Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নানা অজুহাতে মানুষের বের হওয়ার চেষ্টা

লকডাউন ওয়ারী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনার সংক্রমণ রোধে ২১ দিনের জন্য রাজধানীর ওয়ারীতে লকডাউন শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার লকডাউনের প্রথম দিনে লোকজন নানা অজুহাতে লকডাউন এলাকা থেকে বের হয়েছেন। লকডাউন কড়াকড়ি করতে সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়। পুলিশ মোতায়েন থাকার পরেও মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব দেখা গেছে।

সকালে ওয়ারীর চারদিকে ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার প্রত্যেকটি অলিগলি প্রবেশমুখে বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রবেশের জন্য খোলা রাখা হয়েছে এলাকাটির র‌্যাংকিং স্ট্রিটের টিপু সুলতান রোড এবং হট কেক গলি। লকডাউনের প্রথম সকালে এলাকাবাসীকে বাঁশের বেড়া টপকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। সকাল ৯টার পর পাল্টে যায় সেই দৃশ্য। মানুষ বিচ্ছন্নভাবে বের হওয়ার চেষ্টা করে।
স্থানীয়রা জানান, এলাকাবাসীকে সহযোগিতা করতে কাউন্সিলরের নির্দেশে ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতি শিফটে ৫০ জন কাজ করছেন। জোনের ভেতরে বেশ কয়েকটি সুপার শপ থাকায় সিটি করপোরেশনের নির্দেশে সেগুলো খোলা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকাল ছয়টা থেকে লকডাউন শুরু হলেও ১০টার পর থেকে লোকজন ওয়ারী থেকে বের হওয়ার জন্য রাস্তায় বের হতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হট কেকের দোকানের সামনে ভিড়ও বাড়তে থাকে। অনেকে সেখানে থাকা বুথে নাম-ঠিকানা লিখে বিভিন্ন অজুহাতে বের হন। এ ছাড়া অনেক ব্যক্তিকে কোনো বাধা ছাড়াই বের হয়ে যান। দুপুর ১২টার দিকে লকডাউন এলাকা থেকে বের হন যোগীনগরের বাসিন্দা আবুল হোসেন। এ সময় বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বুথের খাতায় লিখেছেন, তিনি গুলিস্তান যাচ্ছেন। কিন্তু কেন যাচ্ছেন, কার কাছে যাচ্ছেন, এর কিছুই খাতায় লেখা নেই।

একজন স্বেচ্ছাসেবক জানান, বাইরে যেতে বাধা দিলে বা কারণ জানতে চাইলে কেউ কেউ তর্কে জড়াচ্ছেন। আলমগীর নামে পুরান ঢাকার এক ব্যবসায়ী লকডাউন জানার পরও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বের হন। কিন্তু কোনোভাবেই বের হতে পারেননি ওয়ারী থেকে। উপরন্তু স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। তার এক কথা, ২১ দিন ব্যবসা করতে না পারলে আমি কিভাবে চলবো? আমার ব্যবসার যে ক্ষতি হবে সেই টাকা কে দিবে? সরকার আমাদের চলাচলের জন্য পাসের ব্যবস্থা করুক।

ওয়ারী থানার সাব-ইন্সপেক্টর জহির হোসেন বলেন, সকাল ৬টা থেকে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। মানুষ বের হওয়ার চেষ্টা করছে। পুলিশ তা প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমাদের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী এলাকায় অবস্থানরত ডাক্তার, নার্স, সংবাদকর্মী এবং যাদের একান্তই জরুরি প্রয়োজন তারা বাইরে যেতে পারছেন বিশেষ বিবেচনায়।

এদিকে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওয়ারী এলাকায় লকডাউন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. এমদাদুল হক। এ সময় তিনি লকডাউন এলাকায় কোনো অব্যবস্থাপনা নেই বলে দাবি করেন। এমদাদুল হক বলেন, লকডাউনে প্রতিটি কাজ তারা সুচারুভাবে করছেন। তবে প্রথম দিন হিসেবে যদি কোনো ঘাটতি থেকে থাকে, তা আগামী দিনগুলোতে ঠিক হয়ে যাবে। তিনি বলেন, লকডাউনের মধ্যে নাগরিক সেবা দিতে ওয়ারীতে ই-কমার্স রয়েছে, ভ্যান সার্ভিস রয়েছে। তারা বিভিন্ন খাবার দাবার নিয়ে ভেতরে অবস্থান করছে। ওষুধের দোকানগুলো খোলা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লোকজন পরিষ্কার-পরিছন্নতার কাজ করছেন। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, লকডাউন এলাকায় দুজন ডাক্তার রয়েছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা করোনায় আক্রান্ত ৪৬ জন রোগীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। করোনার উপসর্গ আছে-এমন পাঁচজনের নমুনাও সংগ্রহ করেছেন তারা। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ