Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পরিচয় হারানোর শঙ্কা কাশ্মীরে

জম্মু-কাশ্মীরে অবকাঠামো নির্মাণে অবাধ সুযোগ নিরাপত্তা বাহিনীর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০২০, ১২:০২ এএম

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা আগেই বাতিল হয়েছে। নতুন বাসস্থান আইনে কাশ্মীরের বাইরের লোকজনও সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ পাবেন। এ অবস্থায় নিজ ভূমিতে পরবাসী হওয়া এবং পরিচয় হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন কাশ্মীরীরা। দেশভাগের সময় কাশ্মীরের যে অংশ ভারতে পড়ে সেখানে ঘটে চলা অনেক পরিবর্তন এবং বড় বড় ঘটনা নিজ চোখে দেখেছেন ৭৫ বছরের কবি ও ইতিহাসবিদ জারিফ আহমেদ জারিফ। যিনি এখন কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ সংস্কৃতি, ভূমির সুরক্ষা এবং সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাগ্য নিয়ে দারুণ চিন্তিত। কারণ, গত মে মাসে ভারত সরকার কাশ্মীরে ওই স্থায়ী বাসস্থান আইন পাস করেছে। শ্রীনগরের বাসিন্দা জারিফ টেলিফোনে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমাদের কাশ্মীর একটি সাজানো বাগান। নতুন আইন লুটেরাদের জন্য সেই বাগানে প্রবেশের দ্বার খুলে দিয়েছে। তারা সব ধ্বংস করে ফেলবে। ‘‘সেই দিন আর খুব বেশি দূরে নয় যখন আমরা আমাদের ভূমি ও জঙ্গলের অধিকার থেকে বঞ্চিত হব। আমাদের চাকরির সুযোগ ও অর্থনৈতিক উৎস কেড়ে নেওয়া হবে। নিজেদের ভূমিতেই কাশ্মীরিরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত হবে।” ভারতের সংবিধানে বিশেষ মর্যাদার কারণে আগে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে বাইরের মানুষ জমি কিনতে পারতেন না। কিন্তু ২০১৯ সালের অগাস্টে ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে রাজ্যটিকে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে কেন্দ্রশাসিত দুইটি আলাদা অঞ্চলে ভাগ করে। রয়টার্সের অপর এক খবরে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য কাশ্মীরে জমি অধিগ্রহণ সহজ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের এক নির্দেশনায় বিতর্কিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর থেকে ১৯৭১ সালের জমি অধিগ্রহণ আইন বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে সেখানে অবস্থানরত সেনারা স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই কাশ্মীরে জমি অধিগ্রহণ করতে পারবেন। পূর্বে এই অঞ্চলে ভারতের সেনা, বিএসএফ, সিআরপিএফ-এর প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণে জম্মু-কাশ্মীরের স্বরাষ্ট্রদপ্তরের অনুমতির প্রয়োজন হতো। আল-জাজিরা ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে এই অঞ্চলে অবকাঠামো নির্মাণের অবাধ সুযোগ করে দেয়া হলো নতুন এই আইনের । মে মাসে এক আইনে ভারত সরকার বহিরাগতদের কাশ্মীরে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি প্রদান করে। গত বছরে ৫ আগস্ট ভারত সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা’ বাতিল করে। পার্লামেন্টে পুনর্গঠন বিল পাশ করে রাজ্য ভেঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হয়। একই সময়ে কাশ্মীরে কড়া নিরাপত্তা আরোপ করা হয়, হাজারো অধিকার কর্মী, ছাত্র-তরুণ ও রাজনীতিবিদদের গ্রেপ্তার করা হয়। কাশ্মীরি পন্ডিতদের সংগঠন বিশেষ মর্যাদা বাতিলের বর্ষপূর্তিতে পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা ও সংবিধানের ৩৭০ ধারা পুনর্বহালের আবেদন জানিয়েছে। রয়টার্স, আল-জাজিরা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শঙ্কা-কাশ্মীর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ