Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা মেঘমালায় ভর করে বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত উপকূলভাগসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২০, ১২:২৯ পিএম

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা ধেয়ে এসে সমগ্র উপক’লভাগ সহ দক্ষিণাঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি ঝড়িয়ে জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে। তবে এ বর্ষন ‘নোভেল করোনা ভাইরাস’র ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে জনজীবনকে ভাইরাস মূক্ত করতে পারে বলে আশাবাদী দক্ষিণাঞ্চলের সাধারন মানুষ। পাশাপাশি এ বৃষ্টিপাত প্রাকৃতিকভাবে লক ডাউন কার্যকর করছে বলেও মনে করছেন সতর্ক নগরবাশী। তবে এ বর্ষন বরিশাল মহানগরীর বেশীরভাগ রাস্তাঘাটকে সয়লাব করে দিচ্ছে। এ নগরীর বিপর্যস্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা যে এখন বর্ষার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতকেও সামাল দেয়ার মত ক্ষমতা রাখে না তা নগরবাশীর সামনে স্পষ্ট করছে বার বার।
বৃহস্পতিবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় কুয়াকাটা সংলগ্ন কলাপাড়ায় ১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এসময় বরিশাল মহানগরীতে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৭৫ মিলিমিটার। গত ৪৮ ঘন্টায় প্রায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে বরিশাল মহানগরীর বেশীরভাগ এলাকার রাস্তাঘাটই সয়লাব হয়ে গেছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদী বন্দরকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেতের আওতায় রাখা হয়েছে।
তবে আগামী শণিবার পর্যন্ত এ বর্ষন অব্যাহত থাকলেও রবিবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতির কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌশুমী বায়ুর প্রভাবে এ বৃষ্টিপাত দক্ষিণাঞ্চলে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন বীজতলা তৈরীর জন্য এখনো উপযোগী থাকলেও উঠতি আউশের জন্য ঝুকি বৃদ্ধি করছে। গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবেও দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, মৌশুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌশুমী বায়ু সারা দেশে সক্রিয় থাকলেও তা উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। ফলে সাগরে সৃষ্ট মেঘমালা ধেয়ে এসে উপক’লভাগ সহ দক্ষিণাঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগের মতে, বরিশাল সহ উপক’লীয় এলাকায় মাঝারী ধরনের বৃষ্টি সহ বজ্র বৃষ্টি এবং কোথাও ৪৪-৮৮ মিলিমটারের ভারি থেকে ৮৯ মিলিমিটারের বেশী অতিভারি বৃষ্টিপাতেরও আশংকা রয়েছে।
বরিশাল সহ উপক’লভাগে গত দু দিনে সূর্যের দেখা মেলেনি। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টা থেকে এক ঘন্টায় বরিশালে প্রায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এরপর রাতভরই হালকা থেকে মাঝারী বর্ষন অব্যাহত ছিল। বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বরিশালে প্রায় ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। বুধবার দিনভরই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি রাতের বেশীরভাগ সময়ই ভরি বর্ষনের রূপ নেয়। ফলে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড গড়ে বরিশাল। তবে এসময় পটুয়াখালীর কলাপাড়াতে বৃষ্টি হয়েছে ১৩৮ মিলিমিটার। বৃস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশালে আরো প্রায় ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এবার বর্ষা মাথায় করে দক্ষিণÑপশ্চিম বায়ু নির্ধারিত ২৯ মে’র দিন দশেক পরে বাংলাদেশের উপক’লে পৌছে। গত সপ্তাহেই তা দক্ষিণ উপক’লে পৌছার পরে আষাঢ়ী বৃষ্টি ঝড়াচ্ছে। এ বৃষ্টিপাত এখনো জনজীবন সহ পরিবেশের জন্য অনুকুলেই রয়েছে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদগন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবহাওয়া

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ