Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি

চট্টগ্রামে যত্রতত্র করোনার বর্জ্য

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামে যেখানে সেখানে ফেলা হচ্ছে করোনার বর্জ্য। হাসপাতালে বর্জ্য শোধনের ব্যবস্থা না থাকায় মেডিক্যাল বর্জ্য অস্বাস্থ্যকরভাবে ফেলা হচ্ছে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নানা নির্দেশা দিলেও তা কার্যকর হচ্ছে না।
হাসপাতালের পাশাপাশি বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত কোভিড-১৯ রোগীদের বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে খোলা জায়গায়, নালা-নর্দমায়। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকের পাশাপাশি নগরীতে গড়ে উঠা আইসোলেশন সেন্টারগুলোতেও চলছে করোনা রোগীর চিকিৎসা। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপন করা হয়েছে নমুনা কালেকশান সেন্টার। সেখানেও করোনার বর্জ্য তৈরি হচ্ছে।
হাসপাতালের চিকিৎসা বর্জ্যরে সঙ্গে মিশছে পৌনে এক কোটি মানুষের এ মহানগীর গৃহস্থালি আবর্জনা। হাসপাতাল ও বাসাবাড়ির ময়লা মিশে ক্লিনিক্যাল বর্জ্যে পরিণত হচ্ছে। এতে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এসব বর্জ্য পানি, খাবার, মাটি, বাতাস, পশু-পাখির মাধ্যমে মানুষ ও পরিবেশের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
জানা যায়, এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আধুনিক মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তির মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সলিউশন নেই। একই অবস্থা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেও। এই দুুটি হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি করোনাকরোনা উপসর্গ নিয়ে রোগীর চিকিৎসা চলছে। এছাড়া নগরীর আগ্রাবাদ মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল, ইউএসটিসিসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল এলাকায় যেখানে সেখানে মেডিক্যাল বর্জ্যরে সাথে করোনা রোগী, চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহৃত সামগ্রী ফেলা হচ্ছে।
চমেক হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালের আশপাশের সড়কে এমনকি আবাসিক এলাকায়ও করোনার বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। করোনার বর্জ্য আলাদা করে ডবল পলিথিতে মুড়িয়ে ফেলার নিয়ম থাকলেও ডাস্ট বিন এবং নালা-নর্দমা এবং সড়ক ও ফুটপাতে উম্মুক্ত স্থানে এসব বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা খালিহাতে এসব বর্জ্য অন্যান্য বর্জ্যরে সাথে ময়লার গাড়িতে তুলে নির্দিষ্ট আবর্জনার ভাগাড়ে নিয়ে যাচ্ছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী পিপিই একবার ব্যবহার করার পর তা বিপজ্জনক বর্জ্য হিসেবে গণ্য হয়। পিপিই ছাড়াও ফেসিয়াল টিস্যু, গজ, ব্যান্ডেজ, সাধারণ মাস্ক, রোগীদের ব্যবহৃত অক্সিজেন মাস্ক, হ্যান্ড গøাভস, ন্যাসোফেরিঞ্জিয়াল সোয়াবের টেস্ট টিউব, স্যালাইন ব্যাগ, ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ, সুচ ইত্যাদি বর্জ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বিশেষভাবে ব্যবহৃত এসব সামগ্রী ব্যবহারের পর ধ্বংস না করায় এগুলোই নতুনভাবে সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি করছে।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, শুরুতে করোনা বর্জ্য নিয়ে বিশৃঙ্খলা থাকলেও এখন তা কমে আসছে। হাসপাতাল কর্র্মীদের স্বাস্থ্যবিভাগের পক্ষ থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যেখানে সেখানে মেডিক্যাল বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে মনিটিরিং জোরদার করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরী বলেন, হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোকে করোনার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা এসব নির্দেশনা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ