Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ফের বিতর্কে জড়ালেন করোনা আক্রান্ত ট্রাম্প

হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ঘোরাঘুরি!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৪ এএম

যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হতে পারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এবং তা সোমবারের আগেই। রোববার সকালে এমনটাই জানিয়েছিলেন ট্রাম্পের চিকিৎসকরা। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাসপাতাল থেকে আচমকা বেরিয়ে পড়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। একটি উন্নত দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েও করোনা সংক্রান্ত সমস্ত বিধি এভাবে অমান্য করায় অবাক হয়েছেন সকলে। তার এই আচরণে স্তম্ভিত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পরেও এক জন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে কী ভাবে এমন ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ কাজ করতে পারলেন ট্রাম্প। তাতে অবশ্য মার্কিন প্রসেডিন্টের কোনও ভ্রৃক্ষেপ নেই। ওই দিনই টুইটারে প্রকাশিত এক ভিডিওতে ট্রাম্পকে বলতে দেখা যায়, ‘কোভিডের চিকিৎসা চলাকালীন অনেক কিছুই শিখলাম, জানলাম। এটাই আসল বিদ্যালয়। বিষয়টি ভাল ভাবে আয়ত্ত করেছি।’ রোববার প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। মুখে মাস্ক। সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে উঠে পড়লেন। তার পর সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে সেখান থেকে বেরিয়েও গেলেন। যদিও পরে আবার হাসপাতালেই ফিরে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও সামলোচনা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না ট্রাম্প। এক জন চিকিৎসাধীন ব্যক্তিকে বাইরে বেরনোর ছাড়পত্র দিলেন কী ভাবে। ট্রাম্পের চিকিৎসকদের ভ‚মিকা নিয়েও এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার মেরিল্যান্ডের ওয়াল্টার রিড সেনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ট্রাম্প। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের কোভিডের হালকা উপসর্গ রয়েছে। চিকিৎসাও চলছিল তার। রোববার সকালে হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক সন কনলি জানান, চিকিৎসায় ভালই সাড়া দিচ্ছেন। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান চিকিৎসক রবার্ট ওয়াচারের মতে, ‘ট্রাম্পের যে ধরনের উপসর্গ ধরা পড়েছে, তার কোনও রোগীর এমন উপসর্গ ধরা পড়লে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন দিনের মধ্যে বাইরে যাওয়ার অনুমতি কোনও ভাবেই দিতেন না। এক জন চিকিৎসক হিসেবে এমন দেওয়া মোটেই যুক্তিগ্রাহ্য নয়।’ ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক উইলিয়াম স্যাফনার আবার বলেছেন, ট্রাম্প সোমবারে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া খুব একটা ভাল সিদ্ধান্ত নয়। তার দাবি, এই ঘটনার পিছনে চিকিৎসকরা দায়ী নন, প্রেসিডেন্ট এবং তার রাজনীতিক সঙ্গীদের চাপেই হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
চিকিৎসকদের দাবি, এভাবে বাইরে বেরিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আর পাঁচজন সাধারণ মানুষেরই জীবন বিপন্ন করে তুললেন। এতে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী যেকোনও ব্যক্তি সংক্রমিত হতে পারেন। তাছাড়া গাড়িতে থাকা চালক কিংবা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরাও আক্রান্ত হতে পারেন।
এদিকে, ওই সময় ট্রাম্পের মুখে মাস্ক থাকলেও গাড়ির জানলার কাচ নামানো ছিল, যা দেখে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছে চিকিৎসকমহল। কেউ কেউ আবার এটাকে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর কৌশলও মনে করছে। জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার মেডিসিন বিভাগের প্রধান জেমস ফিলিপ বলেন, ‘ওই গাড়িতে থাকা প্রত্যেককেই ১৪দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ট্রাম্পের এই রাজনৈতিক নাটকের জন্য ওই মানুষগুলোর জীবন বিপন্ন হল। ওরাও এবার সংক্রমিত হতে পারে। মারাও যেতে পারে।’ দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে নিজেই করোনা সংক্রান্ত নিয়ম ভেঙেছেন ট্রাম্প। বিপন্ন করেছেন অন্যের জীবন। তাই কেউ আবার গোটা ঘটনাটিকে ‘লজ্জাজনক’ও আখ্যা দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিডের উপসর্গ ধরা পড়ার পর এক সপ্তাহ থেকে দশ দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারও কারও এর মধ্যে স্বাস্থ্যের অবনতিও হতে পারে। তাই এই সময়টা পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু ট্রাম্প ভর্তি হওয়ার দু’দিনের মধ্যেই ছাড়া পাওয়ায় যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। সূত্র : সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ