Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্রিটিশ সংসদে জনসনের বিতর্কিত আইন নিয়ে বিতর্ক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:৪৩ পিএম

ব্রেক্সিট চুক্তি ভেঙে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়েছে বরিস জনসনের সরকার। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইইউ। এমন প্রেক্ষিতেই ব্রিটেনের সংসদে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করার উদ্যোগ নিয়েই থামছেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার মতে, ইইউ ব্রিটেনের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি করে ব্রিটেনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ বানচাল করে ইইউ এমনটা করতে চাইছে বলে জনসন দাবি করেছেন। উল্লেখ্য, খাদ্য সরবরাহে বিঘ্ন এড়াতে ইইউ ব্রিটেনের কাছে কয়েকটি বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান দাবি করছে। চলতি সপ্তাহে ব্রাসেলসে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনায় বিষয়টি আবার উঠে আসার কথা।

তবে, ইইউ এমন দাবিকে ভুল ও প্ররোচনা হিসেবে গণ্য করছে। একাধিক ইইউ নেতা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কোভেনি এমন দাবিকে ‘সত্য নয়’ বলে জানিয়েছেন। তার মতে, এমন কোনো প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে না। ডাউনিং স্ট্রিট থেকে এমন প্ররোচনামূলক মন্তব্যের নিন্দা করেন তিনি। অস্ট্রিয়ার অর্থমন্ত্রী গ্যারনট ব্ল্যুমেল বলেন, ‘যখনই কোনো অগ্রগতি সম্ভব হয়, কোনো না কোনো সময় ব্রিটেন তার প্রতিশ্রুতি পালন করতে চায় না।’

ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও বিষয়টিকে ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে। সোমবার ব্রিটিশ সংসদের নিম্ন কক্ষে নতুন আইনের খসড়া নিয়ে বিতর্কের আগেই একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আন্তর্জাতিক মঞ্চে ব্রিটেনের ভাবমূর্তি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। দুই সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ‘সানডে টাইমস’ সংবাদপত্রে সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে লিখেছেন, যে এমন উদ্যোগ সরকার ও দেশের জন্য লজ্জাজনক। জন মেজর ও টোনি ব্লেয়ার এমন খোলাখুলি বরিস জনসনের সমালোচনা করায় রাজনীতি জগত উত্তাল হয়ে উঠছে।

সংসদের উভয় কক্ষে সরকারি দলের অনেক ব্রেক্সিটপন্থি নেতাও চুক্তি ভাঙার বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না। তবে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে তারা খোলাখুলি বিদ্রোহের পথে যাবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়। জনসনের সরকার যত দ্রুত সম্ভব আইন প্রণয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে জনসন নিজে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রায় ২৫০ এমপি-র সঙ্গে কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি গত বছর সংসদের অচলাবস্থার কথা মনে করিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর চাপের মুখে কিছু সংসদ সদস্য ব্রেক্সিট চুক্তিতে যে কোনো রদবদলের ক্ষমতা সরকারের বদলে সংসদের হাতে রাখার উদ্যোগ নিচ্ছেন।

চলতি মাসে ব্রিটেনের সরকার সত্যি ব্রেক্সিট চুক্তি ভেঙে আইন প্রণয়ন করলে ইইউ সে দেশের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবার উদ্যোগ নিচ্ছে। সেইসঙ্গে কিছু শাস্তিমূলক পদক্ষেপ সম্পর্কেও ভাবনাচিন্তা চলছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দুই পক্ষের মধ্যে কোনো বোঝাপড়া সম্ভব হলে এমন পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন পড়বে না। তবে একবার আন্তর্জাতিক আইন ভাঙার উদ্যোগ নিয়ে ব্রিটেনের বিশ্বাসযোগ্যতা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিতর্কিত আইন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ