Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে দুটি করোনা ল্যাবে সাড়ে ৩ হাজার নমুনাজট

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০২০, ৯:২৪ এএম

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিপজ্জনক হয়ে উঠলেও নমুনা পরীক্ষায় গতি আসেনি। লোকবল এবং করোনা টেস্টের সরঞ্জাম সঙ্কট লেগেই আছে। এতে ল্যাবগুলোতে পরীক্ষার অপেক্ষায় নমুনার পাহাড় জমছে। দুটি ল্যাবে জমেছে সাড়ে তিন হাজার মানুষের নমুনা।
উপসর্গ নিয়ে নানা ঝক্কি ঝামেলা ঠেলে নমুনা জমা দিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে ফলাফলের জন্য।
করোনায় আক্রান্ত টেলিভিশনে কর্মরত চট্টগ্রামের এক সংবাদকর্মী ১৪ দিন পর দ্বিতীয় নমুনা জমা দেন গত ৩১ মে। উপসর্গ থাকায় সাথে স্ত্রীর নমুনাও জমাদেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সে নমুনার ফলাফল পাওয়া যায়নি। ১৪ দিন আগে নমুনা জমা দেয়া জাতীয় দৈনিকের আরেক সংবাদকর্মীর স্ত্রী ও পিতার নমুনার ফলাফলের খবর জানতে পারেননি তিনি। বারবার ল্যাব ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের পর ব্যর্থ দু’জনেই। সাধারণ মানুষের অবস্থা আরো নাজুক। ল্যাব সংশ্লিষ্টরা বলছেন সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নমুনা জমার হার বাড়ছে। তবে টেস্টের সুযোগ না বাড়ায় নমুনা জট লেগে গেছে। চট্টগ্রামের তিনটি ল্যাবে গড়ে ৫০০ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। জমা পড়ছে তার কয়েক গুণ বেশি নমুনা। আবার নগরীতে কয়েকটি নমুনা সংগ্রহ বুথ চালু করা হয়েছে। এ কারণে সংগ্রহ বাড়ছে। তবে টেস্ট চলছে আগের গতিতে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, বিআইটিআইডি এবং ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে নমুনার পাহাড় জমছে। নমুনার জটে নাকাল ল্যাব কর্তৃপক্ষ।
বিআইটিআইডি ও চমেক ল্যাবের তথ্য অনুসারে, দুই ল্যাবেই নমুনা জমা আছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার। তারমধ্যে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পড়ে আছে ২ হাজার ২৫০ জনের নমুনা। আর ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডিতে আছে আরও প্রায় সাড়ে ১২শ নমুনা। কিন্তু এ দুই ল্যাবে পরীক্ষার সক্ষমতা দুই শতাধিক থাকলেও গড়ে তিন’শর উপরে পরীক্ষা করতে হচ্ছে। এরমধ্যে বিআইটিআইডি থেকে প্রতিদিন প্রক্রিয়াজাত করে সিভাসুতে পরীক্ষা করা হয় আরও দেড় শতাধিক। সব মিলিয়ে ৫শ’র মতো নমুনা পরীক্ষা করা হলেও সংগ্রহ চারগুণ বেশি হওয়ায় জটে হিমশিম খাচ্ছে ল্যাবগুলো।
সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করেও পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
কয়েকদিন আগেও চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলা থেকে প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহ করা হতো ১২০ থেকে ১৩০ জনের। আর নগরীর জেনারেল হাসপাতাল, বিআইটিআইডি, চমেক হাসপাতালসহ সংশ্লিষ্ট স্থানে নমুনা সংগ্রহ হয় গড়ে ১৫০ জনের। এরবাইরে পাবর্ত্য চট্টগ্রামের দুই জেলা ও ফেনী অঞ্চলেরও কিছু নমুনা আসতো বিআইটিআইডি ও সিভাসুর ল্যাবে। সবমিলিয়ে তখন গড়ে ২৫০ জনের নমুনা জমা হতো দুই ল্যাবে। কিন্তু বর্তমান চিত্র তার উল্টো। যেখানে নগরীতে পূর্বে ১৫০ নমুনা সংগ্রহ করা হতো, বর্তমানে ৫শʼর অধিক নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরবাইরে ১৪ উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে আরও ৪ শতাধিক। চট্টগ্রাম ছাড়া প্রতিদিন তিন পার্বত্য জেলা থেকে জমা পড়ছে আরও কয়েকশ।

এ অবস্থায় ল্যাবের সংখ্যা বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ল্যাব চালু করা হলেও নকল কিটের কারণে টেস্ট শুরুতেই হোঁচট খায়। আরো ল্যাব চালুর সিদ্ধান্ত হলেও তা কার্যকর হয়নি।

বিআইটিআইডি ল্যাব প্রধান ডা. শাকিল আহমেদ খান বলেন, আগে যেখানে পুরো বিভাগ থেকে ল্যাবে নমুনা আসতো সর্বোচ্চ ৩শ। সেখানে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম নগরী থেকেই আসছে প্রায় ৫শ কাছাকাছি। এরমধ্যে নেই জনবল। তাহলে কি করে এত নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি পরীক্ষাগার বাড়ানো না হয়, তাহলে কিছুদিন পর ফলাফল পেতে আরো বেশি সময় লাগবে।



 

Show all comments
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ৯ জুন, ২০২০, ১১:৪২ এএম says : 0
    এটি ভয়ংকর ভয়াবহ সংবাদ জাতিয় পত্রিকায় বড় বড় অক্ষরে লাল লিখা শিরোনাম হওয়া উচিৎ ছিল। করোনা ভাইরাসের চট্টগ্রামের শহর বন্দর গ্রামগুলোতে ঘরে ঘরে জ্বর কাশি ফার্মেসি গুলোতে ঔষধ বিক্রি দেখে কিছুটা বুঝতে পারা য়ায়। সাড়ে তিন হাজার করোনার রোগীর রির্টানিং নাই। ইতিপূর্বে একশত জন ঠিকানা বিহীন করোনার রোগীর সন্দান নেই। আজকের দুঃখজনক সংবাদ সিএমপি মহোদয় ও আক্রান্ত। আল্লাহ্ ওনাকে হেফাজত করুক। রেড় জোন চট্টগ্রাম চট্টগ্রামের ভয়ংকর স্বাস্থ্যখাতের বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে জরুরী প্রদক্ষেপ নিতে দেখছিনা। পকৃতির বালা মুসিবত আজাব গজব ইত্যাদির জন‍্য একমাত্র আল্লাহর দরবারে আমাদের দোয়া প্রার্থনা করা ছাড়া উপায় নাই। জলন্ত ভাইরাসের অগ্নিকাণ্ডের মাঝখানে চট্টগ্রামের মানুষ। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নিকট গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পৌঁছনোর দায়িত্ব সবার। আল্লাহ্ আপনি চট্টগ্রামের মানুষ হেফাজতের মাধ্যমে রক্ষা করুন। আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ