Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৫ টাকা বায়নার খেসারত দিচ্ছে শিশুটি

‘মা মরে গেছে কী করব বুঝতে পারছি না’

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

সাত বছরের শিশু ফাহিম কোন এক দরকারে মায়ের কাছে পাঁচ টাকার বায়না ধরেছিলো। হতদরিদ্র নিঃস্ব মা টাকা দিতে পারেননি উল্টো কড়া শাসনের মুখে পড়ে ফাহিম। বাবার কাছে টাকা চাইলেও একই অবস্থা হয় শিশুটির। এই ক্ষোভে মাকে আঘাত করে বসে শিশুটি। হাসুয়ার কোপে রক্তাক্ত মাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে মায়ের দেহে প্রাণ নেই।

আঘাতের পর হতবিহ্বল শিশুটি মা ফাতেমার রক্তাক্ত দেহ দেখে দৌড়ে আশ্রয় নেয় ফুফুর বাড়ি। গতকাল সোমবার সকালে রাজশাহীর দামকুড়া থানার বেড়পাড়া পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মায়ের নাম ফাতেমা-তুজ-জোহরা (২২)। ফাতেমার স্বামীর নাম রবিউল ইসলাম। তিনি একজন দিনমজুর।
দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, পাঁচটি টাকা চেয়ে না পেয়ে ক্ষুব্ধ শিশুটি মাকে হাসুয়া দিয়ে কোপ দিয়েছে। এরপর সে তার ফুফুর বাড়িতে চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাকে আনা হয়েছে। সে সব স্বীকার করছে। মা তাকে টাকা দেয়নি। বাবা মেরেছে। মাও মেরেছে, তাই রাগ করে সে মাকে হাসুয়া দিয়ে আঘাত করেছে। এতে মায়ের রক্ত বের হয়েছে। এটা সে জানে। এরপর যখন তাকে জানানো হলো যে তার হাসুয়ার আঘাতে তার মা মারা গেছে, তখন সে মায়ের জন্য কাঁদতে শুরু করে। শিশু ফাহিমকে আমরা কোলে নিয়ে আদর করেই ঘটনা জানতে চেয়েছি। সে সাবলীলভাবেই ঘটনার বর্ণনা দেয়। সে বলে, এখন মা মরে গেছে কি করবো বুঝতে পারছি না।

এই অবস্থায় কী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ঘটনা নিয়ে তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছেন। ৯ বছরের কম বয়সী কোনো শিশুর অপরাধকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার আইনি বিধান নেই। তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এবং বিচারকদের সঙ্গেও পরামর্শ করছেন। বিভিন্ন পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম মতামত দেয়া হচ্ছে। বেলা দেড়টায় ওসির সঙ্গে কথা হয়। তিনি কোনোই সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি বলে জানান।

শিশুটির মায়ের লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা আছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি।



 

Show all comments
  • Abdul Alim ৯ জুন, ২০২০, ১:২৯ এএম says : 0
    অবুঝ শিশু কাকে বলে একে দেখলে বুঝা যায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Alamin Bin Abdul Aziz ৯ জুন, ২০২০, ১:২৯ এএম says : 0
    কত মানুষ কত মন্তব্য করতেছে।আসলে প্রতিটা পিতা ,মাতার তাদের সন্তানদেন সাথে সদআচরন করা উচিৎ।যাথেকে সে উত্তম শিক্ষা গ্রহন করতে পারে
    Total Reply(0) Reply
  • Imam Hossain ৯ জুন, ২০২০, ১:৩০ এএম says : 0
    ছেলেটার জন্য কষ্ট হচ্ছে, এতিম হয়ে গেল। যদি বুজতে পারত মা চলে যাবে তাহলে এমনটি হয়ত করত না। সাত বছরের শিশু পাঁচ টাকা চেয়েছে কিছু খাওয়ার জন্য, হয়ত দুই টাকা দিলেও ছেলেটি খুশি হয়ে চলে যেত, দারিদ্র্যতার কারণে অসহায় মা বাবা সেটিও দিতে পারে নাই। অথচ আমাদের দেশের রাজনীতিবিধরা প্রায় বলে থাকেন এদেশে কোন গরিব নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Jahangir Alam ৯ জুন, ২০২০, ১:৩০ এএম says : 0
    কিশোর সংশোধন কারাগারে পাঠানো দর
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Alauddin ৯ জুন, ২০২০, ১:৩০ এএম says : 0
    এরা নিষ্পাপ, এদেরকে কেউ গালি দিবেন না।যখন বড় হবে অনুভব করবে।এই কারনে সে ভালো মানুষ হবে ইনশাআল্লাহ। ১ দিনের শাস্তি ও কাম্য নয়। এর মায়ের জন্যে দোওয়া কামনা করি।
    Total Reply(0) Reply
  • Imran Khan ৯ জুন, ২০২০, ১:৩০ এএম says : 0
    বাকি জীবনে যদি বেঁচে থাকে,, খুব কষ্ট আছে এই বাচ্চাটার কপালে,,কিছুদিন পরে হয়তো ওর বাবা আবার বিয়া করবে তার পরে আরো কষ্ট আছে
    Total Reply(0) Reply
  • Shahab Uddin Biswas ৯ জুন, ২০২০, ১:৩১ এএম says : 0
    মা তোকে কত হাজার হাজার টাকার সম্পদ খাওয়াইয়া তোরে এত বড় করেছে তা ভাবলে তুই একাজ করতে পারতি না।তবে ভাবতে হবে তোর বুক ভরা সাহস।
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Sazzad Hussain ৯ জুন, ২০২০, ১:৩১ এএম says : 0
    এখনো বুঝতে পারে নাই কি হারিয়েছে। মাছুম বাচ্চা,, যখন বুঝবে তখন হয়তো আফসোস ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিশু

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ