Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মিরপুরের ডিসিসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তা বদলি

পল্লবী থানায় বিস্ফোরণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

রাজধানীর পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর মিরপুর বিভাগের ডিসিসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। ওজন মাপার একটি ডিজিটাল মেশিনে বোমা রাখার নেপথ্যে জড়িত ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে তাদের বদলি করা হয়েছে জানিয়েছে একটি সূত্র। গত শনিবার রাতে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত দু’টি পৃথক আদেশে তাদের বদলি করা হয়।

একটি আদেশে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মিরপুর বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদকে ডিএমপির প্রোটেকশন বিভাগে, পল্লবী জোনের এডিসি মো. মিজানুর রহমানকে ডিএমপির অপারেশন্স বিভাগে এবং এসি মো. ফিরোজ কাউছারকে ডিএমপির ওয়েলফেয়ার ও স্পোর্টস বিভাগে বদলি করা হয়েছে। অপর আরেক আদেশে পল্লবী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলামকে প্রসিকিউশন বিভাগে, পল্লবীর ইন্সপেক্টর-তদন্ত অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল মাবুদ গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগে ও ইন্সপেক্টর-অপারেশন্স অফিসার মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামকে গোয়েন্দা-ওয়ারী বিভাগে বদলি করা হয়।
এর আগে গত ২৯ জুলাই ভোর রাতে পল্লবী-কালশী কবরস্থানে অভিযান চালিয়ে তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পল্লবী থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি গুলি ও একটি ডিজিটাল ওয়েট মেশিনের মতো ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। সেগুলো থানার ডিউটি অফিসারের রুমে রাখা হয়। সেইদিন সকালে ডিজিটাল ওজন মেশিনের মতো ডিভাইসটি বিস্ফোরিত হয়। বোমা বিস্ফোরণে থানার দ্বিতীয় তলার একটি ঘরের জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। ডিজিটাল ডিভাইসটির মধ্যে দুটি তাজা বোমা রাখা ছিল। বিস্ফোরণে পল্লবী থানার পরিদর্শক ইমরানুল ইসলাম, এসআই সজীব খান, এসআই রুমি বেভরেজ হায়দায়, এএসআই অঙ্কুর কুমার ও সোর্স রিয়াজুল ইসলাম আহত হন। পরে ওই ঘটনা তদন্ত শুরু করে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে মিরপুর বিভাগ ও পল্লবী থানা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আগে থেকেই বিষয়টি অবগত ছিলেন বলে উঠে এসেছে। তাই তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে, গ্রেফতার রফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও মোশাররফ ১৪ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা দুটি মামলায় তাদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত থানার ভেতরে বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত কোনো জঙ্গিসংগঠনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। অপরদিকে পল্লবী থেকে গ্রেফতার তিন জনের একজন শহীদুল, তাকে ৩ দিন আগে একটি মাইক্রোতে তুলে নেয়া হয়েছিল বলে দাবি করছে তার পরিবার। এছাড়াও মোশাররফ হোসেন নামের আরেক আসামির বর্তমান ঠিকানায় গড়মিল রয়েছে।
আসামি মোশাররফ হোসেনের মা মনোয়ারা বেগম জানান, মোশাররফ পেশায় পোশাক শ্রমিক ছিলেন। তিনি ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যায় পরিবারের জন্য ঈদের কাপড় কিনতে যেয়েই নিখোঁজ হন। আমার ছেলে নির্দোষ। মামলার প্রাথমিক বিবরণীতে মোশারফের বর্তমান ঠিকানা ভুল দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। মোশাররফের স্ত্রী রোকশানা বেগম জানান, গত বছর স্বামীর সাথে তিনিও একটি পোশাক কারখানায় কাজ শুরু করেন। গত ২৮ জুলাই কাজ শেষে মোশাররফ ঈদের কাপড় কিনতে গিয়ে আর বাড়ি আসেনি।
ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের তদন্তকারী সংস্থা সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের ডিসি আবদুল মান্নান বলেন, আসামিরা রিমান্ডে আছে। তাদের রিমান্ড এখনো শেষ হয়নি। আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে এখনো কোনো জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ