Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘খুন হওয়া’ কিশোরী জীবিত উদ্ধার

তদন্ত কর্মকর্তাকে মামলার নথিসহ হাইকোর্টে তলব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

নারায়ণগঞ্জে বেঁচে থাকা স্কুল ছাত্রীকে ‘হত্যার দায় স্বীকার’ করে জবানবন্দি প্রদানসহ মামলা সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামীম আল মামুনসহ দু’জনকে সশরীরে রেকর্ডপত্র নিয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির। আদেশের বিষয়ে তিনি বলেন, দুই তদন্ত কর্মকর্তাকে তলবের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিমকে (চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) সব নথিপত্র পাঠাতে বলেছেন আদালত। আশা করছি তদন্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা পাওয়ার পর আদালত উপযুক্ততা বিবেচনায় সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামীম আল মামুন তিন আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। আবার ১৬৪ ধারার সেই জবানবন্দি ম্যাজিস্ট্রেটও রেকর্ড করেছেন। অথচ ৪৯ দিন পর মেয়েটি এসে বলল, আমি তো মরিনি! আমি তো ইকবাল নামের একজনের সঙ্গে প্রেম করে সংসার করছি। তাহলে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি কীভাবে বলা হলো, গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে মেয়েটিকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে?

এর আগে গত মঙ্গলবার ওই স্কুলছাত্রী ফিরে আসার ঘটনায় হাইকোর্টে একটি রিভিশন আবেদন করা হয়। আবেদনে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় করা মামলা এবং মামলা পরবর্তী প্রক্রিয়ার শুদ্ধতা, বৈধতা এবং যৌক্তিকতা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এছাড়া ওই মামলার নথি তলবেরও আবেদন করা হয়। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, মূল মামলার বাদী এবং আসামিদের বিবাদী করা হয়।

গত সোমবার ‘ধর্ষণের পর নদীতে লাশ ফেলে দেয়া স্কুলছাত্রী ৪৯ দিন পর জীবিত প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের দৃষ্টিতে আনেন অ্যাডভোকেট শিশির মনিরসহ পাঁচ আইনজীবী।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নারায়ণগঞ্জ সদরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকার স্কুলছাত্রী গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর ১৭ জুলাই সদর মডেল থানায় একটি জিডি করেন স্কুলছাত্রীর বাবা। এক মাস পর ৬ আগস্ট একই থানায় স্কুলছাত্রীর বাবা অপহরণ মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বন্দর উপজেলার বুরুন্ডি খলিলনগর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২২) ও তার বন্ধু বুরুন্ডি পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে রকিবকে (১৯)। তাদের ওই দিনই গ্রেফতার করা হয়। দু’দিন পর গ্রেফতার করা হয় বন্দরের একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার বাসিন্দা নৌকার মাঝি খলিলকে (৩৬)।

গত ৯ আগস্ট পুলিশ জানায়, স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে আসামিরা। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় এ ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। অথচ ২৩ আগস্ট দুপুরে বন্দরের নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকায় জীবিত এবং সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায় নিখোঁজ স্কুলছাত্রী দিশাকে। সে নিজে তার মাকে একটি দোকান থেকে কল করে ৪ হাজার টাকা চায়। বাবা-মা এতে অবাক হয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। পরে স্কুলছাত্রীকে নিয়ে তারা থানায় হাজির হন। তাদের সঙ্গে ছিল কিশোরীর স্বামী ইব্রাহিম। তাকে জীবিত অবস্থায় পাওয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশের তদন্ত ও আদালতে দেয়া জবানবন্দিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তদন্ত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ