Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শেরপুরের শ্রীবরদীতে ল্যান্ডফোন সংযোগ থাকলেও সেবা নেই: বিল গুনতে হচ্ছে প্রতি মাসে

শেরপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০২০, ৭:৩৯ পিএম

সরকারি অফিস ও বাসাবাড়িতে রয়েছে নামমাত্র ল্যান্ডফোন সংযোগ। সংযোগ থাকলেও সেবা না পেয়ে বঞ্চিত গ্রাহকরা। কিন্তু প্রতি মাসেই গুনতে হচ্ছে টেলিফোন বিল। বছরের পর বছর সেবা না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ল্যান্ডফোন ব্যবহারকারীরা। শেরপুরের শ্রীবরদীতে সরকারি ল্যান্ডফোন সেবা প্রদানকারী এ সংস্থাটির অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে। কিন্তু বিল দিতে হচ্ছে প্রতি মাসেই। এতে একদিকে বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছে সেবাগ্রহীতারা। অন্যদিকে দীর্ঘদিন সেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভূক্তভোগীরা।
জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন শ্রীবরদী-লঙ্গরপাড়া-শেরপুর সড়কের উন্নয়ন কাজ চলার সময় টিএন্ডটি অফিসের আশেপাশের ল্যান্ডফোনের অধিকাংশ আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল কেটে যায়। এরপর থেকে ল্যান্ডফোনের সার্ভার রুমের সাথে উপজেলার অফিস, ব্যবসায়ীপ্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির সকল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের নজরে আসলে, তারা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে। কিন্তু প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও ল্যান্ডফোনের সংযোগ সচল করতে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পরে গ্রাহকরা। কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও হঠাৎ গত জুন/২০২০ইং মাসে প্রায় এক বছরের বিল পরিশোধের নোটিশ পাঠায় গ্রাহকদের কাছে। বিল হাতে পেয়ে সেবা বঞ্চিত গ্রাহকদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা যায়। একসময় শ্রীবরদী উপজেলায় প্রায় ৫ শতাধিক সংযোগ থাকলেও সেবা না পেয়ে বর্তমানে মাত্র ৫০-৬০টি সংযোগ রয়েছে। কিন্তু সেগুলোও সচল নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, অফিসটি জরাজীর্ণভাবে পরে রয়েছে। দেখে মনে হয় দীর্ঘদিন যাবত কোন মানুষজনের যাতায়াত নেই। সাব-এ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, লাইনম্যান সংশ্লিষ্ট অফিসের দায়িত্বে থাকলেও কেউ অফিসে আসেন না। একজন নাইটগার্ড রয়েছেন। তার বয়স প্রায় ৮০ বছর। তিনিই দেখাশোনা করেন। অফিস সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর অভিযোগ, অফিস ঠিকমতো খোলা হয়না বিধায় দিন-রাতের অধিকাংশ সময় বখাটেরা আড্ডা দেয়। রাতের বেলায় বেড়ে যায় মাদকসেবীদের আনোগোনা।
উত্তর বাজারের ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান বলেন, বেশিরভাগ সময় ল্যান্ডফোনের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন থাকে। অফিসে গেলেও কাউাকে পাওয়া যায় না। কিন্তু বিল দিতে হয় প্রতি মাসেই। তাই সেবা না পেয়ে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছি।
উপজেলা পরিষদের সেবাগ্রহিতা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের অফিসে ল্যান্ডফোন রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত কোন প্রকার সেবা পাচ্ছি না। অফিসের স্টাফদের ফোন দিলেও সংযোগ সচল করতে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কিন্তু প্রতি মাসেই বিল পরিশোধ করতে হয়।
শ্রীবরদী টিএন্ডটি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-এসিস্টটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল হক বলেন, রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করার সময় অফিসের আশেপাশের বেশকিছু আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল কেটে গেছে। বিষয়টি উধর্বতন কর্তপক্ষকে অফিসিয়ালভাবে অবগত করা হয়েছে। ক্যাবল পেলেই সংযোগগুলো সচল করা হবে।
বিটিসিএল শেরপুরের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী ব্যবস্থাপক টেলিকম আব্দুল মান্নান বলেন, রাস্তার উন্নয়ন কাজের সময় আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল কাটা পড়ায় সংযোগগুলো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উধ্বর্তন কর্তপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। প্রতি মাসেই গ্রাহকদের নিকট থেকে বিল পরিশোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু সংযোগগুলো গ্রাহক বিচ্ছিন্ন করেনি, তাই সর্বনিন্ম বিল করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার বলেন, শ্রীবরদীতে যোগদানের পর থেকেই ল্যান্ডফোনের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পেয়েছি। পরে বিষয়টি টিএন্ডটি অফিসের কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। কিন্তু প্রায় ৮ মাস অতিবাহিত হলেও সংযোগটি সচল হয়নি। তিনি আরো বলেন, তাদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি যে, রাস্তা সম্প্রসারণের কাজের সময় আন্ডারগ্রাউন্ডের ক্যাবল কেটে গেছে। অফিসিয়ালভাবে তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পেলে দ্রুত লাইনগুলো সচলের ব্যবস্থা করবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ