Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শিবগঞ্জে মার্সেল এনজিও’র বিরুদ্ধে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০২০, ৩:৩৪ পিএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বেসরকারি এনজিও সংস্থা মার্সেল অরফানস বিডি এলটিডি এন্ড অবি ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে গ্রাহকের জমানো প্রায় ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোববার বিকেলে ভূক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এসে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। জানা গেছে- গত ২০১৬ সালে স্বল্প পরিসরে উপজেলার চককীর্তি শাখা নিয়ে যাত্রা শুরু করে মার্সেল নামে ওই এনজিও সংস্থা। এরপর শিবগঞ্জ ও শ্যামপুর শাখা অফিসে সংস্থার কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শ্যামপুর শাখা অফিসের স্টিল আলমারীসহ যাবতীয় আসবাবপত্র নিয়ে কার্ভাড ভ্যান যোগে পালিয়ে যাবার সময় এলাকাবাসিদের সন্দেহ হলে বাধা প্রদান করে। এ সময় মাঠ কর্মী আমিনুল ইসলামকে এলাকাবাসি আটক করে শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সোপর্দ করে। পরে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে হাজির হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভূক্তভোগী ৩০-৪০ জন ব্যক্তি জমানো টাকা ফেরত চান। পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে ভূক্তভোগীরা বাড়ি ফিরে যান। শ্যামপুর শরৎনগর গ্রামের ভূক্তভোগী মামুন অর রশিদ জানান, প্রায় দুই বছর ধরে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা জমিয়েছেন। গত ছয় মাস থেকে জমানো টাকা উত্তোলন করতে চাইলে টালবাহানা শুরু করে মাঠ কর্মী। এক পর্যায়ে শনিবার রাতে অফিসের যাবতীয় আসবাবপত্র নিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে এলাকাবাসির হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি। জানা যায়, শুধু মামুন অর রশিদ নয়, শ্যামপুর শরৎনগর গ্রামের আবদুল করিমের ১ লাখ ৫০ হাজার, শ্রী উত্তমের ১ লাখ, সুফল ও দয়ালের ৫৫ হাজার, সদ্বীপের ২০ হাজার, উমরপুর গ্রামের মোসা. ল্যাচন বেগমের ২৫ হাজার, সদাশিবপুর টিকোস গ্রামের কাইসারের ১ লাখ ২০ হাজার, মোসা. অনোয়ারী বেগমের ১ লাখ ৩০ হাজার ও বাজিতপুর গ্রামের আবদুস সালামের ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। ভূক্তভোগীরা জানায়, অনেক কষ্টের জমানো টাকাগুলো উত্তোলন করতে চাইলে তারা বিভিন্ন অজুহাত দেখায়। এ ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই মোটা অংকের টাকা জমা রাখে। দিনে দিনে এসব টাকার পরিমাণ হয়ে দাঁড়ায় লাখ টাকায়। এ বিষয়ে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বাবুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শ্যামপুর শাখা অফিসের যাবতীয় আসবাবপত্র গোপনে সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। ওই অফিসের বাড়ির মালিকের সাথে ঝামেলা হয়েছে বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এ বিষয়ে জানতে উপজেলা এনজিও ফোরামের সভাপতি তোহিদুল আলম টিয়া বলেন, উপজেলার ৪৩টি বেসরকারি সংস্থা এনজিও ফোরামের সাথে সম্পৃক্ত। এর আগে মার্সেল এনজিও সংস্থাকে ফোরামের সদস্য হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সে সদস্য হননি। এ ঘটনায় মার্সেল সংস্থা নিজেই দায়ী। তবে ইউএনও স্যারের নির্দেশে এনজিও ফোরাম ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে নিয়ে গ্রাহকদের সঞ্চয়ী টাকার হিসাব করে ফেরতের দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাকিব আল-রাব্বি বলেন, এ ঘটনায় ভূক্তভোগীরা অফিসে এসে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। মার্সেল এনজিও সংস্থার রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে ভূক্তভোগী গ্রাহকদের কত টাকা সঞ্চয়ী হয়েছে, তার হিসাব সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান এবং এনজিও ফোরামের কাছে জানতে চেয়েছেন। সেই মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ