Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নীল নদের বাঁধ নিয়ে চুক্তিতে সম্মত মিশর, ইথিওপিয়া ও সুদান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০২০, ৩:৩৯ পিএম

মিসর, ইথিওপিয়া আর সুদান নীল নদের পানি ব্যবহারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশ তিনটির মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
নীল নদের পানি নিয়ে দেশ তিনটির মধ্যে বিরোধে মধ্যস্থতাকারী আফ্রিকান ইউনিয়নের অনলাইন বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে। 'ব্লু নাইল ড্যাম' নামের এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশগুলোর মধ্যে এক দশকের বেশি সময় ধরে চলতে থাকা বিরোধের অবসান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার।
ইথিওপিয়া ও মিসরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নীলের পানি ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রতিবেশী দেশ সুদানও। মিসরের চাহিদা রক্ষা করেও ইথিওপিয়া কী করে নীলের পানি দিয়ে নিজেদের দেয়া বাঁধের জলাশয়ে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে এ নিয়ে একটা চুক্তির অভাব বোধ করছিল।
ইথিওপিয়ার পানিসম্পদমন্ত্রী সেলেশে বেকেলে বলেন, তিন দেশের নেতাদের সঙ্গে আফ্রিকান ইউনিয়নের সভাপতি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোশার অনলাইন বৈঠকের একদিন পর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।
ইথিওপিয়া বলেছে, এই মেগাপ্রকল্প তাদের উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত। এই বাঁধটির মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এদিকে নীল নদের পানির ওপর ৯০ শতাংশের বেশি নির্ভরশীল দেশ মিসর এরই মধ্যে উচ্চ জলচাপের মুখোমুখি, যা প্রায় ১০ কোটি মানুষের জীবনযাত্রার ওপর বিপর্যয়কর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে নীল নদের ওপর নির্ভরশীল আরেকটি দেশ সুদানও ইথিওপিয়া ও মিসরের বিরোধ নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
শুক্রবার দক্ষিণ আপ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোশার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও কনফারেন্সের পর মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি বলেছেন, সব পক্ষের মিলিত আলোচনার পর আশা করি, কোনো পক্ষই এমন কিছু করবে না, যা অন্যায্য মনে হতে পারে।
সুদানের প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামডকও নীল নদীর অববাহিকার দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে চুক্তির প্রযুক্তিগত খাতগুলো খতিয়ে দেখার ব্যাপারে তিন দেশই কাজ শুরু করবে।
শ্বেত নীল নদ ও নীলাভ নীল নদ নামের দুই উপনদী সুদানের রাজধানী খার্তুমের কাছে মিলিত হয়ে নীল নদ নামে প্রবাহিত হয়েছে। সুদান থেকে মিশরের ভিতর দিয়ে নদটি ভূমধ্যসাগরে গিয়ে পড়েছে।
সুদানের সীমান্ত থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে নীলাভ নীল নদের ওপর ‘দ্য গ্রান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসান্স ড্যাম (জিইআরডি)’ তৈরি করা হচ্ছে। এই উপনদীটিই নীলের পানির প্রধান উৎস আর এর উৎপত্তি ইথিওপিয়ায়।
চারশ কোটি ডলারের এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি থেকে ছয় হাজার ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে এবং এ প্রকল্পটি তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য বলে জানিয়ে আসছে ইথিওপিয়া। অপরদিকে নীল নদ মিশরের প্রয়োজনীয় মিঠা পানির ৯০ শতাংশের যোগান দেয়।
ইথিওপিয়াকে বাঁধের জলাধার পূর্ণ করা থেকে থামাতে শেষ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হিসেবে মিশর নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। মিশরের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টি নিয়ে সোমবার বৈঠকে বসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ