মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮৬৫ সাল থেকে ১৯৫০ সালের মধ্যে সাড়ে ৬ হাজার কৃষ্ণাঙ্গকে দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে।
এ নিয়ে একটি নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করে কৃষ্ণাঙ্গদের একটি অধিকার বিষয়ক সংগঠন। কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার ও আইনি সেবা প্র দা নকারী সংগঠন ইজেআই বেশ কয়েক বছর আগে দড়িতে ঝুলিয়ে এসব হত্যাকাণ্ডের তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করে । –আল জাজিরা
মঙ্গলবার ইজেআই কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকাণ্ডের এই নতুন তথ্য প্রকাশ করে। এতে দেখা যায় ওই ৮৫ বছরের মধ্যে আরও দুই হাজার কৃষ্ণাঙ্গকে দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল শ্বেতাঙ্গরা । আলজাজিরা জানায়, রশিতে ঝুলিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার কৃষ্ণাঙ্গদের স্মরণে প্রতিষ্ঠিত ইক্যুয়াল জাস্টিস ইনিশিয়েটিভ (ইজেআই) নামে একটি সংগঠন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সংগঠনটি এর আগে ১৮৬৫ সাল থেকে ১৯৫০ সালে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাড়ে ৪ হাজার কৃষ্ণাঙ্গের তথ্য সংগ্রহ করে। তবে নতুন তথ্য যুক্ত হয়ে এই সংখ্যা বেড়ে গেছে আরও দুই হাজার ।
তালিকায় নতুন যুক্ত হওয়া হত্যাকাণ্ডগুলো সংগঠিত হয়েছিল মূলত ১৮৬৫ সাল থেকে ১৮৭৬ সালের মধ্যে । ইজেআই ’ র সংরক্ষণশালার ছবিতে দেখা যায় , এক কৃষ্ণাঙ্গকে প্রকাশ্যে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। নারী ও শিশুসহ বেশ কয়েকজন শ্বেতাঙ্গ নির্বিকারভাবে সেই ঝুলন্ত লাশের দিকে তাকিয়ে আছে ।
কৃষ্ণাঙ্গদের এসব গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পর। সেসময় দাসজীবন থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গদের । আফ্রিকান - আমেরিকানদের মূলত দাস হিসেবে আমেরিকায় নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু গৃহযুদ্ধের পর স্বাধীনভাবে জীবনযাপন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ মেনে নিতে চায়নি শ্বেতাঙ্গরা । ফলে কৃষ্ণাঙ্গরা হামলা ও আক্রমণের শিকার হয় এবং একে একে তাদের গাছে দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয় । বেশিরভাগ ঘটনা ঘটে আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে , তবে এই গণহত্যা শুধু ওই অঞ্চলেই থেমে থাকেনি , দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে ।
নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের স্বীকার হতে হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গদের। প্রতিবেদনে দেখা যায় , লুইজিয়ানায় নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত থাকায় ১৮৬৮ সালে অন্তত ২০০ কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা করা হয় । এমনকি পুরা পরিবারকে হত্যার ঘটনাও ঘটে। যেমন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইউলিসেস এস গ্রান্টকে সমর্থন দিয়েছিল জর্জিয়ার পেরি জেফরিসের পরিবার। ওই পরিবার ইউলিসেসকে ভোট দেয়ার পরিকল্পনা করেছে জানতে পেরে স্ত্রী , চার ছেলেসহ জেফরিসকে হত্যা করা হয় । গত ২৫ মে মিনিয়াপোলিসে পুলিশি নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদবিরোধী তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। ইউরোপসহ বিশ্বজুড়ে এই বিক্ষোভের ঢেউ উঠে। দাস ব্যবসায়ীসহ উপনিবেশিক ব্যক্তিত্বদের মূর্তিও উচ্ছেদ করা হয় ।
এমন পরিস্থিতিতে ইজেআই কৃষ্ণাঙ্গদের গণহত্যার নতুন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান স্টিভেনসন এক বিবৃতিতে বলেন , শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ এবং বর্ণবাদি কর্তৃত্ববাদের কারণে সেসময় যে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল আমাদের , সেগুলো নিরূপণ করা ছাড়া বর্তমান মুহূর্তটি বোঝা যাবে না ।
নির্মম গণহত্যার শিকার কৃষ্ণাঙ্গদের স্মরণে ২০১৮ সালে আলবামায় ন্যাশনাল মেমোরিয়াল ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস নামে একটি সংরক্ষণশালাও খুলে অধিকার সংগঠনটি । স্টিভেনসন আরও বলেন , বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্ক বুঝতে হলে জাতির অতীত সম্পর্কে সত্য জানতে হবে এবং এর সম্মুখে দাঁড়াতে হবে ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।