Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শার্শায় রোগীরা অতিষ্ট দালালদের তৎপরতায়

মহসিন মিলন, বেনাপোল থেকে | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত ওষুধের দোকানের দালাল চক্রের অপতৎপরতায় অতিষ্ট হয়ে ওঠছে রোগী ও তাদের স্বজনরা। অতিরিক্ত ওষুধের মূল্য মেটাতে দিশেহারা হয়ে পড়ছে তারা। দালালরা স্থানীয় হওয়ায় রোগীরা অসহায় হয়ে পড়ছে তাদের কাছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে গড়ে ওঠেছে ৯টি ওষুধের দোকান। যার অধিকাংশই ড্রাগ লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্টবিহীন। ৫ম শ্রেণি পাশ এসব দোকানীরা ওষুধের নাম ঠিকানা পড়তেই পারে না। সূত্র আরও জানায়, অশিক্ষিত এসব ওষুধ ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে সিরিয়ালের সিস্টেম করে নিয়েছে। দিনে একজন দোকানী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা রোগীদের ব্যবস্থাপত্র জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে তাদের দোকান থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। তবে এসব নিয়ে প্রতিদিনই রোগীর স্বজনদের সাথে ঝগড়া থেকে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে।
শার্শার গোড়পাড়া গ্রামের আজিজুর রহমান জানান, তিনি গত ২২ সেপ্টেম্বর শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র দেয়া মাত্রই আলাল ফার্মেসির দালাল আসাদুল তাদের হাত থেকে প্রেসক্রিপশন ছিনিয়ে নেয় এবং প্রতিটি গ্রুপ পাল্টিয়ে অন্য ওষুধ সরবরাহ করেন। পরে হাসপাতালে কর্মরত নার্সের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ওষুধ পাল্টাতে গেলে রোগীর স্বজনদেরকে লাঞ্চিত করে আলাল ও আসাদুল। একই ঘটনা ঘটে গত ২৩ সেপ্টেম্বর। শার্শার শ্যামলাগাছী গ্রামের শিপন নামের এক রোগী শ্বাষকষ্ট নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। এদিন সিরিয়াল ছিল হুমাইরা ফার্মেসীর দালাল স্বপনের। ওষুধের দাম ৭০০ টাকা হলেও তাদের কাছ থেকে নেয়া হয় ১২শ’ টাকা। বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সাথে দোকানীর কথা কাটাকাটি হলেও এখনো টাকাটি ফেরত পায়নি তারা। উপরন্তু তাদেরকে হুমকি দেয়া হয় বলেও জানা যায়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের বিসমিল্লাহ ফার্মেসীর মালিক হাসানুজ্জামান বলেন, এখানে অধিকাংশ মালিক লেখাপড়া জানে না। ডাক্তারের ব্যবস্থ্যাপত্র পড়ার মতো ক্ষমতা তাদের নেই। তারপরেও তারা দেদারছে মানুষ ঠকিয়ে চলেছে। আবার অনেকের নেই ড্রাগ লাইসেন্স। নেই ফার্মাসিস্টের অভিজ্ঞতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মকর্তা জানান, বর্হিবিভাগে রোগী আসা মাত্রই ফার্মেসীগুলোর দালালরা হামলিয়ে পড়ে। রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে ব্যবস্থ্যাপত্র কেড়ে নিয়ে তারা অধিক মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করে। অন্য ফার্মেসী থেকে ওষুধ আনতে গেলে হতে হয় লাঞ্চিত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার কাছ থেকে শুনলাম, আগামীকাল আসুন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোগীরা-অতিষ্ট
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ