Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইলিশের টানে সাগরপানে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

নিষেধাজ্ঞার ক্ষণগণনা শেষ। এখন বঙ্গোপসাগরের মাঝ দরিয়ায় ছুটছেন জেলেরা রুপালি ইলিশ ধরতে। ঝাঁকে ঝাঁকে নৌকা এখন সাগরের মাধ্যখানে। সব ধরনের মাছ ধরার ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে। আর গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই জেলেরা আবার ট্রলার নিয়ে ছুটছে গভীর সাগরে। বরগুনা সদর, আমতলী, পাথরঘাটা, তালতলী উপজেলার বিভিন্ন জেলেপল্লীতে যেন প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। ইনকিলাবের স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানান, সাগর পাড়ের জেলেপল্লীগুলোতে চলছে এখন খুশির নাচন। প্রায় তিন লাখ জেলে সাগর ও নদীতে ইলিশ শিকারে নামতে যাচ্ছে।
বঙ্গোপসাগরে মাছের প্রজনন মৌসুমের সুরক্ষায় গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে। জাটকা নিধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সফলতাকে অনুসরণ করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার থেকে সাগরে মাছ ধরা শুরু হয়ে গেছে। মাছ ধরার নৌকা নিয়ে কেউ কেউ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে সাগরে নামা শুরু করেছেন। বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, ট্রলারগুলো মাছ ধরে কয়েকদিন পর ঘাটে ফিরতে শুরু করলেই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরবে।
সমুদ্র উপক‚লীয় জেলেরা জানান, প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার প্রাদুর্ভাবে ও ৬৫ দিন সমুদ্রে মৎস্য আহরণের অবরোধের কারণে বেকার বসে থেকে ধার-দেনা করে চলতে হয়েছে। করোনা প্রেক্ষাপটে ধার-দেনা শেষে সমুদ্রে নামার আগে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সমুদ্রে নামছেন তারা।
সূত্র জানায় ৬৫ দিন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞায় ইলিশ, সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি চিংড়ি, কাঁকড়ার মতো ক্রাস্টেশান আহরণও ছিল এই নিষেধাজ্ঞার আওতায়। এতে করে উপক‚লীয় জেলাগুলোতে বিপাকে পড়ে জেলেরা। তবে সরকার তাদের পুনর্বাসনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সহায়তা দিয়েছে।
মৎস্যবন্দর খ্যাত সাগর পাড়ের আলীপুর-মহিপুর-কুয়াকাটা জেলেপল্লীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার ছাড়া এসব জেলেদের আর কোনো পেশার অভিজ্ঞতা নেই। তারা জানান, মাঝারি কিংবা বড় আকারের ট্রলার নিয়ে সাগরে নামতে খরচ হয়ে থাকে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। এবার ৬৫ দিন বেকার থাকায় পুঁজি শেষ করে ধার-দেনায় জর্জরিত হয়েছেন। পাশাপাশি আড়তদার কিংবা দাদনদাররাও খুব একটা ঝুঁকি নিতে রাজি নন। বরফকল মালিকরাও জানিয়েছেন, বছরের পুরোটাই তাদের টেকনিশিয়ানসহ শ্রমিকদের বেকার বসিয়ে টাকা গুণতে হয়।
জানতে চাইলে মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক আজিজুল হক জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়েছে। চলমান ভরা মৌসুমে প্রায় তিন লাখ জেলে সাগর ও নদীতে ইলিশ শিকারে নামতে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে ইলিশ সাগর ছেড়ে নদীর দিকে ছুটে। তখন বেশি ইলিশ ধরা পড়ে জেলেদের জালে। এবার মৌসুমের শুরুতেই ইলিশ মিলছে। গত সোমবার অমাবশ্যার প্রভাবে উপকূলের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নদী ও সাগর মোহনায় বেশি ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইলিশ

২০ নভেম্বর, ২০২২
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ