Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

‘মুসলিম রেজিমেন্ট’ নিয়ে ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রেসিডেন্টকে চিঠি সাবেক ভারতীয় সেনাদের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২০, ৭:০৩ পিএম

সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা ‘ভুয়া সংবাদ’ ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোবিন্দকে চিঠি দিয়েছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য। সম্প্রতি,   পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তথাকথিত ‘মুসলিম রেজিমেন্ট’ অংশগ্রহণ করতে রাজি হয়নি বলে একটি ‘ভুয়া সংবাদ’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে তারা এই চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারতের সেনাবাহিনীতে কখনোই কোনও মুসলিম রেজিমেন্ট ছিল না এবং ২০১৩ সালের মে মাস থেকে শুরু হওয়া এ জাতীয় ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’ এখনও সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। দেশটি পাকিস্তান ও চীন উভয়ের সাথে সামরিক উত্তেজনার মুখোমুখি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই ধরণের প্রচারণা খুবই উদ্বেগজনক। চিঠিটিতে সাবেক নেভি চিফ অ্যাডমিরাল এল রামদাস, ২৪ জন দুই এবং তিন তারকা জেনারেলসহ সশস্ত্র বাহিনীর ১২০ জন সাবেক সদস্য স্বাক্ষর করেছেন। চিঠিতে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় লেঃ জেনারেল এসএ হাসনাইনের (অবঃ) লেখা একটি ব্লগের কথা উল্রেখ করা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছিল, এই ধরণের অপপ্রচারের সাথে সম্ভবত পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনের ‘সাই অপস’ শাখা জড়িত।

চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা উল্লেখ করতে চাই যে, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন রেজিমেন্টের অংশ হিসাবে লড়াই করা মুসলিমরা আমাদের জাতির পক্ষে তাদের প্রতিশ্রুতি নিখুঁতভাবে প্রমাণ করেছে।’ সেখানে, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে হাভিলদার আবদুল হামিদ (পরম বীর চক্র), মেজর (পরে লেঃ জেনারেল) মোহাম্মদ জাকী এবং মেজর আবদুল রাফে খান (বীর চক্র) এবং অন্যান্য মুসলিম সেনাদের সাহসিকতার জন্য পদকপ্রাপ্তির বিষয়গুলো উদাহারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এরও আগে, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ উসমান জিন্নাহর আহ্বান এবং তার বালুচ রেজিমেন্ট পাকিস্তানের সাথে যোগ দেয়া সত্ত্বেও ভারতীয় সেনাবাহিনীতে থেকে গিয়েছিলেন। তিনি কাশ্মীরে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং ১৯৪৮ সালের জুলাই মাসে যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হওয়া সর্বাধিক সিনিয়র কর্মকর্তা ছিলেন। তার মর্যাদাবোধের জন্য তাকে মরণোত্তর সম্মানিত করা হয়েছিল।

ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা রক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ‘কঠোর এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া উচিত’ এবং ফেসবুক এবং টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে সতর্ক করতে হবে। সমস্ত রাজ্য সরকারকেও তাৎক্ষণিক নির্দেশনা জারি করুন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহী বার্তা দিয়ে জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির সম্মুখীন না করার জন্য সবাইকে সতর্কতার সাথে কাজ করা উচিত। ‘পাবলিক ডোমেইনে’ রাখা ‘মুসলিম রেজিমেন্ট’এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর মনোবলের উপর একটি ঘৃণ্য আক্রমণ। এটি জনগণের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে যে, যদি মুসলিম সৈন্যদের বিশ্বাস করা না যায়, তবে অন্যান্য মুসলমানরাও এর চেয়ে আলাদা নয়। এটি সম্প্রদায়িক অবিশ্বাস ও ঘৃণা বাড়িয়ে তোলে। সূত্র: টিওআই।

 


 

Show all comments
  • Md. Younus biswas ১৫ অক্টোবর, ২০২০, ৭:৫২ পিএম says : 0
    মুসলিম বিরোধী ব‍্যাপক অপপ্রচার চলছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ