Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পুলিশের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, চাইলেন ইয়াবা

বেপরোয়া জেকেজি সিইও আরিফুল রিমান্ড শেষে কারাগারে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনা টেস্টের নামে মানুষের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ ও তা পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেয়ায় গ্রেফতার হন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ ছয়জন। এরপর থেকে বেরিয়ে আসছে তার নানা কাহিনী। গ্রেফতারের পর লোক ডেকে থানায় হামলাও চালান তিনি। ভেঙেছেন থানার সিসি ক্যামেরা। নেশার জন্য পুলিশ সদস্যদের কাছে চান ইয়াবা। করোনার ভুয়া রিপোর্টের বিষয়ে স্বীকারও করেছেন বলে দাবি পুলিশের। তিন দিনের রিমান্ড শেষে আরিফুল হক চৌধুরীসহ চারজনকে গতকাল আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা মহানগর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৪ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেঁজগাও থানার এসআই দেওয়ান মো. সবুর আসামিদের আদালতে হাজির করেন। দুই আসামি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড এবং অপর চার আসামির ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলামের আদালতে হুমায়ুন কবির এবং তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী জবানবন্দি প্রদান করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম অপর চার আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- আরিফুল হক চৌধুরী, সাঈদ চৌধুরী, বিপ্লব দাস ও মামুনুর রশীদ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও জোনের ডিসি হারুন অর রশীদ জানান, আমরা যাদের প্রথমে গ্রেফতার করি তারা বাসায় গিয়ে অনৈতিকভাবে নমুনা সংগ্রহ করার বিষয়টি স্বীকার করে। এ ব্যবসা করতে গিয়ে তারা যে করোনার জাল সনদ বানাতো তাও স্বীকার করে। তারা এ বিষয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তারা বলে আরিফুল হক চৌধুরীর অফিসে তারা গ্রাফিক্সের কাজ করত। সেখান থেকেই তারা জাল সনদ বানাতো। তাদের গ্রেফতার করার পর থেকেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকে। প্রথমে ছয় থেকে সাতটা মাইক্রোবাস এসে তারা সিনক্রিয়েট করার চেষ্টা করে। তারা যে প্রতারণা করেছে সেটি নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। আর এজন্য তাদের তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল তাদের আদালতে পাঠানো হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তিনি আরো বলেন, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আরিফুল হক চৌধুরী হাজতখানার লাইট ভেঙে ও সিসিটিভি ভেঙে ফেলেছে। আমরা ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে মাদকাসক্ত এ বিষয়টি তার এক সহকর্মী স্বীকার করেছে। আমরা এ ধরনের লক্ষণও দেখেছি। জেকেজি হেলথকেয়ারের বিরুদ্ধে অনেক অনৈতিক কাজের অভিযোগ এসেছে, আমরা সেগুলো তদন্ত করছি।

মামলা তদন্তের সাথে সম্পৃক্ত পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, থানা হেফাজতে থাকা আরিফুল হক চৌধুরী নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ভাঙচুর করেছেন থানার ভেতর। ভেঙেছেন সিসি ক্যামেরা, ফ্যানসহ প্রায় ৩০ হাজার টাকার সরকারি সম্পদ। এমনকি নেশা করতে ইয়াবাও চান পুলিশ সদস্যদের কাছে। গ্রেফতারের পর থেকেই নানাভাবে পুলিশের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন আরিফুল চৌধুরী।

তিনি আরো বলেন, জেকেজি হেলথ কেয়ারের কার্যালয়ে করোনা সনদ জাল করার বিভিন্ন রকম প্রামাণিক দলিল ছাড়াও ইয়াবা খাওয়ার সরঞ্জামাদি পাই। তার আচরণ এতটাই ঔদ্ধত্যপূর্ণ যে তার সঙ্গে সেলে যদি কাউকে রাখা হয় তবে তার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। সেলে একদিন তিনি অসুস্থবোধ করার কথা বলেন। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ