Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আম্পানে দক্ষিণ উপকূলে ৬শ’ কোটি টাকার ক্ষতি

ফসল ও বাঁধের সর্বনাশ

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস ও জোয়ারে দক্ষিণাঞ্চলসহ উপক‚লীয় এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ছাড়াও বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠছে। দক্ষিণাঞ্চলের মাঠে থাকা বোরো ও আউশসহ বিভিন্ন ধরনের রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি অনেক কৃষককেই সর্বশান্ত করে দিয়েছে। আম্পানের সময় দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ১ লাখ হেক্টর জমির উঠতি বোরো ধানে মাঠে ছিল। এছাড়া রোপা ও বোনা আউশসহ-এর বীজতলারও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সাথে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজিসহ রবি ফসলের ক্ষতিও ছিল ব্যাপক। বরিশাল ও ফরিদপুর কৃষি অঞ্চলের ১১টি জেলায় ফসলের ক্ষতির পরিমান প্রায় ১শ’ কোটি টাকারও বেশি বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। তবে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি খুবই সীমিত।

অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি উপক‚লীয় জেলার প্রায় সাড়ে ৪শ’ স্থানে প্রায় ১শ’ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষা বাঁধসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমান অন্তত ৫শ’ কোটি টাকা বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।

তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিপূর্ণ মূল্যায়ন ও পুনর্বাসনে অর্থের চাহিদা নিরুপনে কাজ চলছে। জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়া বাঁধগুলো অবিলম্বে পুনর্বাসন করতে না পারলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে ফসলহানিসহ জীববৈচিত্র মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবীদগন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্পূর্ণ উন্মুক্ত বাঁধগুলো জরুরি ভিত্তিতে মেরামতে নিবিড় কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছে। মাস দু’য়েকের মধ্যে উন্মুক্ত বাঁধগুলো পুনর্বাসন সম্ভব হবে বলে আশাবাদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তবে এর মধ্যেই বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় সে কাজ কতটুকু মানসম্মতভাবে সম্পন্ন হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পটুয়াখালীর বিভিন্ন নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের ১৯০টি স্থানে প্রায় ৩০ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভোলার প্রায় ৪৮টি পয়েন্ট প্রায় ১৩ কিলোমিটার বাঁধ আংশিক ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বরগুনার ১২৫টি পয়েন্ট ৩৩ কিলোমিটার, বরিশালে ৩০টি স্থানে প্রায় ৩ কিলোমিটার, পিরোজপুরের ১৪টি স্থানে প্রায় ১৫ কিলোমিটার এবং ঝালকাঠী জেলার ৪০টি পয়েন্ট প্রায় ৬ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপক‚লীয় এসব এলাকার বিপুল সংখ্যক পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপক‚লীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধ, রেগুলেটর ও ফ্লাশিং সুইসসহ বিভিন্ন পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামোর এ ক্ষয়ক্ষতি মেরামতে যে অর্থের প্রয়োজন তা অবিলম্বে সংস্থানের তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি নিবিড় কর্মসূচি নিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ উপক‚লীয় এলাকার বাঁধসহ সব পানি অবকাঠামো মেরামত ও পুনর্বাসনের তাগিদ দেয়া হয়েছে।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, এ লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দাখিল করা হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে স্বল্পতম সময়ে সবকিছু করতে মাঠ পর্যায়ে প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ