Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকের নামে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা

৫ শ্রমিক নেতা জেলহাজতে

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০২০, ৪:৩৬ পিএম

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ৪১ শ্রমিকের নাম দিয়ে এবং অজ্ঞাত অসংখ্যক শ্রমিককে আসামী করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শনিবার রাত ১০ টার দিকে খনির ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান বাদী হয়ে পার্বতীপুর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করে। এ মামলায় গ্রেপ্তারকৃতদের আজ রবিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে দিনাজপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বড়পুকুরিয়া খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, দপ্তর সম্পাদক এরশাদ আলী, শ্রমিক নেতা মাহামুদুল আলম ও বেলাল হোসেনকে।
অপরদিকে, শ্রমিকদের নামে মামলা করায় খনি এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে খনি গেটে এক প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে আজ রবিবার সকাল থেকে।
গত ২৬ মার্চ থেকে করোনায় বন্ধ হয়ে যায় খনি থেকে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম। এতে বেকার হয়ে পড়ে খনির উৎপাদন চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সএমসি-সিএমসি'র অধীনে কর্মরত ১ হাজার ১৪৭ জন খনি শ্রমিক। তবে, ৩০০ চীনা শ্রমিক দিয়ে সীমিত পরিমাণে প্রতিদিন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন করে আসছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদিকে, খনি শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ার দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন শুরু করে। ফলে গত ১১ জুলাই ভবানীপুর ডিগ্রী কলেজ মাঠে স্থানীয় প্রশাসন, শ্রমিক ও খনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়।
চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এক্সএমসি-সিএমসি প্রথম ধাপে প্রতি শিফটে ১০৫ জন করে ৪১০ জন শ্রমিককে কাজে নিতে রাজি হয়। সেই অনুযায়ী শ্রমিকরা করোনা পরীক্ষার নমুনা দিতে আসলে শ্রমিক নেতারা তাদের মনমতো ৫জন করে শ্রমিক নেওয়ার চাপ দেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাতে রাজি না হলে গত শনিবার শ্রমিক নেতারা শ্রমিকদের নমুনা দিতে বাধা দেন ও পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী সড়ক অবরোধ করেন। এতে আটকা পড়ে যানবাহন। খবর পেয়ে পুলিশ অবরোধ তুলে দিয়ে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ওই ৫ শ্রমিক নেতাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
বড়পুকুরিয়া খনির ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান জানান, সরকারি কাজে বাধা প্রদান, রাস্তা অবরোধ এবং ভাংচুরের কারনে শ্রমিকদের নামে মামলা করা হয়েছে।
এব্যাপারে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোঃ কামরুজ্জামান জানান, করোনা পরিস্থিতি ও কয়লা সংকট বিবেচনায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভূগর্ভে বিভিন্ন কাজে পারদর্শী ৪১০ জন শ্রমিকের তালিকা শ্রমিক নেতাদের দেয়। কিন্তু শ্রমিক নেতারা তাদের মনমতো কিছু শ্রমিককে অন্তর্ভুক্ত করতে দাবি জানান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাতে রাজি না হওয়ায় তারা সরকারি কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সড়ক অবরোধ করে।
পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোখলেছুর রহমান জানান- বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ানসহ ৪১ শ্রমিকের নাম দিয়ে এবং অজ্ঞাত অসংখ্যক শ্রমিকের নামে শনিবার রাতে খনির ব্যবস্থাক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান বাদি হয়ে মামলা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ