Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আলোচিত প্রতারক তানিয়া সহযোগীসহ গ্রেফতার, লুণ্ঠিত টাকা ও গাড়ি উদ্ধার

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০২০, ৩:৪৬ পিএম | আপডেট : ৬:২২ পিএম, ৪ অক্টোবর, ২০২০

সারা দেশের আলোচিত বিভিন্ন থানায় ৩০ টির অধিক প্রতারনা মামলার আসামি প্রতারক তানিয়া সিকদার কে তার সহযোগিসহ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ এ সময় তার হেফাজত থেকে লুণ্ঠিত ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ও একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করে।

গোপন সংবাদের ভিওিতে খবর পেয়ে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানার এস আই আবুল হাসান অভিযান চালিয়ে রবিবার ভোরে তাকে গাজীপুরের আমতলী এলাকা হতে গ্রেফতার করেন। এ সময় তানিয়ার সহযোগি আকাশ কেও পুলিশ গ্রেফতার করে।
এর আগে মুক্তা নাহার নামে এক মহিলা বাদী হয়ে প্রতারক তানিয়ার বিরুদ্ধে টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত প্রতারক তানিয়ার হেফাজত থেকে লুণ্ঠিত ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ও একটি প্রাইভেট উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৩০ টির অধিক প্রতারনার মামলা রয়েছে। এর আগে প্রতারনার অভিযোগে তানিয়া একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। জামিনে বেড়িয়ে এসে সে আবার তার পুরনো পেশা প্রতারনা শুরু করেন।

পুলিশের জিঞাসাবাদে মাদকাসক্ত তানিয়া জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি প্রতারণা করেছে সে। রূপ-যৌবণকে পুঁজি করে অভিনব কায়দায় ফাঁদে ফেলে বাসা বাড়িতে ঢুকে অর্থ ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়াই তার কাজ। তানিয়ার ছদ্মনামের অভাব নেই। এই তরুণী ভয়ংকর এক প্রতারক। নিজেকে কখনও ডাক্তার, কখনও আইনজীবী, কখনও মডেল, কখনও নায়িকা পরিচয় দিয়ে থাকে। সুন্দরী হওয়ায় তাকে প্রথম দেখায় যে কারওরই চোখ আটকে যায়। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় গাজীপুরের মেয়ে তানিয়া। পোশাকে আধুনিকতা, পরনে ব্রান্ডের দামি ঘড়ি, অলংকার, জুতা, চোখে চশমা, রঙ্গিন বেশে আর হালের ফ্যাশন সব মিলিয়ে এক মোহনীয় উপস্থাপনা। বেশ কয়েক বছর ধরেই এমন চেহারার আড়ালে চলছে রমরমা চুরি।

পুলিশ আরো জানায়,গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার রাজেন্দ্রপুরের গজারিয়া গ্রামের হাসান শিকদারের মেয়ে তানিয়া শিকদার (৩০)। থাকেন উত্তরায় বাসা ভাড়া নিয়ে। বছর কয়েক আগে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। এরপর তানিয়া তার দেবর ওয়ালিদ রহমানকে বিয়ে করেন। তার চলাফেরা দেখলে কেউ ভাবতেও পারবে না সে এত ভয়ংকর চোর। তানিয়ার বিরূদ্ধে রাজধানীর আদাবর, দারুস সালাম, তেজগাঁও, নিউ মার্কেট, দক্ষিণখান, মোহাম্মদপুর, বিমানবন্দর, উত্তরা, মিরপুর, কাফরুল, শাহজাহানপুরসহ বিভিন্ন থানায় ৩০টির ও বেশি প্রতারণার মামলা রয়েছে।

তানিয়া সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন সূত্রে বিত্তশালী লোকজনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে। বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বজনদের তথ্য সংগ্রহ করে। সুযোগ বুঝে তাদের কাছের লোক কিংবা স্বজন পরিচয় দিয়ে বাসায় যায়। ডলার ভাঙানোর বা জমা রাখার ফাঁদ ব্যবহার করে কখনও পানি খাওয়ার বাহানা, কখনও অন্য কোনো বাহানায় অর্থকড়ি নিয়ে সটকে পড়েন। চুরি করে নিয়ে যাওয়া স্বর্ণালংকার প্রতারণা চক্রের সদস্যেদের মাধ্যমে বিভিন্ন জুয়েলার্সে বিক্রি করেন।
গত ২৬ মে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর তিনি পাঁচমাস কারাগারে ছিলেন। মাসখানের আগে জামিনে মুক্তি পেয়ে গাজীপুরে অভিনব পন্থায় প্রতারণা শুরু করেন।

টঙ্গী পশ্চিম থানার এসআই আবুল হাসান জানান, গত মাসে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মুক্তা নাহার নামে এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার ভোরে গাজীপুরের আমতলী এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। আটকের সময় তানিয়ার কাছ থেকে ২ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা সহ একটি প্রাইভেট কার যাহার নাম্বার (ঢাকা মেট্রো-গ-১১২৩১৫) উদ্ধার করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রতারক গ্রেফতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ