Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ষকদের পাশবিকতা নিয়ন্ত্রণে মৃত্যুদন্ডের বিধান করেছি

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসিড সন্ত্রাসের মত ধর্ষণ নামের পাশবিকতা নিয়ন্ত্রণেই সরকার আইন সংশোধন করে ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদেন্ডের বিধান সংযুক্ত করেছে। ধর্ষণ একটা পাশবিকতা, মানুষ পশু হয়ে যায়। যার ফলে, আমাদের মেয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেইজন্য আমরা এই আইনটি সংশোধন করে ধর্ষণ করলে যাবজ্জীবনের সঙ্গে মৃত্যুদেন্ডের বিধান রেখে মন্ত্রিসভায় সেই আইন পাশ করেছি। আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, এসিড নিক্ষেপকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কারণ, সেখানে আমরা আইন সংশোধন করেছিলাম। যেহেতু, সংসদ অধিবেশন নেই, তাই আমরা এক্ষেত্রে অধ্যাদেশ জারি করে দিচ্ছি। যে কোন একটা সমস্যা দেখা দিলে সেটাকে মোকাবেলা করা এবং দূর করাই আমাদের লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ আজকে সমগ্র বিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার পদাংক অনুসরণ করে আমরা মনে করি যেকোন অবস্থাতেই যেকোন ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করতে আমরা পারবো এবং বাঙালি পারে। জাতির পিতা আমাদের যে পথ দেখিয়ে গেছেন সেই পথেই বাংলাদেশের মানুষকে আমরা দুর্যোগ থেকে মুক্ত করবো।

কোভিড-১৯কে আরেকটি দুর্যোগ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাসের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তাদেরকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে অনেক সময় মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবেলা করতে হয়। তিনি বলেন, এরআগে আপনারা দেখেছেন বিএনপি-জামায়াতের সেই অগ্নি সন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সেটাও কিন্তু আমরা মোকাবেলা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জিজিটাল পদ্ধতিতে বিনামূল্যে ১৭ হাজার ৫টি দুর্যোগ সহনীয় গৃহ প্রদান এবং ১৮ হাজার ৫০৫ জন নারী কর্মী সম্বলিত ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’ এর নতুন একটি মহিলা ইউনিটও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে তার পক্ষে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ৪২ জন পুরুষ এবং ৪২ জন নারীর মাঝে পদক ও বিতরণ করেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। দুর্যোগ সহনীয় ঘরপ্রাপ্ত উপকারভোগীদের পক্ষে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার বেদেনি নুরুন্নাহার এবং গাইবান্দার মো. রিয়াজুল হক এবং মহিলা সিপিপি কাশফিয়া তালুকদারও নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

সরকার প্রধান বলেন, আমাদের দেশে বন্যা হবে, খরা হবে, ঘূর্ণিঝড় হবে, জলোচ্ছ্বাস হবে, অগ্নিকান্ড, সেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে আমাদের বাঁচতে হবে। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে দেশের সার্বিক উন্নয়ন করা এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া- সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় স্থাপনা নির্মাণের সময় জলাধার সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রাস্তাঘাট যা কিছু তৈরি করি না কেন সকলকে আমি এটাই অনুরোধ করবো, আমাদের জলাধার, নদীনালা, খালবিল-এগুলো যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপক‚লে ব্যাপকহারে গাছ লাগিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা, দুর্যোগ সহনীয় ঘরবাড়ি তৈরি করার মতো কার্যক্রম তাঁর সরকার বাস্তবায়ন করছে। ড্রেজিং করে, খাল খননের মাধ্যমে নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।

তিনি বিরোধী দলে থাকার সময়ও বিভিন্ন সময় দেশে আসা ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসের সময় তার দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডের উল্লেখ করেন এবং ’৯১ পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ে বিএনপি’র সরকারের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি সম্পর্কে অসচেতনতা এবং ত্রাণ নিয়ে সে সময়কার মানুষের দুর্ভোগ তুলে ধরে তাদের কঠোর সমালোচনা করেন।

কোভিড কালীন খাদ্য উৎপাদনে অধিক গুরুত্বারোপ করাতেই দেশে কোন খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারেনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সব সময়ই ভেবেছি কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়। কারণ, ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা সবচেয়ে জরুরি।

উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে টেকসই করা ও সম্পদের ঝুঁকি কমানোর জন্য দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসের বিষয়টি সকল উন্নয়ন কর্মসূচি ও পরিকল্পনার সঙ্গে সংযুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক অঙ্গীকার ‘২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার’ দৃঢ় প্রত্যয়ও পুনর্ব্যক্ত করেন।#



 

Show all comments
  • ইব্রাহিম ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১৬ এএম says : 1
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Md Majed ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৩ এএম says : 0
    আজকের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। তবে এই রায়কে কেন্দ্র করে কাউকে যেন অযথা হয়রানি না করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য আবেদন রইল। আর যারা এই আইনের অপব্যবহার করবে তাদের জন্য পাপীয়ার মতো ২৭ বছরের জেল দেওয়ার দাবি জানাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Nuruzzaman Shahin ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৪ এএম says : 0
    Thank you
    Total Reply(0) Reply
  • Imraul Rafat ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৫ এএম says : 0
    পাশাপাশি মিথ্যা ধর্ষন মামলার শাস্তি ১৫ বছরের জেল করা হোক
    Total Reply(0) Reply
  • GM Alam Khan ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৬ এএম says : 0
    Good initiative
    Total Reply(0) Reply
  • Ahmed Ali ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৬ এএম says : 0
    সিলেট এমসি কলেজের জঘন্য ঘটনার আসামীদের দিয়ে ফাঁসির কাজ শুরু করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • মিনহাজ ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৭ এএম says : 0
    এই আইনকে সম্মান করি সবার সম্মেলিত প্রচেষ্টায় নিরাপদ হোক আগামীর বাংলাদেশ
    Total Reply(0) Reply
  • আহসান হাবিব শিবলু ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৮ এএম says : 0
    ধর্ষণ বন্ধ বেশি গুরুত্বপূর্ণ; ধর্ষণকারীর আইনের ভয় নেই!
    Total Reply(0) Reply
  • Prionty Mony ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৯ এএম says : 0
    আইনের প্রয়োগ এবার দেখার অপেক্ষায় রইলাম
    Total Reply(0) Reply
  • Saleh Ahamed Nomani ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৭:০০ এএম says : 0
    দল মতের উর্ধ্বে উঠে শতভাগ বিচার হোক!
    Total Reply(0) Reply
  • Jack Ali ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ১১:২৩ এএম says : 0
    Allah already gave His ruling that the rapist should be killed by stoning. Abu Alqama reported: A woman went out to pray during the time of the Prophet, peace and blessings be upon him, and she was met by a man who attacked her and raped her. She screamed and he ran away. Then another man passed by and she said, “This man has molested me!” A group of emigrants were passing by and again she said, “This man has molested me!” They caught the man whom she thought was her attacker and brought him to her and she said, “Yes, this is the one.” They brought him to the Prophet and he issued orders concerning him but the one who had attacked her stood up and he said, “O Messenger of Allah, I am the one who attacked her.” The Prophet said to her, “Go now, for Allah has forgiven you,” and the Prophet said kind words to the man who had been mistakenly arrested. The Prophet said to the man who had attacked her, “Stone him,” and the Prophet said, “Verily, he has repented in such a manner that if the people of Medina were to repent in this way, it would be accepted from them.”
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ