Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন চেয়ারম্যানে পুনর্গঠিত হচ্ছে শেয়ারবাজার

ওয়েবিনারে সালমান এফ রহমান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেয়ার কারণে শেয়ারবাজার পুনর্গঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে শেয়ারবাজারের পতন নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। তবে এখন তা আর নেই। নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেয়ায় শেয়ারবাজার পুনর্গঠন হচ্ছে।
গতকাল ‘ফিউচার অব বাংলাদেশ লেদার সেক্টর ইন দ্যা আফটারম্যাথ অফ কোভিড-১৯’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অর্থনৈতিক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার ফোরাম (ইআরএফ) ওয়েবিনারটি আয়োজন করে।

সালমান ফজলুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যখন চামড়া শিল্প দেখভাল শুরু করি তখন অতীতকে নিয়ে টানাটানি করতে চাইনি। কারণ আমাদের অনেক ভুল রয়েছে, আমি তা স্বীকার করি। যারা ভুল করেছে তাদের ধরে শাস্তি না দিয়ে যেসব সমস্যা এ শিল্পে ছিলো তা দূর করার চেষ্টা করছি। আসলে ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছু রয়েছে। তিনি বলেন, এই শিল্পের বর্তমান দূরবস্থার জন্য শুধু সরকার দায়ী নয়, এর দায় পরিবেশবাদীদেরও রয়েছে। যখন হাজারীবাগে চামড়া নিয়ে কাজ হতো তখন এটাকে স্থানান্তরের জন্য লেখালেখি শুরু হয়, পরিবেশবাদীরা কথা বলতে শুরু করে। পরে তা সাভারে নেয়া হয়। যখন সাভারে নেয়া হয় তখন অবকাঠানো বলতে কিছুই উন্নত হয়নি। রাস্তাঘাটও ভালো ছিলো না। সাভারের ওই প্রজেক্টে চীনা একজন ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হয়, কিন্তু তিনি কাজটা ভালোভাবে শেষ করতে পারেননি। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, করোনার পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎ গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ওখানকার অবকাঠানো প্রায় শেষ হয়ে গেছে। সাভারের প্রজেক্টে অর্থ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন প্রজেক্ট শুরু হয় তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১২৫ কোটি টাকা। তখন প্রজেক্টের মধ্যে সিইটিপি ছিলো না। যখন এটা ইনক্লুড করা হয় তখন এর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। পরে ডিজাইন থেকে পাওয়ার প্লান্ট বাদ দেয়ায় খরচ কমেছে। বর্তমানে এই ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা।

সালমান এফ রহমান বলেন, হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি শিল্প স্থানান্তরের কারণে অনেক ছোট ছোট শিল্পগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। হাজারীবাগে যখন ছিলো তখন ছোট ছোট উদ্যোক্তারা সেখান থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে প্রডাক্ট তৈরি করতো। কিন্তু সাভার থেকে কাঁচামাল এনে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারছেন না। তিনি বলেন, চীনের সাথে ডিউটি ফ্রি বাণিজ্য শুরু হলে আমাদের দেশের উদ্যোক্তারা বেশ লাভবান হবেন। একই সঙ্গে চামড়া শিল্পও বেশ সমৃদ্ধ হবে।

দেশের চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্বেও প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়ার পেছনে বেশকিছু কারণকে দায়ী করেছেন উদ্যোক্তারা। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে খাতের উন্নয়নে একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। আলোচনায় অংশ নিয়ে অ্যাপেক্স গ্রুপের প্রধান সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, চামড়াজাত পণ্যের কাঁচামাল থাকা স্বত্তেও আমরা প্রত্যাশিত অগ্রগতি করতে পারিনি। অথচ ভিয়েতনাম কাঁচামাল না থাকা সত্বেও এ খাতের রফতানিতে বহুদূর এগিয়ে গেছে। এ খাতের উন্নয়ন একক সংস্থার উপর দায়িত্ব দেয়ার দাবি জানান তিনি।

এ সময় বক্তারা প্রায় এক যুগেও সাভারের চামড়া শিল্প নগরীর যথাযথ প্রস্তুত না হওয়া, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকা এবং বর্জ্য পাশের ধলেশ্বরী নদীতে যাওয়ায় পরিবেশ দূষণ এবং এসব কারনে আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠানের (এলডবিøওজি) সনদ না পাওয়ার মত বিষয়টি তুলে ধরে এসব ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। বিশেষত বর্তমান বাস্তবতায় প্রকল্পটি এখন একটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন কেউ কেউ। এ পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় প্রধান রফতানিখাত হিসেবে এ খাতের ভবিষ্যত রক্ষায় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে দ্রুত ও যথাযথ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান তারা।
ওয়েবিনারে আয়োজনে সহযোগিতা করে রিসার্স এন্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (রেপিড) এবং দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রেপিড’র চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক ও নির্বাহী পরিচালক ড. আবু ইউসুফ। ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, এশিয়া ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ, বিটিএর চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, বিএফএলএলএফইএ’র সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সালমান এফ রহমান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ