Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে পাটকলগুলোর

প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কর্পোরেট রিপোর্টার : সরকারি পাটকলগুলো আধুনিক করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে চীনের কারিগরি সহায়তা নেবে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)। এ জন্য প্রাথমিকভাবে তিনটি পাটকলের আধুনিকায়নে চীনের সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সই করেছে সরকার। চীন সরকারের মালিকানাধীন চায়না টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিয়াল করপোরেশন ফর ফরেন ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশনের (সিটিইএক্সআইসি) সঙ্গে এ চুক্তি করেছে বিজেএমসি। মঙ্গলবার সচিবালয়ে পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। বিজেএমসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হুমায়ুন খালেদ এবং সিটিইএক্সআইসির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্যাং উই নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা চুক্তিতে সই করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব এমএ কাদের সরকারসহ মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,  সরকার বিজেএমসির আওতাধীন মোট ২৬টি পাটকলের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ২৪টি পাটকলের আধুনিকায়ন করবে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে তিনটি পাটকলের আধুনিকায়নে চুক্তি সই হলো। এগুলো হলোÑ আমিন জুটমিল, চট্টগ্রাম, করিম জুটমিল, ঢাকা, প্লাটিনাম জুটমিল, খুলনা। বাকি দুটি পাটকলে পাটপণ্য উৎপাদন না হওয়ায় সেগুলো এর আওতায় রাখা হয়নি। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাটকলগুলো জাতীয়করণ করে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। জাতীয়করণকৃত পাটকলগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে তিনি বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু-পরবর্তী সরকারগুলো জনগণের মালিকানাধীন পাটকলে ফের ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠা করে। লুটপাট হয়ে যায় জনগণের সম্পত্তি। বিজেএমসি পরিণত হয় একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে। বিজেএমসি প্রতিষ্ঠাকালে এর অধীন জাতীয়করণকৃত পাটকলের সংখ্যা ছিল ৭৬টি। বর্তমানে ২৬টি পাটকল এর অধীন। এই ২৬টি পাটকলের যন্ত্রপাতি ৬০ থেকে ৭০ বছরের পুরনো। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। এ সময় আর কোনো পাটকল বিরাষ্ট্রীকরণ করা হবে না বলে ঘোষণা দেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে সরকারি পাটকলগুলোকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়। চুক্তি সই শেষে মির্জা আজম বলেন, ‘আমাদের দেশের ২৬টি কলের মধ্যে ২৪টি পর্যায়ক্রমে আধুনিকায়ন করা হবে। আমরা প্রতি টন কাঁচা পাট রপ্তানি করে ৫০০ থেকে ৬০০ ডলার পাই। আবার এই পাট থেকে বস্তা, দড়িসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে রপ্তানি করলে প্রতি টনে এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ ডলার পাই। কিন্তু মিলগুলো আধুনিকায়ন করা গেলে সেখানে পাটের শাড়ি, সোফা, কভার ইত্যাদি পণ্য তৈরি করা সম্ভব হবে। প্রতি টন পাট থেকে ১০ হাজার ডলারের পণ্য উৎপাদন করা যাবে। এ কারণে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে আধুনিকায়ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’ পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, মিলগুলোর আধুনিকায়নের মাধ্যমে বিজেএমসির লোকসান কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আধুনিকায়নের মাধ্যমে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা হবে না। তিনি বলেন, মিলগুলো পঞ্চাশের দশকের হওয়ায় উৎপাদন সক্ষমতা ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে। যেখানে বেসরকারি মিলগুলো ৯০ শতাংশ উৎপাদনের সক্ষম। এ কারণে বেসরকারি মিলের সঙ্গে সরকারি মিলগুলো পাল্লা দিয়ে টিকতে পারছে না। আধুনিকায়ন করা সম্ভব হলে বিজেএমসির মিলগুলোতে উৎপাদন ৯০ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব হবে। মির্জা আজম জানান, এ চুক্তির মাধ্যমে মিলগুলো আগামী দুই বছরের মধ্যে উৎপাদনে সক্ষম হবে। তিনটি মিলের আধুনিকায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪০ মিলিয়ন ডলার। জিটুজির আওতায় মিলগুলোর আধুনিকায়ন করা হবে। তিনি জানান, তিনটি পাটকলে ৫৩ দশমিক ৩৫ একর জমিতে বছরে দুই লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন পাটপণ্য উৎপাদন সম্ভব হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে পাটকলগুলোর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ