Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে

চট্টগ্রামে করোনায় কর্মহীনদের কেউ কেউ ছিনতাইয়ে

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

চট্টগ্রাম নগরীর জামাল খান কুসুম কুমারী স্কুলের সামনে ছিনতাইকালে চারজনকে পাকড়াও করে পুলিশ। তাদের একজন সাইফুল ইসলাম বাবু (২০) চাকরি করতেন নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায়। করোনায় চাকরি হারিয়ে চট্টগ্রাম চলে আসেন। বাকলিয়ার ডিসি রোডে বন্ধুদের সাথে উঠেন ব্যাচেলর বাসায়। হাত খালি তাই বন্ধুদের নিয়ে নেমে পড়েন ছিনতাইয়ে। রাতে দিনে অলিগতিতে লোকজনের কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তারা। শনিবার গ্রেফতার ওই চারজনের মধ্যে দুই জনই প্রথমবারের মতো ছিনতাই করতে নামেন। তার আগে চলন্তবাসে ঝাপটাবাজির ঘটনায় বন্দর থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ছয় জন। তাদের মধ্যে কয়েকজন কিছুদিন আগে এ দলে যোগ দিয়েছেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে টাইগারপাস থেকে গ্রেফতার চারজনের দুই জন আগে ছিলো ফুটপাতের হকার।

গত কয়েকদিনের এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা বিশ্লেষণ করে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নগরীতে অপরাধ প্রবণতা বিশেষ করে ছিনতাই, চুরি, দস্যুতা, ঝাপটাবাজির ঘটনা বাড়ছে। আর এসব অপরাধে নতুন নতুন অপরাধীরা যুক্ত হচ্ছে। বেকারত্বের কারণে অনেকে এমন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। কর্মহীনদের অনেকে মাদক পরিবহন এবং ব্যবসায়ও জড়িয়ে পড়ছে।

ভাসমান অপরাধীদের উৎপাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কাও করছেন নগর পুলিশের কর্মকর্তারা। ঈদ সামনে রেখে মলপার্টি, অজ্ঞানপার্টির দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনা মহামারীর কারণে মার্চের শেষদিকে টানা ছুটির সাথে স্থবির হয়ে পড়ে সবকিছু। পরে কল কারখানা চালু হলেও অনেকে চাকরি হারান।

মোটা অঙ্কের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেই শুধুই ভুক্তভোগীরা থানায় যান। অন্যসব ঘটনা তাই পুলিশের খাতায় রের্কড হয় না। নগরীতে প্রকাশ্যে ঘটছে এসব অপরাধ। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরার সময় নগরীর ব্যস্ততম দামপাড়ায় একজনের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে সম্প্রতি। পরে অবশ্য ছিনতাইকারীদের পাকড়াও করে পুলিশ।

চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, করোনার কারণে বেকার হয়ে কেউ কেউ অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। নগরীর উত্তর জোনে দুটি ঘটনায় এমন দুজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তাদের আগের রের্কডও ভাল ছিলো না।

নগরীতে ভাসমান এবং নতুন অপরাধীদের তৎপরতা বাড়ছে স্বীকার করে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, করোনায় বেকার অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে ছিনতাই, ঝাপটাবাজি ও দস্যুতার ঘটনায় এমন অনেকে ধরা পড়ছে, যারা অভাবের তাড়নায় এ পথে আসার কথা স্বীকার করেছে।

ভাসমান অপরাধীদের তৎপরতা বেড়েছে জানিয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি প্রিটন সরকার বলেন, করোনার শুরুতে অপরাধ কমে এলেও এখন তা বাড়ছে। আর এসব অপরাধে নতুনদের যুক্ত হওয়ার প্রমাণ মিলছে।
বাকলিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, ভাসমান অপরাধীদের অপতৎপরতা ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। ব্যাংকগুলোকে লাখ টাকার বেশি পরিবহনকালে পুলিশের সহযোগিতা নিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ছিনতাইপ্রবণ এলাকাগুলোতে টহল জোরদার করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ