Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য সেবার সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের তামাক নিয়ন্ত্রনে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২০, ৭:৫৬ পিএম

আর্ন্তজাতিক চুক্তি এফসিটিসির আর্টিকেল ৫ দশমিক ৩-এ তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক নীতি সুরক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রাষ্ট্রের জনগনের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে গৃহিত পদক্ষেপসমুহ বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য অধিদফতর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অংক্রামক রোগ ও তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কর্মসূচী গতিশীল করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুনিদিষ্ট একটি আচরণবিধি থাকা প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের নতুন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সোমবার (৫ অক্টোবর) ‘এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে কোড অব কন্ডাক্ট প্রণয়ন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তরা এ কথা বলেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট যৌথভাবে এ সভা আয়োজন করে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিথি স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর ডা. নাসিমা সুলতানা, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এস এম মুস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী।

মূল প্রবন্ধে সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেকটা এগিয়েছি। দেশে তামাক নিয়ন্ত্রনে প্রণীত হয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আইন ও নীতি। এ মূহূর্তে এগুলোর সুরক্ষা অত্যন্ত জরুরী। তামাক কোম্পানীগুলোর হস্তক্ষেপের ফলে অর্জিত পলিসিগুলোর বাস্তবায়ন ধীর গতিতে এগুচ্ছে। আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) স্বাক্ষরকারী রাস্ট্র হিসেবে এর আর্টিকেল ৫.৩ অনুসারে তামাক নিয়ন্ত্রণসহ জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত সব ক্ষেত্রকে তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।

ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ সরকার জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করণের অংশ হিসাবে দেশে ইতোমধ্যেই তামাক নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করা হয়েছে দৃষ্টান্তমূলক কিছু পদক্ষেপ। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তামাকমুক্তকরণে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, তামাকের ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যান্সার, হার্ট এটাক, স্ট্রোক, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। এসব রোগ প্রতিরোধকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণসহ অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারের চলমান কর্মসূচিকে জোরালো করতে হবে।

ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, দেশকে তামাকমুক্ত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সরকারী সকল ফরম এবং সিটিজেন চার্টারগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি যুক্ত করা প্রয়োজন। সরকারী স্বাস্থ্য সেবার সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের তামাক নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী। স্বাস্থ্য অধিদফতরে নিয়োগের ক্ষেত্রে অধূমপাীয়দের অগ্রাধিকার ও ধূমপায়ী ও তামাক ব্যবহারকারীদের নিরুৎসাহিত করে বার্তা প্রদাণ করা যেতে পারে।

এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো সরকারী কর্মকর্তাদের যুক্ত করে সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রমসহ নানা ধরনের কর্মসূচীর আয়োজন করছে। পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লংঘন করে নিজেদের নামসহ সেগুলো গণমাধ্যমেও প্রচার করছে। তামাক কোম্পানীর এসকল কার্যক্রমের প্রধান উদ্দেশ্য নিজেদের পণ্যের প্রসার এবং নীতি প্রণেতাদের প্রভাবিত করা। তামাক নিয়ন্ত্রণের সুরক্ষার প্রয়োজনেরই এফসিটিসি এর আর্টিকেল ৫.৩ অনুসারে সরকারী কর্মকর্তাদের আচরণবিধি প্রণয়ন করা জরুরী।

মুক্ত আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর কান্ট্রি ম্যানেজার নাসির উদ্দিন শেখ, হার্ট ফাউন্ডেশন প্রোগ্রাম অফিসার মাহবুবুস সোবাহান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এইড ফাউন্ডেশন এর প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সাগুফতা সুলতানা, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি এর নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদ, ডাস এর উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুল, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের কর্মকর্তা অদূত রহমান ইমন, টোব্যাকো কন্ট্রোল রিসার্স সেল এর কর্মসূচী ব্যবস্থাপক ফারহানা জামান লিজা প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ