Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মালামাল পরিবহনের জন্য খরচ দেয়া হয়নি

বিনা মূল্যের ঘরে অর্থ ব্যয়

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম


 নেছারাবাদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের অধীনে নির্মাণাধীন ঘরের মালামাল বাড়ি পর্যন্ত নিতে প্রতিটি দরিদ্র পরিবারকে খরচ করতে হচ্ছে ১০-২০ হাজার টাকা। উপজেলা সদরের চারটি ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে (এক স্থান থেকে অন্যটির দূরত্ব প্রায় ২-৩ কিলোমিটার) ইট, বালু, সিমেন্ট ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীসহ ১০ মেট্রিক টনেরও বেশি মালামাল নিজ খরচে প্রত্যন্ত এলাকার বাড়ি পর্যন্ত নিতে হয় প্রতিটি পরিবারকে।
প্রতিটি ঘর নির্মাণের জন্য ৩৩শ’ পিস ইট, ২২৫ টিন আস্তর বালু, ৩০ ব্যাগ সিমেন্ট, ৬০ বর্গফুট ইটের খোয়া, সাড়ে ১৫ ঘনফুট চেড়াই কাঠ, দুই জোড়া লোহার দরজা, তিন জোড়া লোহার জানালা, ২০ কেজি রড ও ২৫ পিস টিনসহ কিছু লোহা লক্কর দেয়া হচ্ছে। অনেকে এতোগুলো সামগ্রী একসাথে নিতে না পারায় একাধিকবার ট্রলার ভাড়া করে নিতে বাধ্য হচ্ছে।
বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব মালামাল ট্রলারে ওঠানোর সময় অতিরিক্ত লেবার খরচ পরিশোধ করতে হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ইটসহ ভারি মালামাল ট্রলারে করে বাড়ির কাছাকাছি খাল পাড়ে নেয়ার পরে আরেক দফা টানা হেচড়া করে নির্মাণস্থলে নিতে হয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দফতরের তত্ত¡াবধানে এসব ঘর নির্মাণ করা হলেও মালামাল পরিবহনের জন্য এখন পর্যন্ত কাউকে কোনো খরচ দেয়া হয়নি।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের অধীনে এ উপজেলায় নতুন করে ৪৮টি ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দফতরের তত্ত¡াবধানে এসব ঘর নির্মাণ করা হলেও মালামাল পরিবহনের জন্য তেমন কোনো বরাদ্ধ রাখা হয়নি।
বলদিয়া ইউপির রাজাবাড়ি গ্রামের মাকসুদা বেগম বলেন, ছারছীনা ইটভাটায় গিয়ে ইট, খোয়া, টিন এবং ওখান থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার মিটার দূরে জগন্নাথকাঠি চেয়ারম্যান বাড়ির ঘাটে গিয়ে বালু, সিমেন্ট, আরেকদিন দরজা-জানালা ও একটি স্ব-মিল থেকে চেড়াই কাঠসহ ঘরের মালামাল আনতে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়াও ভিটি ভরাট করতে ৭ হাজার টাকার বিট বালু তাদের ক্রয় করতে হয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন একবেলা মিস্ত্রির খাবার খরচ দিতে হয়েছে।
খায়েরকাঠি গ্রামের নির্মল মল্লিক বলেন, ঘরের মালামাল বাড়ির কাছে বড় খালপাড় পর্যন্ত আনতে তার ১২-১৩ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। পরে ২ জন লোককে দুইদিনে দুই হাজার টাকা দিয়ে ঘর নির্মাণস্থলের কাছে এনে রাখি। এছাড়াও ৬ হাজার টাকার ভিটির বালু কিনতে হয়েছে তার। নির্মল মল্লিক বলেন, ৩ জন মিস্ত্রিকে প্রতিদিন দুপুরে এক বেলা খাবার দিচ্ছেন তিনি। ব্যাসকাঠি গ্রামের মো. হেলাল, চাদকাঠি গ্রামের সুফিয়া বেগম, আমতলার সুদেব মন্ডল, মৈশানীর আ. রহিম, সারেংকাঠির হেলেনা, রুমা বেগমসহ ঘর পাওয়া প্রত্যককে মালামাল নিতে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস জাহান বলেন, সদর ইউনিয়নের মানুষ ১০-১২ হাজার টাকায় মালামাল নিতে পারলেও দূরের দরিদ্র মানুষের ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, পিআইওর কাছে ঘরের ইস্টিমেট চেয়েছিলাম তিনি সেটি দেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও গৃহ নির্মাণ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মানষ কুমার দাস জানান, ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় একটা ভালো মানের ঘর করা সম্ভব নয়। প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যে মালামাল পরিবহনে কিছু সমস্যা হলেও চেষ্টা করছি ঘরগুলো যেন টেকসই ও সুন্দর হয়।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিবহন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ