Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘মামলার সঙ্গে সম্পর্কহীন হাইকোর্টের রায়’

নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা আপিলের রায় প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

নদীকে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণা করে দেয়া রায়ে ১৭ দফা নির্দেশনার বিরুদ্ধে করা আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল বুধবার এ তথ্য জানান আপিলকারী প্রতিষ্ঠানের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এ রায় দেন। আপিলের রায়ে হাইকোর্টের ১৭ দফা নির্দেশনার সমালোচনা করা হয়। নদীর তীরে গড়ে ওঠা ‘নিশাত জুট মিল’ এ আপিল করে।

সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলেন, হাইকোর্টের রায়ে অনেক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যা প্রতিপালন সম্ভব নয়। আদালত কখনোই সরকারকে আইন করার জন্য নির্দেশ দিতে পারেন না, পরামর্শ দিতে পারেন। এর আগে ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের তৎকালিন ডিভিশন বেঞ্চ নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে রায় দেন। ওই রায়ে ‘নদী হত্যা মানুষ হত্যার মতোই অপরাধ’ বলে গণ্য করতে বলা হয়। বলা হয়, নদী দখল, ভরাট, নদী দূষণ ফৌজাদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

রায় বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ১৭ দফা নির্দেশনাও দেয়া হয়। এবং সেই রায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাতে বলেন হাইকোর্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ‘নিশাত জুট মিল’। শুনানি শেষে চলতিবছর ১৭ ফেব্রুয়ারি রায় দেন আপিল বিভাগ।

আপিলের পক্ষে শুনানি করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি হাতে পেয়ে তিনি জানান, রায়ে সিএস ম্যাপ ধরে জিপিআরএস পদ্ধতিতে একজন বিচারকের জরিপ প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। নিশাত জুট মিলের কাছে সরকারের দেয়া লিজ ডকুমেন্ট তাদের দাবিকৃত জায়গার সাথে অমিল রয়েছে উল্লেখ করা হয়।

লিভ পিটিশন চলাকালে ২০০৩ সালের ক্রয় চুক্তির তফসিল পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছেন আপিলকারী। পরে রায়ে বলা হয়, পরিবেশ রক্ষার জন্য তুরাগ বা অন্য যেকোনো নদী, জলাশয়ের জায়গায় বা এর ফোরশোর এলাকা কোনো অবস্থায়ই লিজ বা বিক্রি করা যাবে না। সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সরকারকে অবশ্যই অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। কোনো সার্ভের সময় প্রথমেই সিএস ম্যাপে সার্ভে করতে হবে। পরে আরএস, অন্য কোনো উপায় নয়। হাইকোর্টের রায়ে মামলার সঙ্গে সম্পর্কহীন অনেক বিষয় বর্ণনা করা হয়েছে।

হাইকোর্টের রায়ের ৪ নং নির্দেশনায় ‘দূষণকারী কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ প্রদানের নীতিকে আইনের অংশ ঘোষণা করা’ কে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে আপিলের রায়ে। ৭ নং নির্দেশনার ‘নদী দখলকে ফৌজদারি অপরাধ ঘোষণা’, ১৪ নং নির্দেশনা ‘নদী দখলদারদের ব্যাংক ঋণ প্রদান বন্ধ’, ৫নং নির্দেশনা নদী দখলদারদের নির্বাচনে অযোগ্য’ সম্পর্কে হাইকোর্টের রায় সংশোধণ করা হয়েছে আপিলের রায়ে।

এই ৩ নির্দেশনাকে ‘সাজেশন’ কিংবা ‘মতামত’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। উক্ত নির্দেশনা সংশোধনের কারণ হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, আইন প্রণয়ন করা সম্পূর্ণ জাতীয় সংসদের এখতিয়ার। আদালত সংসদকে আইন প্রণয়নের নির্দেশ দিতে পারে না। তবে কোনো আইন সংবিধান পরিপন্থি হলে তা বাতিলের পরামর্শ দিতে পারেন। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ১৭ নির্দেশনায় টেলিভিশনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সুতরাং ১০-১৩ ও ১৬নং নির্দেশনার প্রয়োজন নেই।



 

Show all comments
  • মমতাজ আহমেদ ৬ আগস্ট, ২০২০, ২:৫৯ এএম says : 0
    নদী বাচিয়ে রাখতে হলে সবাইকে কঠোর হতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • রোদেলা ৬ আগস্ট, ২০২০, ৩:০১ এএম says : 0
    আমাদের দেশের সব নদীকে রক্ষা করার সময় এসেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • কামাল ৬ আগস্ট, ২০২০, ৩:০২ এএম says : 0
    ভবিষ্যতে আর কেউ যেন নদী দখলের সাহস না করে।
    Total Reply(0) Reply
  • আজিজ ৬ আগস্ট, ২০২০, ৩:০৩ এএম says : 0
    দখলদার ও দূষণকারীদের হাত থেকে নদীকে বাঁচাতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • তাওহীদ ৬ আগস্ট, ২০২০, ৩:০৪ এএম says : 0
    আশা করি সবাই আদালতে রায় মেনে চলবেন
    Total Reply(0) Reply
  • Karim ৬ আগস্ট, ২০২০, ৮:২৭ এএম says : 0
    অত্যন্ত যুগোপযোগী রায় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ কে অভিনন্দন।
    Total Reply(0) Reply
  • আঞ্জু ৬ আগস্ট, ২০২০, ৮:২৮ এএম says : 0
    রায়ের থেকেও বড় কথা রায়ের বাস্তবায়ন রায় বাস্তবায়িত না হলে তা দিয়ে কিছুই হবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ