Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন জাতের নাবি আম মেহেদী-২

গোপালগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৩১ এএম

বাংলাদেশ নতুন নাবি জাতের (লেট ভ্যারাইটি) আম মেহেদী-২ । গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারে এ বছর এ জাতের আম উৎপাদিত হয়েছে। অক্টোবরের শুরুতেই এ জাতের আম পেকেছে। বাংলাদেশে লাভজনক নতুন জাতের এ আমের বানিজ্যিক চাষাবাদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টার সূত্র জানিয়েছে।
কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবীদ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ফল উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশবাসীর পুষ্টির চাহিদা পূরনের লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় ‘বছর ব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’ গ্রহন করে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ দেড় বছর আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে নতুন এ জাতের আমের একটি ডাল এনে আমাকে দেন। আমি কাশিয়ানী হর্টি কালচারে ডালটি এনে কলম করে রোপন করি। নিয়মিত যতœ ও পরিচর্যা করতে থাকি। এ বছর এপ্রিল মাসে গাছে ফুল আসে। এ ফুল থেকে গাছে ৬টি আম ধরে। আক্টোবরে শুরুতেই এ আম পেকেছে। এ আমে রোগ বালই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমন নেই। আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগি এ আমটি আকারে বড়। প্রতিটি আমের ওজন হয়েছে ৫ শ’ গ্রাম। আমে আঁশ নেই, আঁটি ছোট। সুগারের পরিমান ২২ ভাগ। আম কাটার পর ভেতরে রঙ্গিন। আমটিতে রয়েছে সু-ঘ্রান। খেতে সুস্বাদু। আমের ৮৮ ভাগই ভক্ষনযোগ্য। এ জাত বছরে দু’ বার আম দেবে। অক্টোবরে গাছ থেকে আম সংগ্রহ করার পর আবার নভেম্বর-ডিসেম্বরে গাছে ফুল আসে। মার্চ-এপ্রিল মাসে গাছ থেকে আবার পাকা আম পাওয়া যাবে। ৫ বছর বয়সী এ জাতের একটি আম গাছ থেকে বছরে ২ থেকে ৩ মন আম পাওয়া সম্ভব। দেশে প্রচলিত আমের তুলনায় এ জাতের আম অনেক বেশি ফলন দিতে সক্ষম। নাবি জাতের (লেট ভ্যারাইট) আম হিসেবে বাজারে প্রতি কেজি আম ২ থেকে ৩ শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। নতুন জাতের এ আম চাষ করে কৃষক লাভবান হবেন। এ আম দেশের বিশাল জনগোষ্ঠির পুষ্টির চাহিদা পুরন করবে। তাই দেশে এ জাতের আমের বানিজ্যিক আবাদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।’
কৃষিবীদ মোঃ আমিনুল ইসলাম আরো বলেন, ‘আমরা হর্টি কালচার সেন্টারে আম সহ ফলের চারা উৎপাদনের করে গোপালগঞ্জ সহ আশপাশের জেলায় ফল উৎপাদন বৃদ্ধি করছি। উৎপাদিত ফল থেকে এসব জেলার বিশাল জনগোষ্টি পুষ্টি পাচ্ছেন। এছাড়া সারাদেশে মেহেদী-১, মেহেদী-২, কার্টিমন, গৌড়মতি, তাইওয়ান গ্রীন, ব্যানানা, তোতাপরি, সূয্যডিম,বারি-৪,হাড়িভাঙ্গা, সুরমাই ফজলি, হিমসাগর আমের চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি। আমরা ইতিমধ্যে কৃষকদের দিয়ে গোপালগঞ্জ জেলায় বেশ কয়েকটি উচ্চফলনশীল উন্নতজাতের আমের প্রদর্শনী প্লট করিয়েছি। এখানে আম উৎপাদন শুরু হয়েছে। এছাড়া আমরা এ বছর কাশিয়ানী হর্টি কালচার সেন্টারে দেশী আমবীজ থেকে ১ লাখ রুটস্টক করেছি। এসব রুটস্টকের মাথায় গ্রফটিং করে উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের আমের চারা উৎপাদন করছি। এসব চারা সরকার নির্ধারিত সুলভ মূল্যে বিক্রয় করা হবে। এখান থেকে সৌখিন ও বানিজ্যিক কৃষক চারা সংগ্রহ করে আমের চাষ করে লাভবান হতে পারবেন। আম চাষের মাধ্যমে বেকারদের আতœকর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পুরণ করা সম্ভব হবে । এছাড়া বাড়ির আঙ্গিনায় উন্নত জাতের আমের চারা রোপন করে অনেক পরিবার আম উৎপাদন করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে। ’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ