Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাল্লেকেলেতে বৃষ্টির আগে বোলিং ঝড়

প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : বছরের এই সময়টাতে এশিয়াসহ বিশ্বের প্রায় দেশেই বৃষ্টির তোড় একটু বেশিই থাকে। পরিমাণটা অপেক্ষাকৃত প্রকোট আকার ধারণ করে এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কাতে। আর হিমালয়ের পাদদেশের এই দেশটির ক্যান্ডি শহরটি যেন বৃষ্টির রানী! এই মেঘ এই রোদ্দুরের খেলার মাঝে আকাশভারী হয়ে বর্ষণে অভ্যস্ত এখানকার জনগণ। এই শহরের ক্রিকেট স্টেডিয়াম পাল্লেকেলে যে কত ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টির তোড়ে তার ইয়ত্তা নেই। তবে গতকাল সেই বৃষ্টিকে ছাপিয়ে বোলিং ঝড়ই যেন বয়ে গেল ব্যাটসম্যানদের উপর দিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার সাথে স্বাগতিকদের সিরিজের প্রথম টেস্টে বৃষ্টির জন্য সর্বসাকুল্যে খেলা হয়েছে মাত্র ৫৪.২ ওভার। এরই মাঝে উইকেটের পতন হয়েছে ১২টি!
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দল গুটিয়ে গেল ৩৫ ওভারের আগেই। প্রতিপক্ষ ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ ওভারেই হারালো ২ উইকেট! এইটুকু জেনে মনে হতেই পারে, উইকেট ছিল “মাইনফিল্ড!” আদতে পাল্লেকেলের ২২ গজে ছিল না এমন কোনো জুজু। খানিকটা সুইং মিলেছে পেস বলে, স্পিনটাও ধরেছে একটু। তবে সেটা ব্যাটসম্যানদের এমন দুর্দশা হওয়ার মত নয়। হলো অস্ট্রেলিয়ার পেস ও স্পিন জুটির দুর্দান্ত বোলিং আর লঙ্কানদের বাজে ব্যাটিং মিলিয়ে। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সময় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস নিশ্চয়ই কল্পনাও করতে পারেননি, ১১৭ রানে গুটিয়ে যাবে তার দল! ৩৪.২ ওভারে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামার পর দেশটির ইতিহাসের এটি সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ইনিংস। এর আগে তাদের ছোট ইনিংসটি ছিল ৩৮.৪ ওভারের। সেটি হয়েছিল ২০০০-০১ সালে কেপ টাউনে। ঘরের মাঠে এর চেয়ে ছোট ইনিংসও খেলেছিল লঙ্কানরা। ২০০৬ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে এই ক্যান্ডিতেই ২৪.৫ ওভারেই অল আউট হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। সেবার তারা করেছিল মাত্র ৭৩ রান।
গতকাল এমনিতেই অনভিজ্ঞ শ্রীলঙ্কা একাদশ সাজিয়েছিল দুজন অভিষিক্ত নিয়ে। ব্যাটিং অলরাউন্ডার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও চায়নাম্যান বোলার লাকসান সান্দাকান। অভিষেক ইনিংসে দলের সর্বোচ্চ রান এসেছে ধনঞ্জয়ার ব্যাট থেকেই, তবে সেটি মাত্র ২৪! দলের সবচেয়ে বড় জুটি ২৫ রানের। বল হাতে ধ্বংসযজ্ঞের সূচনা করেছিলেন মিচেল স্ট্যার্ক, ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডবিøউ দিমুথ করুনারতেœ। আরেক পাশে নিখুঁত লাইন-লেংথে আর ছোট ছোট সুইংয়ে লঙ্কানদের নাভিশ্বাস তোলেন জশ হেইজেলউড। পুরস্কার পেয়ে যান দ্রæত। ফিরিয়ে দেন কুসল মেন্ডিস ও টেস্ট স্পেশালিস্ট ওপেনার কৌশল সিলভাকে। সেই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি লঙ্কানরা। বরং দুই স্পিনার স্টিভ ও’কিফ ও নাথান লায়ন চেপে ধরেন আরও। ৫ উইকেটে ৮৪ রান নিয়ে লাঞ্চে গিয়েছিল লঙ্কানরা। লাঞ্চের পর প্রথম ওভারেই দুই উইকেট নেন লায়ন। ৩০ রানে স্বাগতিকরা হারায় শেষ ৫ উইকেট।
ব্যাটিংয়ের শুরুটা বাজে হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ারও। রানের খাতা খোলার আগেই নুয়ান প্রদিপের বল স্টাম্পে টেনে আনেন ডেভিড ওয়ার্নার। আরেক ওপেনার জো বার্নস বোল্ড রঙ্গনা হেরাথের স্কিড করা বলে। তবে তৃতীয় উইকেটে উসমান খাওয়াজা ও স্টিভ স্মিথ বুঝিয়ে দেন, উইকেটে নেই কোনো জুজু। বল বুঝে ব্যাট করলে খুব দুরূহ কিছু নয়। দুজনের জুটির আর অস্ট্রেলিয়া অগ্রগতি থামায় বৃষ্টি। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে উঠেছে ততক্ষণে ৫৯ রান। বৃষ্টিতে দিনের খেলা শেষ ৩৩ ওভার আগেই। নইলে হয়ত প্রথম দিনেই শ্রীলঙ্কার স্কোর ছাড়িয়ে যেত অস্ট্রেলিয়া।
এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৬ টেস্ট খেলে মাত্র একবার জিতেছে শ্রীলঙ্কা। সেটি ১৯৯৯ সালে ক্যান্ডিতে। বাকি ম্যাচগুলোর ১৭ টিতে হেরেছে। আর ৮টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। বৃষ্টি কি সেই সংখ্যা আরেকটু বাড়িয়ে দেবে? প্রথম দিন থেকেই মেঘের সাথে এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে পাল্লেকেলের আকাশে।


স ং ক্ষি প্ত স্কো র
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস : ৩৪.২ ওভারে ১১৭ (করুনারতেœ ৫, কৌশল ৪, মেন্ডিস ৮, চান্দিমাল ১৫, ম্যাথিউস ১৫, ধনঞ্জয়া ২৪, কুশল ২০, দিলরুয়ান ০, হেরাথ ৯, সান্দাকান ১৯*, প্রদিপ ১; স্টার্ক ২/৫১, হেইজেলউড ৩/২১, ও’কিফ ২/৩২, লায়ন ৩/১২)।
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস : ২০ ওভারে ৬৬/২ (বার্নস ৩, ওয়ার্নার ০, খাওয়াজা ২৫*, স্মিথ ২৮*; প্রদিপ ১/৩, হেরাথ ১/১৫, দিলরুয়ান ০/১৯, সান্দাকান ০/১৩, ম্যাথিউস ০/৬)। প্রথম দিন শেষে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাল্লেকেলেতে বৃষ্টির আগে বোলিং ঝড়
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ