Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

করোনা প্রতিরোধে ডিম ভাল কাজ করছে

সচেতনতা বেড়েছে : গ্রামের অধিকাংশ মা এখন তাঁর সন্তানকে ডিম খাওয়াচ্ছেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৪২ পিএম

করোনা মহামারিতে টিকার অভাবে সারাবিশ্ব যখন এক কঠিন সময় পার করছে তখন ইমিউনিটি ও এন্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করার মাধ্যমে ডিম এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে। ডিমে থাকা ভিটামিন-ডি এবং জিংক কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করছে।

শুক্রবার (৯ অক্টোবর) বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ তথ্য জানান।

অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে সরকারের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি)। সঞ্চালক ছিলেন বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান।

ভার্চুয়াল সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, বহু তরুণ বেকার হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের পোল্ট্রি খামার করতে উদ্বুদ্ধ করা হলে ডিমের উৎপাদন আরও বাড়বে। ডিম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা আছে সেগুলো দূর করা দরকার। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় মোট ৬ লাখ ২০ হাজার পোল্ট্রি ও ডেইরি খামারিকে ৬৮৬ কোটি টাকার সহায়তা দেয়া হবে। এর আওতায় প্রায় ২ লাখ পোল্ট্রি খামারিকে নগদ সহায়তা দেয়া হবে। তবে কোনো ভুয়া খামারি যেন এ সহায়তা না পায় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনার আওতায় ডেইরি ও পোল্ট্রি খামারিদের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার সহায়তা দেয়া হবে। এ বছর ডিমের মাথাপিছু কনজাম্পশন ১০৪ দশমিক ২৩টিতে উন্নিত হয়েছে যা এফএও নির্দেশিত সংখ্যার চেয়েও বেশি।

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার বলেন, এক পরিসংখ্যান মতে ২০১৯ সালে সারাবিশ্বে অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৮২ কোটি। এর মধ্যে এশিয়ায় ৫১ কোটি।

বাংলাদেশে অপুষ্টির হার আগের তুলনা অনেক কমেছে দাবি করে তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ স্বাস্থ্য সমীক্ষা মতে খর্বাকায় শিশুর সংখ্যা ৪১ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশিষ্ট এ বিজ্ঞানীর দাবি দেশি মুরগির ডিমের চেয়ে পোল্ট্রি মুরগির ডিমের পুষ্টির পরিমাণ বেশি কারণ এ ডিমের আকার বড়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম বলেন, অনেক সময় অসুস্থদের ডিম খেতে দেয়া হয়না, বৃদ্ধদের ডিম খেতে বারণ করা হয় এই ভেবে যে হজম হবেনা কিন্তু এগুলো সবই ভুল ধারণা। ডিম অত্যন্ত সহজপাচ্য এবং রোগ প্রতিরোধে খুবই দরকারি।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর ড. শওকত আলী এবং বিভাগীয় চেয়ারপারসন প্রফেসর ড. ইলিয়াস হোসেন তাঁদের মূল প্রবন্ধে বলেন, বিশেষ ধরনের ডিম ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। ডিম খেলে যাদের এলার্জির সমস্যা হয় তাদের হাইপো সেনসিটিভ ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার বলেন, ডিম শুধু যে খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে তাই-ই নয়, এ পেশার কারণে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, দারিদ্র দূর হয়েছে।

তিনি বলেন, গত বছর দেশে ডিম কেন্দ্রিক বাণিজ্য হয়েছিল প্রায় ১২ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকার। এ বছর তা আরও বাড়বে। একই সঙ্গে ৮ ও ৯ অক্টোবর সারাদেশের ৫০টি স্পটে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অনুরোধে প্রায় ১ লাখ ডিম বিতরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বস্তি, এতিমখানা এবং নি¤œআয়ের মানুষ। ডিম দিবস উপলক্ষ্যে এক লাখ পোষ্টার সারাদেশে বিতরণ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ