Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আবরার হত্যার এক বছর : ছেলের ছবি বুকে আঁকড়ে অঝোরে কাঁদেন মা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০২০, ১১:২০ এএম

এক বছর আগে এই দিনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিড়িতে নিথর হয়ে পড়ে ছিলেন আবরার ফাহাদ।

দুর্দান্ত মেধাবী এক ছাত্র ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর মেধার পরিপূর্ণ স্ফুরণের আগেই ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে নিজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কর্মীদের রাতভর নির্মম নির্যাতনে প্রাণ হারান। আবরার ফাহাদের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডে।

প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর আগের দিন গতকাল সোমবার ছেলের ছবি বুকে আঁকড়ে পড়ে ছিলেন মা রোকেয়া খাতুন। বাবা বরকত উল্লাহ ছেলে আবরার হত্যা মামলার সাক্ষ্য দিতে রয়েছেন ঢাকায়। গতকাল থেকে এ মামলার বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।

এই সময়ে আবার বাড়ীতে বইছে শোকের ছায়া। আবরারের মা রোকেয়া খাতুন আবরারের কয়েকটি ছবি হাতে নিয়ে বিছানায় বসে সেগুলো দেখতে দেখতে ছেলের স্মৃতিচারণা করছিলেন। বলছিলেন, ‘এক বছর আগে এইদিনের পরের দিন আমার ছেলে আমাকে ছেড়ে ঢাকায় গেল। আর সেই রাতেই ওরা বিনা দোষে আমার হীরার টুকরা ছেলেকে নির্মম নির্যাতন করে মেরে ফেলল! ছেলেটা ঢাকায় হলে পৌঁছেই আমাকে ফোন করেছিল। সেই ফোনই যে শেষ ফোন, তা কি আমি জানতাম! আমার কলিজার টুকরারে ওরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে মেরে ফেলল!’

হু হু কান্না করতে করতে তিনি আবার বলতে থাকেন, ‘আমার ছেলের হত্যাকারী ২৫ আসামির বিরুদ্ধে আদালত চার্জ গঠন করেছেন। বাদী আবরারের বাবার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আমার ছেলেকে নির্দয়ভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড চাই।’

স্মৃতি হাতড়ে রোকেয়া খাতুন আনমনে বলতে থাকেন, ‘শেষ কোরবানির ঈদের দিন আমার দুই ছেলে পাঞ্জাবি পরে একসঙ্গে নামাজে যাওয়ার সময় তাদের খুবই সুন্দর লাগছিল। আমার মনে হয়েছিল, দুই ছেলের সঙ্গে একটা ছবি তুলি, কিন্তু মনের কথা ওদের বলতে পারিনি। ছেলেদের সঙ্গে আমার কোনো ছবি নেই। এখন ফেসবুক থেকে দু-একটি ছবি নিয়ে আমার কাছে রেখেছি।’

আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ জানান, ‘ভাইয়ার এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর মায়ের কান্না আর থামছে না। সারাক্ষণ ঘরে বসে নামাজ-কালাম করেন, ভাইয়ার স্মৃতি রোমন্থন করে সময় দিন পার করেন। আমিও ভাইয়ার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’

আবরারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্বজনরা কাল কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। এ গ্রামেই দাফন করা হয় আবরারকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবরার হত্যা

১০ ডিসেম্বর, ২০২১
৯ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ