Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সঙ্ঘাতে জড়ালে ভারতের ‘মারাত্মক’ ক্ষতি হবে -চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৩০ পিএম | আপডেট : ১০:১৪ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

লাদাখ সীমান্ত নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে সঙ্ঘাতের প্রতিযোগিতা করতে চাইলে অতীতের তুলনায় ভারতকে আরও মারাত্মক সামরিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবামাধ্যম গ্লোবাল টাইমস। মঙ্গলবার পশ্চিম হিমালয়ে দু’টি পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন দেশের মধ্যে নতুন করে সীমান্ত উত্তেজনার পর এ খবর প্রকাশ করে চীন।

গত সোমবার নয়াদিল্লির কর্মকর্তারা জানান যে, ভারতীয় বাহিনী পশ্চিম হিমালয়ের বিতর্কিত সীমান্তে চীনা সেনাদের একটি পাহাড় দখলের এক প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। একই দিনে চীনের সামরিক মুখপাত্র ভারতকে সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন যে, ভারতীয় সেনারা অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, চীনা সীমান্ত সৈনিকরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমানা পার করেনি।

গ্লোবাল টাইসের একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ভারত বলেছে, তারা চীনা সামরিক কার্যকলাপ ‘প্রিএমপ্টেড’ বা আগেই অনুমান করে পদক্ষেপ নিতে পেরেছিল। ‘প্রিএমপ্ট’ শব্দটি দেখায় ভারতীয় সেনারাই প্রথমে আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিয়েছিল এবং ভারতীয় সেনারাই অবস্থান নিতে শুরু করে। সম্পাদকীয়তে আরো যোগ করা হয়েছে, ‘ভারত একটি শক্তিশালী চীনের মুখোমুখি হয়েছে। মোদি এবং নয়াদিল্লির এই ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সমর্থন পাওয়ার স্বপ্ন দেখা উচিত না। তবে ভারত যদি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চায় সেক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে চীনের অনেক বেশি সরঞ্জাম ও ক্ষমতা রয়েছে। ভারত যদি কোনো সামরিক শোডাউন চায় তবে পিএলএ (পিপলস লিবারেশন আর্মি) ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ১৯৬২ সালের চেয়েও মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি করতে বাধ্য হবে।'

গত ২৯-৩০ আগস্ট রাতে লাদাখে প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে চীনা বাহিনী ফের আগ্রাসন চালিয়েছে বলে সোমবার ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়। উত্তেজনাপূর্ণ লাদাখ সীমান্তে দু’দেশের সেনাদের এ শোডাউনে ভারতের স্পেশাল ফোর্সের তিব্বতীয় বংশোদ্ভূত এক সেনা নিহত হন। তবে ভারত বা চীন কেউই এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। গত দুই মাসে এ সীমান্তে চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ২০ ভারতীয় সৈন্যের মৃত্যু হয়। সোমবার দু’পক্ষের কমান্ডাররা দুই এশিয়ান জায়ান্টের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত করতে বৈঠক করার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার চীনা সেনাদের বিতর্কিত হিমালয় পর্বত সীমান্তে উস্কানিমূলক পদক্ষেপ নেয়ার অভিযোগ আনে।

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সময়োচিত রক্ষণাত্মক পদক্ষেপের কারণে ভারতীয় পক্ষ একতরফাভাবে পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে বাধা দিতে সক্ষম হয়েছে।’ এক ভারতীয় কর্মকর্তা জানান, পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে লাদাখের একটি সীমান্তে চীন আগ্রাসনের চেষ্টা করার পর, চারটি কৌশলগত পাহাড়ের চূড়ায় সেনা মোতায়েন করে ভারত। চীন এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে যে, ভারতই সৈন্যদেরকে লাইন অফ একচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) অতিক্রম করে বিতর্কিত সীমান্তের ওপারে অনুপ্রবেশ করে এবং সুস্পষ্ট উস্কানিমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।

এদিকে, ভারতের সমর্থনে মুখ খুলেছে আমেরিকা। প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে চীনের আধিপত্য ঠেকাতে সোমবার শি জিনপিং সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন কূটনীতিক স্টিফেন বাইগান বলেছেন, ‘আমাদের কৌশল হচ্ছে চীনকে সব দিক দিয়ে আটকাতে হবে। আমরা নিরাপত্তার দিক থেকে চেষ্টা করছি, অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্টের চেষ্টাও প্রতিহত করার চেষ্টা করছি।’ গালওয়ানের নাম করে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে গালওয়ান উপত্যকার সীমান্ত হোক, কিংবা দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা, সর্বত্র এ চেষ্টা হচ্ছে। আর্থিক ভাবেও বেইজিংকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে।’ তিনি আরও জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম লক্ষ্যই হচ্ছে চীনের আর্থিক আধিপত্য রুখে চীন-মার্কিন অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখা। এ প্রেক্ষিতে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতিতে চীন বলেছে, ‘নতুন করে চীনের প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর গত ৭০ বছরে কোনও যুদ্ধ বা সঙ্ঘাতে প্ররোচনা দেয়নি চীন। কোনও দেশের এক ইঞ্জিও জমি দখল করেনি। চীনা সীমান্ত বাহিনী কঠোরভাবে এলএসি মেনে চলে। কখনও সীমা অতিক্রম করেনি তারা।’



 

Show all comments
  • Jack Ali ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮:৪২ পিএম says : 0
    China is lying, they capture part of Kasmir/Uighur muslim land/Tibbet.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ