজার ৭০০; ভারতের হাতে মান্ধাতা আমলের ১৫টি সাবমেরিন থাকলেও চীনের আছে ৭৬টি। আর ভারতের ট্যাংকের সংখ্যা ৪ হাজার ৪২৬টি, রকেট আর্টিলারি সিস্টেম সংখ্যা ২৯২টি। বিপরীতে চীনের আছে ৭ হাজার ৭৫০ টি ট্যাংক, ও ১ হাজার ৭৭০টি রকেট আর্টিলারি। চীনের সামরিক বাজেটও ভারতের থেকে অনেক বেশি। ভারতের যেখানে ৫৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, চীনের সেখানে ২২৮ বিলিয়ন ডলার।

অনেক কারণেই চীনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারত পারছে না। ভারতের আর্থিক সামর্থ্য কম এবং প্রতিরক্ষা বাজেটও সামান্য। তাছাড়া ভারতের প্রতিরক্ষা সংগ্রহ প্রক্রিয়া দুর্নীতিগ্রস্ত ও রাজনৈতিক বিবেচনাপ্রসূত। সে কারণেই রাফালের মতো জঙ্গিবিমান কিনতে এক দশকের বেশি সময় লেগে গেছে। ভারত চায় তার ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে বিদেশী অস্ত্র নির্মাতারা বিনিয়োগ করুক। কিন্তু এর জন্য জটিল আলোচনা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ফলে যেকোন প্রকল্প হয়ে পড়ে ব্যয়বহুল এবং মানেরও অবনতি ঘটে। তাছাড়া ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেটের বেশিরভাগ খরচ হয়ে যায় দেশটির দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের মতো জনবহুল ডিভিশনগুলোর জন্য। ফলে তারা নৌ ও বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নের পেছনেও খরচ করতে পারছে না। শিগগিরই এসব সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই চীনের সঙ্গে ভারতের পাল্লা দিতে চাওয়া অযৌক্তিক।

হিমালয় অঞ্চলে ভারত তার শক্তি ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। কিন্তু এই শক্তি বিচ্ছিন্নভাবে মোতায়েন করা এবং সঙ্কটকালে সেনা সদর দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করার মতো কোন ব্যবস্থাও নেই। সম্প্রতি ভারত চীনের ভূখণ্ডে পাল্টা হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে হিমালয়ান প্রতিরক্ষার উপর চাপ কমানোর কৌশল নিয়েছে। এ জন্য যুদ্ধ বাঁধলে ভারতের আগে থেকে মোতায়েন করে রাখা যান্ত্রিক ইউনিটগুলো তিব্বতে হামলা চালাতে পারে। যদিও পার্বত্য এলাকায় পদাতিক বাহিনীকে সহায়তার জন্য সাঁজোয়া বহর কার্যকর কিন্তু হামলা চালানোর জন্য এগুলো উপযুক্ত নয়। কারণ চীনের নিঁখুত পাল্টা হামলার মুখে পার্বত্য পথে আটকা পড়ে ভারতে যান্ত্রিক বহর। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় চীন সড়ক অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। সেই তুলনায় ভারত অত্যন্ত ধীর।

সরকারিভাবে ভারতের ৪২ স্কোয়াড্রন জঙ্গিবিমান থাকার কাথা থাকলেও অবসর ও পুরনো হয়ে যাওয়া এবং নতুন বিমান সংগ্রহে ধীর গতির কারণে চলতি দশকেই দেশটির বিমান শক্তি ২৬ স্কোয়ড্রনে নেমে আসবে। তহবিল যোগান ও সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় গতি না আসলে আইএএফকে কম স্কোয়াড্রন নিয়ে চলার বাস্তবতাই মেনে নিতে হবে।

ভারতের কোন ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার এজেন্সি নেই। অন্যদিকে কয়েক বছর আগেই চীন তার নিজস্ব স্ট্রাটেজিক সাপোর্ট ফোর্স গঠন করেছে। ভারত তাই চীনকে মোকাবেলা করতে পারবে বলে ওয়াশিংটনের প্রত্যাশা অবাস্তব মাত্র। চীনের সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে ভারতকে অনেক দূর যেতে হবে। সূত্র: এসএএম।



 

Show all comments
  • Ab kayum ৩১ মে, ২০২০, ৮:০১ পিএম says : 0
    তাইতো এ পযর্ন্ত কখনো শুনিনি যে চীন সীমান্তে বিএসএফ একটি চিনা নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছ। তো দেখা যাচ্ছে য শুধু বাংলাদেশ সীমান্তে তারা বাঘ আর চীনা সীমান্তে হয় বিড়াল।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৩১ মে, ২০২০, ৮:২৬ পিএম says : 0
    খালি বড় দেশ ভারত। ভারত যে হায়দরাবাদ দখল করিলো সেই হায়দরাবাদ যদি ভারতের সাথে যুদ্ধ করিতো তবে যুদ্ধে ভারত হায়দরাবাদের সাথে ১৫ দিন টিকিতে পারিতো না। প্রধান সেনাপতি আলইদ্রুস আত্বসমরপণ করিয়াছিলো তাই। সিকিমের, লেন্দুপ দরিজির কারণে সিকিম ভারতের অংগরাজ্য। এখন নিয়ম হইলে সিকিমকে স্বাধীন ঘোষণা করে ভারতকে পরিহার করা। আমার মনে হয় ভারত সিকিমের সাথে যুদ্ধে টিকিতে পারিবে না। ভারত বাংলাদেশের মানুষ হত্যা করে, বাঁঁধ দিয়ে পানি আটকায় ইহা করিতে পারিতো না। .....
    Total Reply(0) Reply
  • জোহেব শাহরিয়ার ৩১ মে, ২০২০, ৮:২৯ পিএম says : 0
    ভারত আর চীন যুদ্ধ হলে বাংলাদেশি যুবকদের সামনে অনেক বড় একটা সুযোগ আসবে ভারতের উপর প্রতিশোধ গ্রহণের। যুদ্ধ লেগে গেলে তারা তখন দলে দলে চীনের পথে হাটা দিবে। চীন সরকারের এ যুবকদের বেতন দিতে হবে না। তাদের শুধু সামরিক প্রশিক্ষণ ও খাবারটা দিলেই হবে। তাদের আলাদা একটা ডিভিশন করে দিলেই হবে। তারা ফ্রিতে চীনের হয়ে লড়াই করবে। তাদের উদ্দেশ্য একটাই, তাদের উপর বছরের পর বছর হওয়া অত্যাচারের প্রতিশোধ গ্রহণ।
    Total Reply(0) Reply
  • জামশেদ পাটোয়ারী ৩১ মে, ২০২০, ৮:৫৯ পিএম says : 0
    বিশ্বে ভারত আর আমেরিকা যার বন্ধু তার শত্রুর দরকার নাই। নেপাল শেষ পর্যন্ত তা বুঝতে পেরেছে। বিশ্বের কোন পরাশক্তিকেই পরম বন্ধু হিসাবে নেয়া ঠিক নয়। সুযোগ বুঝে সুবিধা আদায় করে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। পরাশক্তিগুলো এক দেশের সাথে অন্য যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়ে তারা নিজেরা ফায়দা লুটে। বিশ্বের বেশীরভাগ পরাশক্তিগুলোর প্রধান ইনকাম সোর্স মারণাস্ত্র। যেভাবেই হোক যুদ্ধ লাগিয়ে রাখতে পারলেই তাদের লাভ। ভারত যদিও চায় পরাশক্তি হতে, কিন্তু তারা এখনো পরাশক্তি হয়ে উঠতে পারেনি। কারণ ভারতের শক্তি বিশ্বের অন্যান্য পরাশক্তির ধারে কাছেও নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Ck roy ৩১ মে, ২০২০, ৯:৪৫ পিএম says : 0
    হা হা হা, যার জন্মা তাকেই বলে অকর্মা। বাংলায় এরকমই একটা প্রবাদ আছে। কথাটা সেই সমস্ত লোকেদের বেলায় খাটে, যারা ভারতের বিরূদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ভাবে। কিছু মানূষের অতিত সন্মদ্ধে জ্ঞ‍্যান না থাকার কারনে উল্টাপাল্টা বকাবকি করে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত-চীন

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ